ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

লজ্জাজনক হারের মুখে বাংলাদেশ

লজ্জাজনক হারের মুখে বাংলাদেশ

.

 ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৪ | ০০:৩৯

আশ্চর্য ব্যাপারই বটে! কয়েক মিনিট আগেও যা ছিল ব্যাটিং উইকেট, সেটাই কিনা বাংলাদেশের ব্যাটাররা নামার পর বোলিং উইকেট হয়ে গেল! গতকাল শেষ বিকেলে অবিশ্বাস্য ধসের পর স্বাগতিক দর্শকদের অনেকে এই কৌতুকের মাধ্যমে সান্ত্বনা খোঁজার চেষ্টা করেছেন। আসল কথা হলো, যে উইকেটে রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন ধনাঞ্জয়া-কামিন্দুরা, সেখানে লঙ্কান পেস বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ৯ ওভারের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে লজ্জাজনক এক পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছেন তারা। ৫১১ রানের পাহাড় ধাওয়া করতে নেমে তৃতীয় দিন শেষে ৪৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা। অবশিষ্ট ৫ উইকেটে আরও ৪৬৪ রান করতে হবে, যা কার্যত অসম্ভবই।

এখনও ২ দিনের খেলা বাকি। তাই প্রকৃতি ছাড়া রক্ষার আর কোনো উপায় নেই। অবশ্য সিলেটের প্রকৃতিও রসিকতা শুরু করেছে। প্রথম তিন দিনই সেখানে বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল, অল্পবিস্তর হয়েছেও। কিন্তু বৃষ্টির জন্য এক ওভারের খেলাও নষ্ট হয়নি। ক্রিকেটের সঙ্গে যেন অলিখিত এক মিত্রতা করেছে সিলেটের প্রকৃতি। এর মধ্যে গতকাল দুপুরের পরই বৃষ্টি নামার কথা ছিল। যেই দিনের খেলা বন্ধ হলো, রসিক বৃষ্টি এর পরই ঝরঝরিয়ে পড়া শুরু করল। আজও দুপুরের পর বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সে পর্যন্ত মনে হয় না খেলা গড়াবে।

অবশ্য বাংলাদেশ দল যে ব্যাটিং করেছে, তাতে প্রকৃতিও মনে হয় না তাদের বাঁচাতে পারবে। গতকাল শেষ বিকেলে যেভাবে ধসে পড়ল বাংলাদেশের ব্যাটিং, তার কোনো ব্যাখ্যা হয় না। ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় প্রথম ওভারেই বিশ্ব ফার্নান্দোর স্টাম্পে থাকা ফুললেন্থের বল এমনভাবে ক্রস ব্যাটে খেললেন, মনে হলো, তিনি ধুন্ধুমার টি২০ ফরম্যাটে শেষ ওভারের ব্যাটিং করছেন। ১২ টেস্টের ক্যারিয়ারে তরুণ এ ওপেনারের এটি ষষ্ঠ শূন্য। তাঁর এই উচ্চাভিলাষী শট তাও মানা যায়, অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত কী করলেন! পরের ওভারেই কাসুন রাজিথার প্রায় ওয়াইড বল তাড়া করে তিনি যেভাবে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে এলেন, তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য। একে তো সামনে বিশাল টার্গেট, তার ওপর প্রথম ওভারেই উইকেট গেছে– এমন অবস্থায় অধিনায়কের কাছ থেকে এমন শট দলের আবহ নিয়েই প্রশ্ন উঠে যাবে। আরেক অভিজ্ঞ লিটন দাসের কাণ্ড দেখেও চোখ ছানাবড়া হওয়ার জোগাড়। ৩৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দল যখন ধুঁকছে, তখন কিনা উইকেটে গিয়ে প্রথম বলেই ডাউন দ্য উইকেটে ছয় মারতে গেলেন তিনি! অথচ ৯ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ার তাঁর, সিলেটে ৪০তম টেস্ট খেলতে নেমেছেন। দুই তরুণ জাকির হাসান ও শাহাদাত হোসেন দীপুর কথা তো বলা বাহুল্য। 

লঙ্কান পেসের সামনে খড়কুটোর মতো উড়ে গেছেন তারা।
অথচ এই উইকেটেই রেকর্ডের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন লঙ্কানরা। তাদের দুই ব্যাটার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি করে বিরল এক রেকর্ডের ভাগীদার হয়েছেন। এক টেস্টে একই দলের দু’জনের জোড়া সেঞ্চুরির ঘটনা ক্রিকেট ইতিহাসে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ঘটল। আরও রেকর্ড গড়েছেন ধনাঞ্জয়া ও কামিন্দু। তৃতীয় জুটি হিসেবে একই টেস্টের দুই ইনিংসে দেড়শ পেরোনো জুটি গড়লেন তারা। ধনাঞ্জয়া ১০৮ রানে আউট হয়েছেন। আর দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা কামিন্দু মেন্ডিস ক্যারিয়ার সেরা ১৬৪ রানের ইনিংস খেলেছেন। দু’জনের দাপটে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১৮ রান তোলে সফরকারীরা।

আরও পড়ুন

×