টেস্ট শুরুর আগে ইনজুরি, এবার ব্যথা কোমরে
কতটা ফিট তামিম

ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৩ | ১৮:০০
দেশের ক্রিকেটপাড়ায় গুঞ্জন আছে, ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর টেস্ট ক্রিকেট ছেড়ে দিতে পারেন তামিম ইকবাল। সম্প্রতি কাছের বন্ধুদের এক আড্ডায় এ ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন তিনি। তবে এর সত্যতা নিয়ে কেউই মুখ খুলতে রাজি হননি। এ ব্যাপারে বিসিবি পরিচালক বা জাতীয় দল নির্বাচক প্যানেলের সদস্যদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তাঁরাও কিছু বলতে পারেননি। এর সত্যতা আপাতত জানা না গেলেও তামিম ইকবাল যে ধীরে ধীরে টেস্ট ক্রিকেট থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন, ম্যাচ খেলার পরিসংখ্যান দেখে তা বোঝা যায়। গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের ৩৩টি টেস্টের বিপরীতে ১৮ ম্যাচে খেলেছেন বাঁহাতি এ ওপেনার। অর্থাৎ চোট ও বিশ্রাম মিলিয়ে ১৫টি টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারেননি তিনি। টেস্ট খেলতে না পারলেও গত তিন বছরে ওয়ানডে সিরিজ তেমন একটা বাদ দেননি। অধিনায়ক হওয়ার পর থেকে শুধু ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটি খেলতে পারেননি তিনি। ১৪ থেকে ১৮ জুন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে তাঁর খেলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কোমরের পুরোনো ব্যথা নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়ায় তাঁর খেলার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছেন না জাতীয় দল নির্বাচকরাও।
২০০৮ সালে টেস্ট অভিষেকের পর টানা ১০ বছর টেস্টে নিয়মিত ছিলেন তামিম। এ সময় ৫২টি টেস্ট ম্যাচ খেলে দারুণ সফল ছিলেন তিনি। মূলত ২০১৮ সাল থেকে টেস্টে কিছুটা অনিয়মিত হয়ে পড়েন বাঁহাতি এ ব্যাটার। শেষ পাঁচ বছরে ১৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন তিনি। মূলত চোটের কারণে ১৪টি ম্যাচ খেলা হয়নি তাঁর। ২০১৯ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ থেকে ছুটি নেওয়ায় একমাত্র টেস্টে খেলা হয়নি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত টেস্ট ম্যাচ খেলেছে একটি, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। সে ম্যাচে খেলেছেন তামিম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলার জন্য প্রচণ্ড গরমে প্রস্তুতিও নিচ্ছেলন তিনি। হঠাৎ করেই কোমরের ব্যথা মাথাচাড়া দেওয়ায় বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে তাঁকে। ব্যথা তেমন একটা না কমায় গুঞ্জন রটেছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে নাও খেলতে পারেন তামিম। এ ব্যাপারে বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এখনও হাতে যথেষ্ট সময় আছে। ব্যথা কমেও যেতে পারে।’
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর এশিয়া কাপে হাতের আঙুলে চোট পাওয়ায় নভেম্বরে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চারটি টেস্ট খেলতে পারেননি তামিম। সে বছর ৮টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। পরের বছর পাঁচ টেস্টের বিপরীতে বাঁহাতি এ ওপেনার খেলেন দুটি টেস্ট। ২০১৯ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ থেকে ছুটি নিয়েছিলেন। একই বছর অক্টোবরে ভারত সফরে যাননি কুঁচকির চোটের কারণে। ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে একমাত্র টেস্টে খেলেননি হাঁটুর চোটের কারণে। যদিও টেস্ট শেষে ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। সে বছর বাংলাদেশ সাতটি টেস্ট খেলেছে, তামিমের অংশগ্রহণ ছিল চার ম্যাচে। একই বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে খেলেননি। নেপালের এভারেস্ট প্রিমিয়ার লিগে খেলার সময় বৃদ্ধাঙ্গুলিতে চোট পাওয়ায় টি২০ এবং টেস্ট সিরিজে ছিলেন না। গিয়েছিলেন ইংল্যান্ডে চিকিৎসা নিতে।
২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি ১০টি টেস্ট ম্যাচ ছিল বাংলাদেশের। দেশসেরা ওপেনার খেলতে পেরেছেন পাঁচটিতে। চোট পুনর্বাসনে থাকায় নিউজিল্যান্ডে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের অংশ হতে পারেননি তিনি। মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে টেস্টে ফিরলেও সিরিজ সম্পন্ন করতে পারেননি। পেটের ব্যথা হওয়ায় দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি খেলা হয়নি তাঁর। বছরের শেষভাগে কুঁচকির চোটের কারণে বাদ দিতে হয়েছে ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজ। রহিত শর্মাদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও ছিলেন না তিনি। লিটন কুমার দাসের নেতৃত্বে ভারতের বিপক্ষে এক দিনের ক্রিকেট সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। টেস্টে অনিয়মিত থাকলেও অধিনায়ক হওয়ার পর থেকে ওয়ানডেতে খুবই নিয়মিত তামিম। ২০২১ সালে ১২টিতে, ২০২২ সালে ১৫টির মধ্যে ১২টিতে আর ২০২৩ সালে ৯টিতে নেতৃত্ব দেন তিনি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজেও থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে টেস্টে খেলা নিয়ে জাতীয় দল নির্বাচকরাও দ্বিধাবিভক্ত। নির্বাচক হাবিবুল বাশারের আশা, ব্যাথা কমে গেলে টেস্টেও খেলবেন তামিম।
- বিষয় :
- তামিম ইকবাল
- ফিট
- ইনজুরি