দাবার ইতিহাসে বাজে পারফরম্যান্স

ছবি- সংগৃহীত
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১১:৩৬ | আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১২:২১
রাতেই ঢাকার বিমানে উঠবেন। তাই হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে হোটেলে নিজের ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছিলেন বাংলাদেশের নারী দাবাড়ু নোশিন আনজুম। বিশ্ব দাবা অলিম্পিয়াডে দলের বাজে ফলের হতাশা লুকিয়ে রাখতে পারেননি তিনি। সোমবার হাঙ্গেরি ছাড়ার আগে হোয়াটসঅ্যাপে সমকালের কাছে টুর্নামেন্ট সম্পর্কে নোশিন বলেন, ‘মন খারাপ হওয়াটা স্বাভাবিক। এবার আমাদের রেজাল্ট খারাপ হয়েছে। শেষ তিন রাউন্ডে খারাপ করার কারণেই আমরা পিছিয়ে পড়ি। ভাগ্যও খারাপ ছিল।’
নোশিনের মতো হতাশা পুরো বাংলাদেশ শিবিরে। সাম্প্রতিক ইতিহাসে দাবা অলিম্পিয়াডে এত বাজে পারফরম্যান্স করেনি বাংলাদেশ দল। রোববার রাতে শেষ হওয়া প্রতিযোগিতায় ওপেন বিভাগে ১৮৮ দেশের মধ্যে ৭৮তম হয়েছে বাংলাদেশ পুরুষ দল। নারী বিভাগে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৯ দেশের মধ্যে ৮১তম।
অনেক দিক দিয়েই এবারের দাবা অলিম্পিয়াডে চোখ ছিল বাংলাদেশের ক্রীড়ামোদিদের। ৮১ বছরের রানী হামিদ তাঁর ক্যারিয়ারে শেষ অলিম্পিয়াডে এবং প্রয়াত গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের ছেলে তাহসিন তাজওয়ার জিয়া কেমন করেন, সেদিকে সবার দৃষ্টি ছিল। একই সঙ্গে গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার পথে ফাহাদ রহমান আরেকটি নর্ম পান কিনা, সেটাও ছিল আলোচনায়। নারী বিভাগে দাবার বোর্ডে রানী হামিদ নিজের সেরা চাল মেরেছেন। পুরুষ বিভাগে গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব ও গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তি মেলাতে পারেননি। শুধু তাই নয়, দশম রাউন্ডে ইসরায়েলের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচ বয়কটের সিদ্ধান্তের কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন রাজীব। সেটার প্রভাব এবারের দাবা অলিম্পিয়াডে পড়েছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার ফাহাদ রহমান, ‘আমার মতে, প্রভাব পড়েছে। নীড় (মনন রেজা) ইসরায়েলের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জিতেছেন। জয়ের জন্য খেলতে গিয়ে আমি হেরে যাই। রাজীব ভাই যদি হাফ পয়েন্ট আনতে পারতেন। তাহলে আমরা এত পেছনে যেতাম না। পঞ্চাশের ভেতরে আসার সুযোগ ছিল।’
সেটা তো হয়নি, সত্তরের বাইরে বাংলাদেশ দল। বর্তমান কমিটির অধীনে ২০১৬ সালে আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় ওপেন বিভাগে ১৮০ দেশের মধ্যে ৭৬তম এবং নারী বিভাগে ১৩৯ দেশের মধ্যে ৭৭তম হয়েছিল বাংলাদেশ। এবারের আগে মাঝের আসরগুলোতে প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলেও এত বাজে ফল করেনি দলটি। এমন বাজে পারফরম্যান্সের বিষয়ে গতকাল সমকালকে ফাহাদ বলেন, ‘এটা তো দলগত খেলা। প্রতিজনের রেজাল্টের ওপরে সবকিছু নির্ভর করে। আমার পারফরম্যান্সে আমি সন্তুষ্ট। একটু খারাপ হয়েছে রাজীব ভাই ও নিয়াজ স্যারের। এজন্য আমরা পয়েন্ট পাইনি। মনন রেজা নীড় এবং আমি ভালো খেলেছিলাম। দু’জন দিয়ে অল্প কাভারেজ করতে পেরেছি, পুরোটা করতে পারিনি। সবকিছু মিলিয়ে আমার পারফরম্যান্সে হতাশ না; তবে দলের একটু খারাপ হয়ে গেছে। এটা তো আমার হাতে নেই। আমার বোর্ডে তো আমি সেরাটা দিয়েছি। টিমের মধ্যে আমিই সেরা পারফরমার।’
- বিষয় :
- দাবা
- দাবা ফেডারেশন