ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

জাভিরা কাঁদে না কাঁদায়

জাভিরা কাঁদে না কাঁদায়

ছবি- সংগৃহীত

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৪ | ১৬:০৩

যে দেশে গুণীর কদর নেই, সে দেশে গুণী জন্মায় না– এমন উক্তি যেন বার্সার সঙ্গে বেশ মানায়। গত কয়েক বছর তারা নিজেদের ক্লাব ইতিহাসের সেরা ফুটবলারদের সঙ্গে যেমন আচরণ করেছে, সেটা নিশ্চিতভাবে প্রশ্নবোধক। দিয়েগো ম্যারাডোনা, রোনালদিনহো, লিওনেল মেসি, জেরার্ড পিকে; এর পর জাভি হার্নান্দেজ। এদের কাউকেই পূর্ণ সম্মান দিতে পারেনি কাতালানরা। প্রয়োজনে তাদের ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলতেও দ্বিধাবোধ করেনি। সর্বশেষ জাভির সঙ্গে এমন কিছুই হলো।

যাঁকে রাখার জন্য মাসখানেক আগেও বার্সার কর্তার নাওয়া-খাওয়া বন্ধ, সেই জাভিকে নামমাত্র একটা অজুহাতে বরখাস্ত করে দিল। তবু বিন্দুমাত্র মন খারাপ হয়নি জাভির। উল্টো হাসিমুখে বার্সার জন্য শুভকামনা জানিয়ে ছাড়েন সংবাদ সম্মেলন। বলে গেলেন যতদিন থাকবেন, বার্সার সমর্থক হয়েই থাকবেন। ক্লাবের কোনো দায়িত্বে না থাকলেও দর্শক হিসেবে গ্যালারিতে থেকে সর্বদা সমর্থন জুগিয়ে যাবেন।

আজ রাতে সেভিয়ার বিপক্ষে মৌসুমের শেষ ম্যাচই জাভি ও তাঁর সহকারীদের বার্সায় কোচিং স্টাফের সদস্য হিসেবে শেষ ম্যাচ হয়ে থাকবে। তার আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন বার্তায় জাভি লিখেছেন, ‘প্রিয় বন্ধুরা, রোববার বার্সার সঙ্গে আমার যাত্রা শেষ হতে চলেছে। প্রাণের ক্লাবকে ছেড়ে যাওয়া কখনোই সহজ ব্যাপার নয়। তবে আমি খুবই গর্বিত। যে ড্রেসিংরুমকে আমি দ্বিতীয় পরিবার মনে করি, সেই ড্রেসিংরুমের প্রধান হিসেবে আড়াই বছর কাটাতে পেরেছি।’

আরও কিছুদিন থাকতে পারলে ভালো হতো জাভির জন্য। সেই পরিকল্পনা করেই নতুন ছক এঁকেছিলেন। আশা ছিল লা মাসিয়া থেকে আরও কয়েকজন খেলোয়াড় তুলে আনবেন। সেই সঙ্গে নতুন কিছু খেলোয়াড় রিক্রুট করবেন, যাতে ২০২৩-২৪ মৌসুমের হতাশাটা মুছতে পারেন। কিন্তু শুরুর আগেই সব শেষ। তাতে অবশ্য আক্ষেপ নেই জাভির। বার্সার সঙ্গেই থাকবেন তিন, ‘রোববারের পর থেকে আরেকজন বার্সা-ভক্ত হিসেবে তালিকায় যুক্ত হবো। খেলা অলিম্পিক স্টেডিয়ামে হোক কিংবা কয়েক মাস পর নতুন ক্যাম্প ন্যুতে হোক, আমাকে গ্যালারিতে দেখতে পাবেন।’

বার্সার কর্তারা অতীত ভুলতে পারেন কিন্তু জাভি সমর্থকরা ঠিকই মনে রাখবেন তাঁর অবদান। যখন তিনি বার্সায় কোচ হিসেবে এসেছিলেন, তখন সময়টা একেবারে বাজে ছিল। লা লিগায় প্রায় ডুবে যাচ্ছে বার্সা। তালিকার নয়ে চলে যায় দলটি। জাভি যোগ দেওয়ার পর সেই ডুবন্ত বার্সায় আশার আলো ফোটে। নয় থেকে ক্লাবটি দুইয়ে উঠে আসে। এর পর লা লিগা আর সুপার কাপও ঘরে তোলে বার্সা। কিন্তু সময় বদলাতেই সব যেন ভুলে গেল তারা। পান থেকে চুন খসতেই ক্লাবের প্রেসিডেন্ট বিদায় করে দিলেন জাভিকে। 

তবে একজন খেলোয়াড়, কোচের চেয়ে সমর্থক হিসেবেই তিনি বার্সাকে বেশি ভালোবেসেছেন, ‘খেলোয়াড় বা কোচের আগে আমি একজন বার্সেলোনা-ভক্ত এবং ক্লাবের জন্য যেটা সবচেয়ে ভালো, আমি সেটাই চাই। যে কোনো পরিস্থিতিতে তারা আমাকে পাশে পাবে।’

মুখে যা বললেন, অন্তরে কী সেটাই? মনে হয় না। এটা ঠিক বার্সা জাভির প্রাণের ক্লাব। যার প্রতি কোনো আক্ষেপ বা অভিমান তাঁর নেই। কিন্তু ক্লাবটি যারা চালাচ্ছেন, তাদের মুখটা দ্বিতীয়বার হয়তো আর দেখতে চাইবেন না তিনি। তবে এখানেই যে কোচিং ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন, তেমনটাও নয়। নতুন করে নতুন কোথায়ও আবার ডাগআউটে দেখা যাবে তাঁকে। শোনা যাচ্ছে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাঁকে কোচ করতে চায়। তবে সেটা নির্ভর করছে এরিক টেনের ফাইনাল পরীক্ষার (এফএ কাপ ফাইনাল) রেজাল্টের ওপর।

আরও পড়ুন

×