ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ইউরো ফাইনাল

সুপার সানডের অপেক্ষায়

সুপার সানডের অপেক্ষায়

ডাচদের বিপক্ষে অন্তিম মুহূর্তে গোল করে জয় নিশ্চিত করার পর সতীর্থ মার্ক গুইয়ের সঙ্গে ওলি ওয়াটকিনসের উদযাপন এএফপি

 ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪ | ০১:০৩

রাতে ইউরো, সকালে কোপা– গেল কয়েক সপ্তাহ বেশ কেটেছে ফুটবলপ্রেমীদের। যুক্তরাষ্ট্রের মাঠগুলোতে মেসি- রদ্রিগেজদের লাতিনশৈলীর সঙ্গে জার্মানির ভেন্যুগুলোতে ইয়ামাল-সাকাদের গতিময় ফুটবলে বুঁদ হয়ে থাকা দর্শকদের জন্য এখন অপেক্ষা এক ‘সুপার সানডের’। যেখানে মায়ামিতে কোপার ফাইনালে (বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল ৬টা) বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার সঙ্গে লড়বে কলম্বিয়া। আর বার্লিনে (বাংলাদেশ সময় রোববার রাত ১টা)  টগবগে তারুণ্যের স্পেন চ্যালেঞ্জ জানাবে ইংল্যান্ডের আভিজাত্যের প্রতি। বুধবার নেদারল্যান্ডসকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে পা রেখেছে ইংলিশরা। দেশের বাইরে কোনো বৈশ্বিক আসরে এটাই তাদের প্রথম ফাইনালে ওঠা। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে ফাইনালে উঠেছে তারা। ঠিক এখানেই ইউরোর সঙ্গে কোপার একটি মিল রয়েছে। কোপাতেও আর্জেন্টিনা টানা দ্বিতীয়বারের মতোই ফাইনাল মঞ্চে। তবে গেল আসরে টাইব্রেকারে ইতালির কাছে হৃদয় ভেঙেছিল ইংল্যান্ডের। সেই চাপা যন্ত্রণা এবার ঘুচে যাবে, যদি স্পেনকে তারা হারাতে পারে। কোপাতেও সেই একই চ্যালেঞ্জ নিয়েছে কলম্বিয়া।

মেসির আর্জেন্টিনাকে নিশ্চিত ‘ফেভারিট’ বললেও কলম্বিয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কেননা, গত ২৮ ম্যাচে তারা অপরাজিত। তা ছাড়া গতকাল উরুগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে ২৩ বছর পর এই আসরের ফাইনালে তারা। ২০০১ সালে সেবার মেক্সিকোকে হারিয়ে কোপার একমাত্র শিরোপা জিতেছিল কলম্বিয়া। তবে কিনা সর্বশেষ তারা এই মেসির আর্জেন্টিনার কাছেই ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে হেরেছিল। গতকাল শালোর্টের ব্যাংক অব আমেরিকা স্টেডিয়ামে উরুগুয়ের বিপক্ষে কঠিন চ্যালেঞ্জেরই মুখোমুখি হয়েছিল তারা। দলের তারকা ফুটবলার রাইটব্যাক দানিয়েল মুনোজ লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে ১০ জনের দল নিয়ে খেলে কলম্বিয়া। অবশ্য তার আগেই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার জেফারসন লেরমার গোলে এগিয়ে থাকে হামেস রদ্রিগেজরা। এর পর বহু চেষ্টা করেও উরুগুয়ে ম্যাচে গোল পায়নি। যে হতাশায় ম্যাচ শেষে গ্যালারিতে দর্শকদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন নুনেজসহ উরুগুয়ের বেশ কয়েকজন ফুটবলার। স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রসহ উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার মোট ১৬ দল এবারের আসরে অংশ নেয়। আর্জেন্টিনার মতো ব্রাজিলও ঐতিহ্যগতভাবে আসরের অন্যতম আকর্ষণ ছিল। তিন ম্যাচে একটি জয় নিয়ে ভিনিসিয়ুস জুনিয়ররা গ্রুপ পর্ব উতরে গেলে উরুগুয়ের কাছে কোয়ার্টারে আটকে যায়। অন্যদিকে ব্রাজিলের গ্রুপ থেকে উঠে আসা কলম্বিয়া নকআউটে পানামা ও উরুগুয়েকে হারিয়ে ফাইনালে পা রেখেছে।

প্রায় এক মাস আগে শুরু হওয়া ইউরোতে দলের সংখ্যা অবশ্য বেশি, ২৪ দেশ খেলেছে সেখানে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইতালি শেষ ষোলোতে নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে যায়। অলটাইম ফেভারিট জার্মানির বিদায় হয় কোয়ার্টারে স্পেনের কাছে হেরে। ফ্রান্স আরেক ধাপ এগিয়ে সেমিতে এসে স্প্যানিশদের কাছে হার মানে। তার আগে গ্রুপ পর্ব থেকে বড় দলগুলোর মধ্যে ক্রোয়েশিয়া বাদ পড়ে। রোনালদোরা বাড়ি ফেরেন কোয়ার্টারে এমবাপ্পেদের কাছে হেরে। সেখানে স্পেন ফাইনালে এসেছে ইতালি, ক্রোয়েশিয়া, জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো দলগুলোকে বিধ্বস্ত করে। টানা ছয় ম্যাচ জিতে এরই মধ্যে ইউরোতে রেকর্ডও গড়েছে ওলমো-ইয়ামালরা। সেই তুলনায় ইংল্যান্ড কিছুটা ভাগ্যের সহায়তা পেয়েছে। গ্রুপ পর্বে স্লোভেনিয়া, সার্বিয়ার মতো কিছুটা কম শক্তির দলগুলোকে পেয়েছে ইংলিশরা। নকআউটে এসে স্লোভেকিয়া, সুইজারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের মোকাবিলা করে। মূলত ডাচ চ্যালেঞ্জটাই সবচেয়ে বড় হার্ডেল ছিল ইংল্যান্ডের সামনে। সেখানে হ্যারি কেইন আর ওয়াটকিনসনের গোলে ডাচদের হৃদয় ভেঙে দেয় ইংলিশরা। ম্যাচে কেইনের পেনাল্টি পাওয়া এবং সাকার হ্যান্ডবল না দেওয়া নিয়ে একটা বিতর্ক চলছে ডাচ মিডিয়াতে। তবে বার্লিনের টিকিট নিশ্চিত হওয়ার পর আর পেছন ফিরে দেখার আগ্রহ নেই ইংলিশদের।

আরও পড়ুন

×