ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

দেশের নারী আম্পায়ারিংয়ে বিপ্লব

দেশের নারী আম্পায়ারিংয়ে বিপ্লব

ছবি- সংগৃহীত

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৪ | ১৪:২০

দেশের নারী ক্রিকেটে সব দিক থেকেই পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে। টেস্ট দলের স্বীকৃতি মিলেছে আগেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালোও করছেন মেয়েরা। শুক্রবার দেশের নারী ক্রিকেটের মুকুটে যোগ হয়েছে আরেকটি স্বীকৃতির পালক। আইসিসি ডেভেলপমেন্ট আম্পায়ার্স প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে চারজন নারী আম্পায়ার– সাথীরা জাকির জেসি, রোকেয়া সুলতানা, ডলি রানী সরকার ও চম্পা চাকমাকে। তবে ম্যাচ রেফারি বিভাগে অর্জনটা আরও বড়। আইসিসি আন্তর্জাতিক প্যানেলের ম্যাচ রেফারি হয়েছেন সুপ্রিয়া রানী দাস।

বিসিবি আম্পায়ার্স বিভাগের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ মিঠু বলেন, ‘এক-দুইজন মেয়ে ২০১১ সালেই আম্পায়ারিং কোর্স করে রাখলেও আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করে দুই বছর আগে। তারা প্রমাণ করেছে সুযোগ পেলে ভালো করতে পারে। আমরা নারী আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারিদের কাজের সুযোগ করে দিয়েছি। তারা কাজে লাগিয়েছে।’ 

চার নারী আম্পায়ারের মধ্যে জেসির কেবল আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছে। গত বছর মালয়েশিয়ায় ছয়টি আন্তর্জাতিক টি২০ ম্যাচ পরিচালনা করেছেন তিনি। বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ওয়ানডে এবং টি২০ সিরিজেও রাখা হয়েছে জেসিকে। তৃতীয় ওয়ানডেতে রিজার্ভ আম্পায়ার থাকবেন তিনি। তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজের একটিতে ফিল্ড, একটিতে টিভি ও অন্যটিতে রিজার্ভ আম্পায়ার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জাতীয় দলের সাবেক এ ব্যাটারকে। 

নিজের উত্থান সম্পর্কে জেসি বলেন, ‘আমরা দুই বছরে অনেক কাজ করেছি। ছেলেদের স্কুল ক্রিকেট থেকে শুরু করে মেয়েদের লাল বলের ম্যাচ পরিচালনা করেছি। ছেলেদের প্রথম বিভাগ ক্রিকেট ম্যাচে আম্পায়ারিং করেছি। আইসিসির প্যানেলভুক্ত হওয়ার জন্যই নিরলস কাজ করে যাওয়া। আমার চাওয়া ছিল টি২০ বিশ্বকাপের আগে আইসিসি প্যানেলে যুক্ত হওয়া। বিসিবি উদ্যোগ নেওয়ায় সেখানে পৌঁছাতে পেরেছি। বিশ্বকাপে আম্পায়ার্স প্যানেলে বাংলাদেশের একজনকে রাখা হতে পারে। এখানে সুযোগ পেতে পারে আমাদের যে কেউ।’

রোকেয়া সুলতানাও বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার টি২০ সিরিজে রিজার্ভ আম্পায়ার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। দেশের প্রতিনিধি হিসেবে সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি, “বাংলাদেশ থেকে প্রথমবার বিশ্বকাপের মঞ্চে শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত ভাই আম্পায়ারিং করেছেন। মাসুদুর রহমান মুকুল ভাই, গাজী সোহেল ভাই, তানভীর ইসলাম ভাই আছেন। আমাদের ম্যাচ রেফারিরাও আছেন। তারা বাংলাদেশকে সম্মানের জায়গায় নিয়ে গেছেন। গর্বিত করেছেন এবং করছেন। আমাদেরও কুড়াতে হবে। আমরা ‘অনফিল্ড এবং অব দ্য ফিল্ড’ আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্ব পালন করেছি। এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফল হতে হবে।” 

আরেক আম্পায়ার চম্পা চাকমা আম্পায়ারিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চান। তাঁর মতে, ‘আমাদের বড় অর্জন। এত তাড়াতাড়ি আইসিসির প্যানেলে যুক্ত হতে পেরে আম্পায়ার্স বিভাগের চেয়ারম্যান মিঠু ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ। বিসিবি আমাদের একটা জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে, পরের ধাপে যেতে হবে কঠিন পরিশ্রম দিয়ে। প্রমাণ করতে হবে আমরা কত ভালো। বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজে আম্পায়ারদের লিয়াজোঁ আছি। যারা শীর্ষ পর্যায়ের আম্পায়ার, তাদের সঙ্গে কাজ করছি। এই অভিজ্ঞতা ম্যাচে কাজে লাগাব।’ 

ডলি রানী সরকার বিকেএসপির ক্রিকেট কোচ। আম্পায়ারিংয়ে তাঁর হাতেখড়ি ২০০৯ সাল থেকে। তিনি বলেন, ‘এ রকম একটা স্বীকৃতিতে আমি খুবই খুশি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আমাদের তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এখন আমাদের দায়িত্ব ভালো কাজ দিয়ে বিসিবির সম্মান রক্ষা করা।’ 

আন্তর্জাতিক প্যানেল ম্যাচ রেফারি হতে পারায় খুশি সুপ্রিয়া রানী দাস। তিনি স্বপ্ন দেখেন, ছেলেমেয়ের সব ক্রিকেটে আন্তর্জাতিক ম্যাচ রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

আরও পড়ুন

×