এনগাম্বার হাত ধরে প্রথম শরণার্থীর পদক

ছবি- সংগৃহীত
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৪ | ১২:৩৭
১১ বছর বয়সেই চাচার সঙ্গে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান। কিন্তু তাঁর চাচা হঠাৎ একদিন সিন্ডি এনগাম্বার ইমিগ্রেশন পেপারস হারিয়ে ফেলেন। তাতেই মহাবিপদ। দ্রুতই তাদের ক্যামেরুনে ফিরতে হয়। এর পর অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আবার ইংল্যান্ডে আসা। সেখানে গিয়ে পড়াশোনায় মন দেন এনগাম্বা। এর মধ্যে আবার ইমিগ্রেশন থেকে ডাক আসে। তারা সব কাগজপত্র ঠিক করে নিয়ে যেতে বলে। এনগাম্বা ও তাঁর চাচাও কয়েক দিনের মধ্যে সেখানে হাজির হন। কিন্তু কোনো একটা কারণে আবার পিছিয়ে যায় কাজটা।
এর মধ্যে ইংল্যান্ডে বক্সিং দলের সঙ্গে অনুশীলনের সুযোগ পেয়ে যান এনগাম্বা। যেটা কাজে লাগান তিনি। একটা সময় ইমিগ্রেশনের ঝামেলাও শেষ হয়। তবে এনগাম্বা ভোলেননি তাঁর অতীত। ইংল্যান্ডের পাসপোর্ট নেওয়ার সুযোগ থাকলেও নেননি। এবার তো শরণার্থী টিম থেকেই প্যারিস অলিম্পিকে অংশ নেন। আর যাত্রাতেই দেখান চমক। রোববার রাতে কোয়ার্টার ফাইনাল জিতে প্রথম শরণার্থী হিসেবে অলিম্পিক পদক নিশ্চিত করেন।
নিজের প্রথম অলিম্পিকে এই পদক জয়টা এনগাম্বার কাছে অনেক কিছু। তবে এনগাম্বার কাছে এই যুদ্ধটা জীবনযুদ্ধের চেয়ে কঠিন ছিল না, “কঠিন একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। আমার প্রতিপক্ষরাও বেশ শক্তিশালী। তবে আমার কাছে কঠিন কিছুই মনে হয়নি। কারণ যখন আমি অলিম্পিকে খেলার সুযোগ পাই, তখনই ঠিক করে নিই কঠিনকে টপকেই এগোতে হবে। এমনকি প্রথম রাউন্ডে হেরে যাওয়ার পর অনেকে আমাকে বলেছিল ‘তুমি আর পারবে না’। আমি মাথা ঠান্ডা রেখেই বাকিটা পথ এগিয়েছি। আমার পরিকল্পনা এক চুলও নড়চড় হয়নি।”
কোয়ার্টার ফাইনালে এনগাম্বার প্রতিপক্ষ ফ্রান্মে মিশেল। তবে শরণার্থী দলের হয়ে প্রথম যখন কোনো প্রতিযোগিতার কোয়ার্টারে পৌঁছে গেছেন এনগাম্বা, তখন বাকিটা পথও তিনি পেরোতে পারবেন বলে আশাবাদী ছিলেন, ‘দ্বিতীয় যুদ্ধটা নিয়ে আমি সতর্ক ছিলাম। আমার বিশ্বাস ছিল, সেটিও উতরে যেতে পারব। শরণার্থী দলও আমার ওপর বিশ্বাস রাখে।’ সেমি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘প্রথম শরণার্থী হিসেবে অলিম্পিক পদক জিতলাম। তবে আর ১০ জন শরণার্থীর মতো আমিও একজন মানুষ।’ তিনি আরো যোগ করেন, ‘এই পথে আমি অনেক বাধা অতিক্রম করেছি। সেই সঙ্গে কঠোর অনুশীলনও করেছি। এক জীবনে আমি বহু কষ্ট দেখেছি। এখন তাই এসবে কিছুই মনে হয় না।’ পদক জয়ের পর ছেলেবেলার কঠিন সময়ের কথাও তুলে ধরেছেন তিনি। ভালো ইংরেজি বলতে পারতেন না বলে ছোটবেলায় ইংল্যান্ডের স্কুলে সতীর্থদের টিটকারীর মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁকে।