ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

সাক্ষাৎকার

‘লিগ না হলে কাউন্সিলরশিপ বাতিল’

‘লিগ না হলে কাউন্সিলরশিপ বাতিল’

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি পদে নির্বাচিত হচ্ছেন মো. ইমরুল হাসান।

সাখাওয়াত হোসেন জয়

প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৪ | ১৫:৩৩ | আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৪ | ১৫:৩৩

বাফুফের সহসভাপতি হয়েও ফেডারেশনের অনেক অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। নিজেকে বিতর্ক থেকে আড়ালে রেখে ফুটবল উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিনিয়র সহসভাপতি পদে নির্বাচিত হচ্ছেন মো. ইমরুল হাসান। নতুন দায়িত্ব নেওয়ার আগে ফুটবলের নানা পরিকল্পনার কথা সমকালের কাছে তুলে ধরেছেন বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি। তা শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিনিয়র সহসভাপতি হতে যাচ্ছেন...

ইমরুল : আমার মনে হয়, নির্বাচনের মাধ্যমে আসতে পারলে আনন্দটা আরেকটু বেশি হতো। যেহেতু আমি সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে আসছি, তো দায়িত্বটা স্বাভাবিকভাবে আরও বেড়ে গেছে। আমি আশাবাদী, যেসব দায়িত্ব অর্পিত হবে, সেই দায়িত্বগুলো যথাযথভাবে পালন করতে পারব। পাশাপাশি আমার নিজেরও কিছু চিন্তাভাবনা আছে। একটা জিনিস প্রাধান্য দেওয়ার মতো আমার কাছে, সেটা হচ্ছে গঠনতন্ত্রের কিছু পরিবর্তন আনা। গঠনতন্ত্রে কিছু ধারা নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তার মধ্যে হতে পারে, যেসব জেলায় নিয়মিত লিগ হয় না, অন্তত একটা মেয়াদের মধ্যে তিনটি লিগ যদি কোনো জেলা করতে না পারে, তাদের কাউন্সিলরশিপ বাতিলের একটা চিন্তাভাবনা আছে।

সমকাল: নির্বাচনের সময় কাউন্সিলরদের কদর করা হয়। অভিযোগ আছে, অন্য সময়ে তাদের মূল্যায়ন করা হয় না।

ইমরুল : ভোটের সময় ভোটারদের একটু কদর থাকেই। কাউন্সিলরদের অভিযোগ যেমন সত্য, তেমনি এটাও সত্য, তারা অনেকেই কাউন্সিলর হয়ে আসেন, যারা মাঠে ফুটবল রাখেন না। একটা তথ্য দিই, যদিও এটা সুখকর কিছু না। এই চার বছরের মধ্যে ৬৪টি জেলার মধ্যে শুধু পাঁচটি জেলা দু’বার করে লিগ আয়োজন করেছে। অধিকাংশ জেলায় একটি করে লিগ হয়েছে এবং কিছু জেলায় একটিও হয়নি। স্থানীয় ডিএফএতে যারা আছেন, তারা যদি আরেকটু সক্রিয় হন, তাহলে বাফুফের সঙ্গে যোগাযোগ এমনিতেই বাড়বে।

সমকাল : সরকার পরিবর্তনের পর সবাই ধরে নিয়েছে, বাফুফেতেও বদল আসবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কিছু কিছু দুর্নীতিবাজের পুনর্বাসন হচ্ছে।

ইমরুল : কিছু ব্যক্তির নামে অবশ্যই বিতর্ক আছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই না, সেসব বিতর্কিত লোক অন্তত নির্বাচিত হয়ে আসুক। কিন্তু আমার বা আপনার কাছে সে ধরনের কোনো ক্ষমতা নেই, এই লোকগুলো যেন নির্বাচন করতে না পারে। স্বাধীন দেশ, তারা নির্বাচন করতেই পারে। তবে আমাদের চেষ্টা থাকবে, তারা যেন নির্বাচিত হয়ে আসতে না পারে।

সমকাল : বড় দায়িত্ব, কঠিন চ্যালেঞ্জ; ফুটবল নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

ইমরুল : কিছু পরিকল্পনা তো আছেই। শুধু ফুটবল নয়, পাশাপাশি অন্যান্য দিকও রয়েছে। প্রথমত, গঠনতন্ত্রের একটা সংশোধনী। আমাদের মূল সমস্যাটা হলো মাঠ। কিছুদিন আগে উপদেষ্টার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল। আমি তাঁকে বলেছিলাম, যদি ফুটবলের জন্য পাঁচ-ছয়টি মাঠ, সেটা বিভিন্ন জেলায়ও হোক, যাতে নির্দিষ্ট করে দেয়। এই মাঠগুলোতে শুধু ফুটবলই হবে। তাহলে পেশাদার লিগের ক্লাবগুলো জানতে পারবে, তাদের নির্দিষ্ট ভেন্যু সম্পর্কে। প্রিমিয়ার দলগুলোর পক্ষে ঢাকার বাইরে গিয়ে খেলা সম্ভব। কিন্তু নিচের দিকের দলগুলোর ঢাকার বাইরে গিয়ে খেলা সম্ভব নয়। তখন আমরা নিচের দিকের দলগুলোকে ঢাকা স্টেডিয়ামেও খেলাতে পারব।

সমকাল : আপনি লিগ কমিটির চেয়ারম্যান। আর প্রিমিয়ার লিগ সেভাবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে না। নতুন মৌসুমের জন্য নতুন কোনো ভাবনা আছে কি আপনার?

ইমরুল : এটা নিয়ে আমরা কিছুটা উদ্বিগ্ন। লিগ জনপ্রিয় করার জন্য আমরা অনেক চেষ্টায়ই করে যাচ্ছি। একসময় দেখা যেত, অফিসের দিন খেলাগুলো হতো। তখন সমর্থকদের অভিযোগ ছিল, ছুটির দিনে খেলা হলে তারা মাঠে গিয়ে দেখতে পারবেন। ঢাকা স্টেডিয়ামে না হয়ে ঢাকার বাইরে খেলা ছড়িয়ে দিলে দর্শক আসত। আমরা কিন্তু খেলা ঢাকার বাইরেও নিয়ে গিয়েছি, কিন্তু দর্শক সংখ্যা সেভাবে বাড়ছে না। আমার মনে হয়, যদি পাঁচ কিংবা ছয়টি নির্দিষ্ট ভেন্যু থাকে, তাহলে ক্লাবগুলো বা স্থানীয় দর্শকরা জানবে এটা ঢাকা মোহামেডান, ঢাকা আবাহনী, বসুন্ধরা কিংসের মাঠ, তখন কিন্তু ধীরে ধীরে দর্শকরা ক্লাবগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে। ক্লাবগুলো যদি তাদের ক্যাম্প সেখানে স্থানান্তর করে, সেখানে অনুশীলন করে, তাহলে স্থানীয় লোকজনের ফুটবলের প্রতি আকর্ষণ বাড়বে এবং খেলা দেখতে মাঠে যাবেন।

সমকাল: বাফুফে ফাইন্যান্স কমিটি নিয়ে অনেক অভিযোগ। দায়িত্ব নেওয়ার পর কোথায় কোথায় সমস্যা মনে হয়েছে আপনার?

ইমরুল : ফাইন্যান্স কমিটির দায়িত্ব আমি গত মাসে নিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু হয়নি, যেটাতে অভিযোগ আসতে পারে। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে, প্রক্রিয়ার মধ্যে সমস্যা আছে। আমার একটা পরিকল্পনা আছে, তা হলো অভ্যন্তরীণ অডিট ডিপার্টমেন্ট করা। যাতে করে এই জিনিসগুলো তারা মনিটর করতে পারে। আমাদের যেন আবার সেই ফিফার শাস্তির সম্মুখীন হতে না হয়।

আরও পড়ুন

×