ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ

টাইব্রেকেই ভাঙল হৃদয়

টাইব্রেকেই ভাঙল হৃদয়

রোববার কমলাপুর স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচের একটি মুহূর্ত-বাফুফে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০

আনিতা কেসির শটটি জালে জড়াতেই নেপাল ফুটবলারদের উচ্ছ্বাস। মাঝমাঠে বসে কাঁদছেন মারিয়া মান্ডা। তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন সতীর্থরা। ভেঙে পড়া মারিয়াকে স্বাভাবিক করতে ছুটে আসেন নেপালের ফুটবলাররাও। টাইব্রেকারে মারিয়া এবং শিউলি আজিমের মিসেই সিরিজ জয়ের স্বপ্ন ভেঙে যায় বাংলাদেশের। পেনাল্টি শুটআউটে বাংলাদেশের দুটি শট ঠেকিয়ে নেপালকে উচ্ছ্বাসে ভাসান শেষ মুহূর্তে বদলি হিসেবে মাঠে নামা গোলরক্ষক অঞ্জনা রানা মাগার। রোববার কমলাপুর স্টেডিয়ামে টাইব্রেকারে স্বাগতিক বাংলাদেশকে ৪-২ গোলে হারিয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ জিতে নিয়েছে হিমালয়কন্যারা। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা গোলশূন্য শেষ হয়। দু’দলের মধ্যকার প্রথম ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল।

নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে ৫০তম ম্যাচ খেলার মাইলফলকটি স্মরণীয় করে রাখতে পারেননি মাহবুবুর রহমান লিটুর দল। ১০ মাস আগে কাঠমান্ডুতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে কেঁদেছিলেন নেপালের মেয়েরা। এবার ঢাকার মাঠে তারা কাঁদালেন সাবিনাদের।

স্নায়ুর টাইব্রেকার পরীক্ষায় বাংলাদেশ গোলরক্ষক রুপনা চাকমা পারেননি প্রতিপক্ষের কোনো শট ঠেকাতে। নেপালের যেটি মিস হয়েছে, মাগারের সেই শট পোস্টে লাগে। পেনাল্টি শুটআউটে যতটা আত্মবিশ্বাসী হওয়ার প্রয়োজন ছিল, বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে তা ছিল না। বিশেষ করে মারিয়া এবং শিউলির শট এতটাই দুর্বল ছিল, নেপাল গোলরক্ষক অঞ্জনার থামাতে কোনো কষ্ট হয়নি। স্বাগতিকদের হয়ে শামসুন্নাহার এবং মনিকা চাকমা দুটি গোল করেন। পেনাল্টি শুটআউটে নেপালের হয়ে গোল করেন সাবিত্রা ভান্ডারি, হিরা কুমারি, দিপা শাহি এবং আনিকা কেসি। বাংলাদেশের মাটিতে সিরিজ জয়টি নেপালিদের কাছে প্রতিশোধের মতোই। সিরিজ জয়ের ট্রফি নিয়ে সাবিত্রা-লিম্বুদের উদযাপন দেখেই বুঝতে বাকি নেই, এই ট্রফির গুরুত্ব তাদের কাছে কতটা। দূরে দাঁড়িয়ে নেপাল মেয়েদের উচ্ছ্বাস দেখে শুধু আফসোসে পুড়েছেন শাহেদা আক্তার রিপা-মাসুরা পারভিনরা।
এদিন ভুল পাস, বল রিসিভ; সবকিছুতেই নড়বড়ে ছিলেন মেয়েরা। লেফট উইংয়ে কৃষ্ণা রানী সরকার কয়েকটি আক্রমণ শানালেও ডান প্রান্তে খেলা সানজিদা আক্তার ছিলেন নিষ্প্রভ। এদিন রক্ষণও ছিল এলোমেলো। নেপালের সাবিত্রা ভান্ডারিকে আটকাতেই হিমশিম খেতে হয় আফিদা খন্দকার-শিউলি আজিমদের। স্বস্তি নির্ধারিত ৯০ মিনিট কোনো গোল হজম না করা। অবশ্য শুরুতেই ম্যাচের চিত্রনাট্য বদলে যেত, যদি চতুর্থ মিনিটে সাবিনা খাতুনের ফ্রি কিকটি ক্রসবারে লেগে ফিরে না আসত। ম্যাচে বলার মতো বাংলাদেশের আক্রমণ ছিল সেটাই।

প্রথমার্ধের চেয়ে দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের খেলায় কিছুটা গতি ছিল। মূলত তিন পরিবর্তনে অনেকটা গোছানো ফুটবল খেলে স্বাগতিকরা। সানজিদা, তহুরা, কৃষ্ণাকে উঠিয়ে শাহেদা আক্তার রিপা, মাতসুমা সুমাইয়া এবং ঋতুপূর্ণ চাকমাকে মাঠে নামান কোচ লিটু। টাইব্রেকারের আগে আরেকটি পরিবর্তন করতে গিয়েও পারেননি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত এ কোচ। নীলুফা ইয়াসমিন নীলা টাচ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। সেই সময় বাংলাদেশ কর্নার পায়। খেলার শেষ মিনিট। নিয়ম অনুযায়ী খেলা থামিয়ে পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু কর্নার শেষের পর পরিবর্তনের চেষ্টা করলেও তার আগেই রেফারি খেলা শেষের বাঁশি বাজান।

আরও পড়ুন

×