হিমালয়ের কোলে তাসমান ডার্বি

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৩ | ০৩:২৭ | আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৩ | ০৩:২৭
পাহাড়ঘেরা সবুজে ছাওয়া ছবির মতো সুন্দর ধর্মশালা স্টেডিয়াম। হিমালয়ের কোলঘেঁষা প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্যের মধ্যে আজ মুখোমুখি হচ্ছে তাসমান সাগর তীরের দুই প্রতিবেশী। দুই প্রতিবেশীই সেমিতে খেলার জোর দাবিদার। এর মধ্যে চার জয় পাওয়া নিউজিল্যান্ড আজ জিতলেই সেমির দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে। তবে কাজটা মোটেও সহজ নয়। বিশ্বকাপের শুরুটা বাজে হলেও হ্যাটট্রিক জয়ে ছন্দ ফিরেছে অস্ট্রেলিয়া। আর ছন্দে ফেরা অস্ট্রেলিয়া যে ভয়ংকর, সে কথা কিউই দলপতি টম লাথামও স্বীকার করেছেন।
টুর্নামেন্ট যত এগোচ্ছে, অস্ট্রেলিয়া যেন তত শানিত হচ্ছে। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে আসর শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। শ্রীলঙ্কাকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথম জয়ের দেখা পায় তারা। এর পর পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৬৭ রান তুলে ৬২ রানে জেতে। শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পুরো ছন্দ ফিরে পায় অসিরা। প্রথমে ব্যাট করে ৩৯৯ রানের পাহাড় করে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৪০ বলে সেঞ্চুরি করে রেকর্ড করেন। পয়েন্ট টেবিলে তারা এখন নিউজিল্যান্ডের পেছনেই চতুর্থ স্থানে আছে। কিউইরা হেরেছে কেবল এক ম্যাচ। টানা চার জয়ের পর শেষ ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে গেছে তারা। বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের রেকর্ড দারুণ হলেও দুই প্রতিবেশীর দ্বিপক্ষীয় লড়াইয়ে কিন্তু অস্ট্রেলিয়া অনেক ব্যবধানে এগিয়ে। ওয়ানডেতে মোট ১৪১ লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়ার জয় ৯৫টি, কিউইরা জিতেছে ৩৯ ম্যাচ। এমনকি বিশ্বকাপেও মুখোমুখি লড়াইয়ে অসিরা এগিয়ে। বিশ্বকাপে এ দু’দল ১১ বার মুখোমুখি হয়েছে, যেখানে অস্ট্রেলিয়া ৮ বার জিতেছে, কিউইরা ৩ বার জয়ের হাসি হেসেছে। নিউজিল্যান্ড সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে জিতেছিল সেই ২০১৭ সালে।
গত তিন ম্যাচে জয় পেলেও আজ অস্ট্রেলিয়ার টপঅর্ডারে পরিবর্তন আসতে পারে। ওপেনিংয়ে ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গী হতে পারেন চোট কাটিয়ে ফেরা ট্রাভিস হেড। অবশ্য সদ্যই দলে যোগ দেওয়া ট্রাভিস হেডকে ধর্মশালার পেসসহায়ক উইকেটে কিউই পেসার ট্রেন্ট বোল্ট ও ম্যাট হেনরির সুইংয়ের সামনে ঠেলে দেবে কিনা সেটা নিয়ে একটা শঙ্কা রয়েছে। অবশ্য ওয়ার্নার ফর্মে ফেরায় ওপেনিং নিয়ে চিন্তা কমে গেছে অসিদের। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ছন্দে ফেরায় মিডল অর্ডার নিয়েও নিশ্চিন্ত তারা। অস্ট্রেলিয়ার বোলিংও ভালো করছে। তিন পেসার মিচেল স্টার্ক, জস হ্যাজেলউড ও অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের প্রয়োজনের সময় উইকেট এনে দিচ্ছেন। তবে লেগস্পিনার অ্যাডাম জাম্পা ছন্দে ফেরাটা তাদের জন্য সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট।
কিউই স্পিনার মিচেল স্যান্টনারও দারুণ ছন্দে আছেন। ১২ উইকেট নিয়ে সেরা তিনে আছেন তিনি। আর বোল্টের নেতৃত্বে কিউই পেসাররা তো দারুণ পারফর্ম করছেন। কিউই ব্যাটিং লাইনে সবচেয়ে বড় স্বস্তি এনে দিয়েছেন রাচিন রবীন্দ্র। টপঅর্ডারে তিনি নিয়মিত রান করায় কেন উইলিয়ামসনের অভাব টের পাওয়া যাচ্ছে না। ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও ড্যারেল মিচেল ছন্দে আছেন। তবে অসিদের বিপক্ষে আজ অধিনায়ক লাথামের বাজি স্পিনার স্যান্টনার, ‘এখানকার কন্ডিশন অনেকটা আমাদের দেশের মতো, স্পিনাররা হয়তো এখানে খুব বেশি সহায়তা পাবে না। তার পরও আমার মনে হচ্ছে, মিচেলের স্পিন কাজ করবে এখানে।’