ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

শূন্য থেকে মিলিয়নেয়ার, বৈভবের রূপকথার উত্থান

শূন্য থেকে মিলিয়নেয়ার, বৈভবের রূপকথার উত্থান

আইপিএলে দল পাওয়া ১৩ বছরের বৈভব। ছবি: ক্রিকইনফো

সুমন মেহেদী

প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৪ | ১৯:২৭ | আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৪ | ১৯:২৭

বৈভব সূর্যবংশীর স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়া। তাঁর বাবা সঞ্জীব একজন কৃষক। সঙ্গে চালান ছোট্ট একটা দোকান। বাড়ি বিহারের সমস্তিপুরে। কাছাকাছি নেই ক্রিকেট একাডেমি। কিন্তু ইচ্ছা ছিল ষোলোআনা। ভোর ৪টায় উঠে ১০০ কিলোমিটার দূরে বাবা-ছেলে অনুশীলনে গেছেন। তারও আগে মা বানিয়ে দিয়েছেন খাবার। ওই বৈভব ১৩ বছরেই সেঞ্চুরিম্যান খ্যাতি পান। আইপিএল নিলামে এই কিশোরে নজর ছিল অনেকের। ৩০ লাখ রুপি ভিত্তিমূল্যের তালিকায় থাকলেও নিলামের ভাঙা হাটে রাজস্থান রয়্যালস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের মধ্যে লড়াই জমান তিনি। শেষ পর্যন্ত ১ কোটি ১০ লাখ রুপিতে রাজস্থান তাঁকে ঘরের ছেলে বানিয়ে ফেলেছে। ১৩তেই বৈভব বনে গেছেন মিলিয়নেয়ার।

আইপিএলে রেকর্ডও গড়েছেন বৈভব। নিলামে সবচেয়ে কম বয়সী ছিলেন তিনি। এখন দল পাওয়া সবচেয়ে কম বয়সীও। তবে তাঁর জন্য কোটি রুপি এমনই লগ্নি করেনি রাজস্থান। বয়স ভিত্তিতে ট্রিপল সেঞ্চুরি আছে তাঁর। ১৩ বছরেই অনূর্ধ্ব-১৯ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন। নিলামের আগে রাজস্থান তাঁর জন্য ট্রায়ালের ব্যবস্থা করে। সেখানে বৈভব হাঁকান তিন ছক্কা। তাঁর বাবার ভাষ্য, ‘কোচ এক ওভারে ১৭ রান নিতে বলেছিলেন। বেটা নে তিন ছক্কা মার দিয়া।’ সব মিলিয়ে ট্রায়ালে আট ছক্কা ও চারটি চার মারা এই প্রতিভাকে হাতছাড়া করতে চায়নি রাজস্থান।

বৈভবের ক্রিকেট হাতেখড়ি কোচ সৌরভ কুমার ও মণীষ ওঝার হাতে। ছেলের ক্রিকেট শেখার খরচ মেটাতে জমি বিক্রি করেছেন বাবা সঞ্জীব। বিফলে যায়নি তাদের ত্যাগ ও শ্রম। কোচ সৌরভ বলেন, ‘নিলামের আগে প্রতিটি দল বৈভবের খেলার ভিডিও চেয়েছিল। ট্রায়ালের পর জানতাম রাজস্থান তার জন্য ঝাঁপাবে।’ মণীষ জানান, বাড়ি দূরে হওয়ায় একদিন পরপর অনুশীলনে আসতেন বৈভব। অন্যরা ১০০-২০০ বল খেললেও বৈভব খেলতেন ৫০০ বল। তারা যত খেলবেন, তত শিখবেন। তবে বৈভবের নেওয়ার ক্ষমতাও ছিল।

বৈভবের আইপিএলে ম্যাচ খেলার সুযোগ খুব একটা মিলবে বলে মনে হয় না। তবে শেখার দুয়ার থাকবে উন্মুক্ত। ভারতের টি২০ বিশ্বকাপজয়ী কোচ রাহুল দ্রাবিড় বলেন, ‘সে রাজস্থানে ট্রায়াল দিয়েছে, যা দেখিয়েছে তাতে আমরা খুশি। সে দারুণ প্রতিভা। আশা করছি, এখানে সে অসাধারণ পরিবেশ পাবে।’ কোচ সৌরভের মতে, এত কম বয়সে রাহুল দ্রাবিড়ের সান্নিধ্য পাওয়াই বিরাট ব্যাপার। তবে এই তরুণের পিছু লেগে আছে বয়স বিতর্ক। কাগজে-কলমে বয়স ১৪ ছুঁইছুঁই হলেও আসলে তাঁর বয়স নাকি ১৫। বিতর্ক কাটাতে বৈভবের বাবা নতুন করে পরীক্ষার পক্ষে। বয়সবিতর্ক জশস্বী জয়সোয়ালকে নিয়েও ছিল। তা আটকাতে পারেনি তাঁকে।

আরও পড়ুন

×