ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ক্রিকেটারদের রাজনীতির পক্ষে না লিপু

ক্রিকেটারদের রাজনীতির পক্ষে না লিপু

ছবি- সংগৃহীত

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪ | ০৯:৫৬

আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু, বাদল রায়, সালাম মুর্শেদীর মতো জাতীয় দলের ফুটবলার সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করেছেন। সালাম মুর্শেদী টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যও ছিলেন। তারা সবাই নির্বাচন করেছেন খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পর। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিলেন ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসান। জাতীয় দলের অধিনায়ক থাকাকালে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন তারা। 

২০১৮ ও ২০২৪ সালে মাশরাফি নড়াইল-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালে মাগুরা-১ আসন থেকে নির্বাচিত হন সাকিব। জাতীয় দলের এ দুই তারকা ক্রিকেটারকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের। মাশরাফি-সাকিব আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেওয়াকে ভালোভাবে নেননি সমর্থকরা। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর যেটা ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। সাকিবকে জাতীয় দলে নেওয়া নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গাজী আশরাফ হোসেন লিপু মনে করেন, খেলা ছাড়ার আগে ক্রিকেটারদের কোনো দলের হয়ে নির্বাচন করা উচিত হবে না। বিসিবির নীতিমালায় এ ধরনের একটি ধারা সংযোজন করার পক্ষে তিনি।

মাশরাফি-সাকিব ছিলেন সবার প্রিয়। সব মতাদর্শের মানুষ খেলার মাঠে তাদের সমর্থন দিতেন রাজনীতিতে আসার আগে। কিন্তু আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর সমর্থকদের কাছে ঘৃণার পাত্র হয়ে ওঠেন তারা। জানুয়ারিতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নিয়মিত দুয়ো শুনতে হয়েছে সাকিবকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দেশের এ দুই তারকা ক্রিকেটারের কাছ থেকে কোনো বার্তা না পাওয়ায় তরুণ প্রজন্মের কাছে ভিলেন বনে যান তারা। সরকার পতনের পর মাশরাফির নড়াইলের বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় কে বা করা। মাগুরায় সাকিবের রাজনৈতিক কার্যালয়েও হামলা হয়েছে। বর্তমান বাস্তবতায় দেশে সাকিবের নিরাপত্তা ও জাতীয় দলে খেলার বিষয়টি চর্চিত। 

বিষয়টি লক্ষ্য করে গতকাল প্রধান নির্বাচক মনে করেন, গাইডলাইন তৈরি করে হলেও ক্রিকেটারদের দলীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়া ঠেকাতে বলেন, ‘এ বিষয়ে একটা দিকনির্দেশনা থাকা উচিত। বোর্ডের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা যদি থাকে, তাহলে কোনো খেলোয়াড় রাজনীতিতে যাওয়ার আগে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে তার প্রায়োরিটি কোথায়। যেহেতু তারা জাতীয় সম্পদ। তার পেছনে অনেক বিনিয়োগ থাকে। খেলোয়াড় হিসেবে দেশের আরও সার্ভিস পাওয়ার সুযোগ আছে।’

মাশরাফি-সাকিব রাজনীতি করে সংসদ সদস্য হননি। তারকা কোটায় আওয়ামী লীগ দলে ভিড়িয়েছে দু’জনকেই। বিরোধী দল ছাড়া একপেশে নির্বাচনে জয়ী হন তারা। অন্যদের মতো দেশের দুই ক্রিকেটার ভাবতে পারেননি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়বেন শেখ হাসিনা। বর্তমান বাস্তবতায় তাদের কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হচ্ছে। জাতীয় দল নির্বাচন করতে গিয়ে লিপুকেও কিছু প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। 

পাকিস্তান সফরে সাকিবকে দলে রাখা নিয়ে প্রধান নির্বাচকের ব্যাখ্যা হলো, ‘সাকিবকে পারফরম্যান্সের আলোকেই দলে নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে তাঁর রেকর্ড সবকিছু মিলিয়ে। তাঁর ফিটনেস এবং অন্যান্য বিষয়ে আমার সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছে। জিম্বাবুয়ে সফরের সময় যে মিটিং হয়েছিল, তার থেকে শট প্ল্যান জানতে চেয়েছিলাম। কারণ আমাদের অনেক টেস্ট ম্যাচ আছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত আটটা টেস্ট ম্যাচ রয়েছে। সেখানে তাঁর অ্যাভিলিবিলিটি জানতে চেয়েছি। খেলা চলাকালীন তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন, উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতির আলোকে আমার আবার রিক্যাম্প করতে হয়েছে। শুধু ফোন নয়, পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে ই-মেইল কমিউনিকেশন হয়েছে। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ডিসেম্বর পর্যন্ত সব সিরিজে থাকবেন কিনা। তিনি বলেছেন, থাকবেন এবং প্রতিটি সিরিজের আগে প্র্যাকটিস সেশনেও পাওয়া যাবে।’ 

লিপুর আগে জাতীয় দলের আরেক ক্রিকেটার নুরুল হাসান সোহানও বলেছেন, খেলা ছাড়ার আগে ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে জড়ানো উচিত হবে না।

আরও পড়ুন

×