ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ক্লাসেন দ্য আফ্রিকান মনস্টার

ক্লাসেন দ্য আফ্রিকান মনস্টার

ছবি- এএফপি

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৩ | ০৩:২০ | আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৩ | ০৩:২০

মনস্টার বা দানব, যাদের সচরাচর দেখা মেলে না। তবে যেদিন দেখা দেন, সেদিন সব কিছু তছনছ করে ছাড়েন। মুম্বাইয়ে গতকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যেন মনস্টার হয়ে আবির্ভূত হলেন হেনরিখ ক্লাসেন, যাঁর দানবীয় ব্যাটিংয়ে পথ হারায় বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। শেষদিকে তো অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ক্লাসেন। তবু তাঁর সেঞ্চুরি আটকাতে পারেননি ইংলিশ বোলাররা। উল্টো বাউন্ডারির পর বাউন্ডারিতে পেরিয়ে যান শতরানও। শেষ পর্যন্ত তাঁকে থামতে হয়েছে ১০৯ রানে, যে ইনিংসটি ক্লাসেন সাজান ৬৭ বলে ১২ চার এবং চারটি ছক্কায়। আগের ম্যাচগুলোতে সুবিধা করতে পারেননি এই মারকুটে ব্যাটার; যেখানে মার্করাম, ডুসেন, ডি ককরা খেলেন বিস্ফোরক ইনিংস। শনিবার যেন আগের তিন ম্যাচের জ্বালা মেটালেন ক্লাসেন। তাঁর টি২০ ফর্মুলার ব্যাটিংয়ে ভর করেই বড় সংগ্রহের পথ দেখে প্রোটিয়ারা। গড়ে ৩৯৯ রানের বিশাল এক সংগ্রহ, যা কিনা এক দিনের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আর কেউ করতে পারেনি। এমন রানপাহাড় টপকানোর সাহস দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৭০-এ গুটিয়ে গেল ইংল্যান্ড। আর ম্যাচটা ২২৯ রানে জিতে নিল প্রোটিয়ারা, যেটা ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের হার।

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে এদিন রেকর্ডবুক উলট-পালট হয়ে যায়। বাভুমার অসুস্থতার কারণে জায়গা পান রিজা হেনড্রিকস। তিনিও কম যাননি। ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করা ডি কক চার রান করে আউট হওয়ার পর রিজার ৮৫ রানের ইনিংস প্রোটিয়াদের দারুণ সাহস জোগায়। শেষদিকে ঝলক দেখান মার্কো ইয়ানসেন। ৪২ বলে ৭৫ রান করে নিজের উইকেট জিইয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। কিন্তু ৩৯৯ রানের পাহাড় গড়ার মূল কারিগর ক্লাসেনই। পাঁচে নেমে ঠিক ৫০ ওভারের খানিকটা আগে বিদায় নিয়েছিলেন তিনি। এর মাঝের পথটায় কাণ্ডারি হয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান ৩২ বছর বয়সী এই ডানহাতি ব্যাটার।

ডু প্লেসিস-ডি ভিলিয়ার্স জমানা পেরিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা এখন ক্লাসেন-মার্করাম রোমাঞ্চে ভাসছে। নিজেদের চির হতাশার চোকার ট্যাগ চিরতরে মুছে ফেলার হয়তো এটাই সুযোগ। ক্রিকেটবোদ্ধারাও তেমনটা ভাবছেন। না হলে টুর্নামেন্টের মাঝপথেই তাদের পাঁচ সেঞ্চুরি হয়ে গেল। যে আফ্রিকা ২০১৫ সালে পুরো আসর মিলিয়ে করেছিল পাঁচটি সেঞ্চুরি। এখনও সেমির আগে তাদের পাঁচটি ম্যাচ বাকি। এভাবে ছুটতে থাকলে কেবল তাদের সেঞ্চুরি কয়টা হয় বলা মুশকিল। হয়তো আগের সব রেকর্ড চুরমার হবে। তার ওপর ক্লাসেন তো সবে শুরু করেছেন! এতদিন পর স্তব্ধতা ভেঙে হুংকার ছাড়লেন। যদিও এক দিনের ক্রিকেটে তিনি বরাবরের মতো ভয়ংকর। রয়েসয়ে খেলা তাঁর কাজ নয়। সর্বদা ঝোড়ো ব্যাটিং করতে পছন্দ করেন। ওয়ানডেতে গতকালের আগেও করেছেন তিন সেঞ্চুরি। সঙ্গে রয়েছে পাঁচটি ফিফটিও। ব্যাটিং গড় ৪২.২৫ হলেও স্ট্রাইকরেট ১১৪.৬১। আর বাউন্ডারি মিটার দেখলেই বোঝা যাবে কতটা মারকুটে তিনি। এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে ১৩৯টি চার আর ৪৮টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন ক্লাসেন। তবে এটাও ঠিক ঝোড়ো ইনিংসের পাশাপাশি ক্ল্যাসিকাল ব্যাটিংও মাঝেমধ্যে করে থাকেন তিনি। দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলোতে যার অনেক প্রমাণ দিয়েছেন। এটা তাঁর প্রথম বিশ্বকাপ। এরই মধ্যে চার ম্যাচ থেকে ৪৯.৫০ গড়ে করেছেন ১৯৮ রান। 

দক্ষিণ আফ্রিকা : ৩৯৯/৭; ৫০ ওভার (ক্লাসেন ১০৯, হেনড্রিকস ৮৫, ইয়ানসেন ৭৫*; টপলি ৩/৮৮, অ্যাটকিনসন ২/৬০)।

ইংল্যান্ড : ১৭০/১০; ২২ ওভার (উড ৪৩*, অ্যাটকিনসন ৩৫; কোয়ের্টজে ৩/৩৫, এনগিডি ২/২৬)। ফল : দক্ষিণ আফ্রিকা ২২৯ রানে জয়ী

আরও পড়ুন

×