নেদারল্যান্ডস-তুরস্ক
বার্লিনে দুই রাইজিং স্টারের লড়াই

ছবি- সংগৃহীত
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪ | ১৬:২৭
এবারের ইউরোতে চমক দেখাচ্ছেন মূলত তরুণরা। স্পেনের মূল শক্তি হয়ে উঠেছেন দুই কিশোর লামিনে ইয়ামাল ও নিকো উইলিয়ামস; জার্মানির আছেন জামাল মুসিয়ালা ও ফ্লোরিন উইর্টজ এবং ইংল্যান্ডের ঘুরে দাঁড়ানোর নায়ক জুড বেলিংহাম। তুরস্কের কোয়ার্টার ফাইনালে আসার পেছনেও রয়েছেন এক তরুণ। আজ বার্লিনে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে শেষ আটের লড়াইয়েও তুরস্কের ভরসা ১৯ বছরের আরদা গুলের। ডাচরাও আরেক উঠতি তারকা কোডি গ্যাকপোর ওপর নির্ভরশীল।
নেদারল্যান্ডস তাদের ইতিহাসের একমাত্র ইউরো শিরোপাটি জিতেছিল ১৯৮৮ সালে। রুদ গুলিত, ফন বাস্তেন, ফ্রাঙ্ক রাইকার্ডদের সেই তারকা খচিত দলে ছিলেন বর্তমান ডাচ কোচ রোনাল্ড কোম্যানও। ৩৬ বছর পর কোম্যান আবার স্বপ্ন দেখছেন কোডি গ্যাকপোকে ঘিরে। লিভারপুলের ২৫ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড ৩ গোল করে এবারের ইউরোর শীর্ষ গোলদাতার দৌড়ে আছেন। সাবেক নেদারল্যান্ডস তারকা পিয়েরে ফন হুইডঙ্ক একটি ডাচ টিভি চ্যানেলকে বলেন, ‘গ্যাকপো আমাদের তারকা!’
লিভারপুলে মোহামেদ সালাহর কারণে অনেকটা দৃষ্টির আড়ালে পড়ে থাকেন গ্যাকপো। তবে নেদারল্যান্ডস জাতীয় দলে তিনি আক্রমণের প্রধান শক্তি। বাঁ প্রান্ত দিয়ে তাঁর গড়া আক্রমণই ডাচদের গোলের প্রধান উৎস। গ্যাকপোর ১২টি আন্তর্জাতিক গোলের অর্ধেকই এসেছে বড় আসরে। যার মধ্যে গত বিশ্বকাপে ৩ গোল করেছিলেন। বড় আসরে গোল করার দক্ষতার জন্যই অনেকে তাঁকে সাবেক ডাচ তারকা রুদ ফন নিস্টলরয় ও আরিয়েন রুবেনের সঙ্গে তুলনা করা শুরু করেছেন।
কোচ কোম্যানও গ্যাকপোর প্রশংসায় পঞ্চমুখ, ‘সে দুর্দান্ত ফুটবলার... বল পায়ে অসাধারণ। আমাদের জন্য সে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।’ কোচ আরও যোগ করেন, ‘অনন্য যোগ্যতা সম্পন্ন একজন খেলোয়াড় সে। সৌভাগ্যবশত কঠিন পরিস্থিতিতে সে পার্থক্য গড়ে দেয়।’ তুরস্কের গোলরক্ষক মেরাত গুনককে আজ পরাস্ত করতে পারবেন কি গ্যাকপো? অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে গত ম্যাচের শেষ মিনিটে গুনকের সেভটিকে ১৯৭০ বিশ্বকাপে গর্ডন ব্যাংকসের স্মরণীয় সেভের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে, যেখানে তিনি পেলের হেড আটকে দিয়েছিলেন।
তুরস্কের আক্রমণভাগের প্রধান অস্ত্রও ১৯ বছরের আরদা গুলের। রিয়াল মাদ্রিদের এই প্রতিভা এরই মধ্যে উঠতি প্রতিভার খেতাব পেয়ে গেছেন। তবে গত মৌসুমটা ভালো যায়নি তাঁর। চোটের কারণে রিয়ালের হয়ে কয়েক মাস মাঠে নামতে পারেননি। তখন তাঁর ইউরো খেলা নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তবে মাঠে ফিরে মৌসুমের শেষ সপ্তাহটা দারুণ কাটান গুলের। লা লিগা জয়ে অবদান রাখেন। ইউরোর ঠিক পূর্ব মুহূর্তে তরুণ এ প্রতিভা ছন্দে ফেরায় তুরস্কের লাভ হয়েছে।
জর্জিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো শটে দুর্দান্ত এক গোল করেন, যা এবারের আসরের সেরা গোলের তালিকায় রয়েছে। অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচে তুরস্কের দুটি গোলই এসেছে তাঁর কর্নার থেকে। তরুণ এ ফরোয়ার্ডের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তুরস্কের কোচ ভিসেঞ্জো মনতেলা, ‘সে দুর্দান্ত পারফর্ম করছে। সে বল নিয়ে এমনভাবে দৌড়ায়, দেখে মনে হয় যে ক্যারিয়ারে কখনোই সে এটা করেনি। সে প্রতিনিয়ত নতুন কিছু দিতে চায়। তার জন্য আমি গর্বিত।’
বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে আজ গুলেরের প্রেরণা হয়ে উঠতে পারেন দর্শকরা। জার্মানিতে প্রচুর তুরস্কের মানুষ বসবাস করেন। মাঠে তাদের সরব উপস্থিতির কারণে মনে হয় তুরস্ক বুঝি নিজ দেশেই খেলছে। তবে শেষ ষোলোতে ডাচরা যে ফুটবল খেলেছে, সেটা যদি তারা ধরে রাখতে পারে, তাহলে তুরস্কের কাজটা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাবে। শেষ ষোলোতে রোমানিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতেছে নেদারল্যান্ডস। কিন্তু ওই ম্যাচে ডজনখানেক গোল হলেও অবাক হওয়ার কিছু ছিল না।
- বিষয় :
- তুরস্ক
- নেদারল্যান্ডস
- ইউরো-২০২৪