ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

আকিকের দুই চাকায় পশ্চিমবঙ্গ জয়

আকিকের দুই চাকায় পশ্চিমবঙ্গ জয়

মো. আল-আমিন আকিক। ছবি-সংগৃহীত

মাহিন আরাফাত

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ১৭:৪৬

ছোট বেলা থেকেই আকিক কিছুটা ডানপিটে স্বভাবের। আড্ডা, খেলাধুলায় খুব বেশি মন নেই তার। দৌড়, ছোটাছুটিতেই বেশি অভ্যস্ত সে। সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়তেন সাইকেল নিয়ে। কখনো সাঁতরে, কখনো দৌড়ে জয় করেছেন দেশ বিদেশের অসংখ্য ম্যারাথন। সেই আল-আমিন আকিক এবার দেশের গণ্ডী পেরিয়ে দুই চাকায় পাড়ি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ (দার্জিলিং টু দীঘা)।

মোঃ আল-আমিন আকিক, একজন ট্রায়াথলেট। সেই সুবাদে সাইকেল নিয়ে ঘুরেছেন বাংলাদেশের ৬৪ জেলা। সাঁতারে জয় করেছেন বাংলা চ্যানেল। যা হয়তো অনেকেরই জানা। কিন্তু এবারের গল্প কিছুটা ভিন্ন। সাইকেলে পাড়ি দিয়েছেন দার্জিলিং থেকে দীঘা (ভারত), পাহাড় থেকে সাগরে। পশ্চিমবঙ্গের এক পাশ থেকে অন্য পাশ। যার দূরত্ব প্রায় ৮১৮.০ কি.মি.।

কিন্তু এই যাত্রা কি শুধুই রোমাঞ্চের জন্য?

আকিক জানান, ‘আমার এবারের যাত্রার মূল উদ্দেশ্যে, হৃদয়’কে সুস্থ রাখতে মানুষকে সাইক্লিং এর প্রতি উদ্বুদ্ধ করা। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন, পৃথিবীতে ২০০ মিলিয়ন মানুষ হার্টের কোনো না কোনো রোগে আক্রান্ত। পরিসংখ্যান বলছে, যারা রেগুলার সাইক্লিং করে, তারা নন-সাইক্লিস্টদের তুলনায় ১৫ শতাংশ কম হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন। আমরা সকলে যদি সাইক্লিং এর অভ্যাস গড়ে তুলতে পারি তাহলে, আমাদের কিছুটা হলেও হৃদরোগের ঝুঁকি কমবে।’

মো. আল-আমিন আকিক। ছবি-সংগৃহীত
 
যেই ভাবা সেই কাজ, বাংলাদেশ ও ভারতের কিছু সাইকেলিস্ট গ্রুপের সহায়তায় আকিক বেরিয়ে পড়েন সাইকেল নিয়ে। ২১ শে জানুয়ারি, সকালে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সাইকেল নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। এরপর চ্যাংড়াবান্ধা থেকে ৮৬ কিলোমিটার সাইক্লিং করে শিলিগুড়ি। সেখানে বিশ্রাম নিয়ে পরদিন শোম গাড়ি করে দার্জিলিং। দার্জিলিং’র মল রোড (যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬,৭০০ ফুট উঁচু) থেকে তার যাত্রা শুরু হয়।
 
এরপর অনেক দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছান। সেখানে রাত্রি যাপন করে পরদিন রায়গঞ্জের দিকে আগাতে থাকেন। রাত ৯ টা পর্যন্ত সাইকেলিং করে পোঁছান গন্তব্যে। পরদিন যাত্রা শুরু মালদার উদ্দেশ্যে। এভাবে ৮ দিনের দীর্ঘ যাত্রা শেষে আকিক দীঘা পৌঁছান।

এই ৮ দিনে আকিকের ঝুলিতে যোগ হয়েছে ভিন্নসব অভিজ্ঞতা। কখনো জনমানব শূন্য রাস্তা, কখনো গভীর গিরিখাত, হারকাপানো ঠান্ডা বা প্রচন্ড গরম। এসবের পরও আকিকের মুখে বিজয়ের হাসি।

আকিক বলেন, ‘সবার সহযোগিতা না থাকলে আমি এই যাত্রা শেষ করতে পারতাম না। ভিন্ন একটা দেশে গিয়েও নিজেকে কখনো একা মনে হয়নি।’

আরও পড়ুন

×