বান্ধবীকে নিয়ে কথা বলায় মেজাজ হারান এনতুলি

ইমার্জিং দলের রিপন মন্ডলের প্রতি এমন মারমুখী ছিলেন প্রোটিয়া ক্রিকেটার শেপো এনতুলি। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫ | ১৬:৩৮ | আপডেট: ২৯ মে ২০২৫ | ১৬:৪০
শেপো এনতুলির আচরণ ছিল মারমুখী। কথার লড়াই থেকে বাগ্বিতণ্ডা, চোখ রাঙানি এবং শারীরিকভাবে হেনস্তা করার মতো ঘটনা ঘটান তিনি। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং দলের অফ স্পিনার এনতুলি মাঠের শৃঙ্খলা ভাঙেন বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের পেসার রিপন মণ্ডলের হেলমেট ধরে টানাটানি করে।
ম্যাচটি টিভিতে সম্প্রচার হওয়ায় অনাকাঙ্ক্ষিত সেই ঘটনার ভিডিও মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওটি দেখে এনতুলি ও দক্ষিণ আফ্রিকা দলের দিকে আঙুল তোলা স্বাভাবিক। কেউই হয়তো পেছনের ঘটনার খোঁজ নেবে না।
বাস্তবতা হলো, প্রোটিয়া স্পিনারের উত্তেজিত হওয়ার পেছনে একটি কারণ আছে। ম্যাচ অফিসিয়াল ও টিম ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লুজ বল করে ছয় খেয়ে নিজের ওপর হতাশা প্রকাশ করতে ইংরেজি বিশেষ শব্দ ব্যবহার করেন এনতুলি। ইংরেজিভাষী মানুষ অবলীলায় শব্দটির চর্চা করেন। রিপন তা বুঝতে না পেরে প্রতি-উত্তর দেন এনতুলির বান্ধবীকে জড়িয়ে। বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে রিপনের দিকে তেড়ে গিয়ে বিতণ্ডা ও হেলমেট ধরে টানাটানির ঘটনায় জড়ান এনতুলি।
বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের ইনিংসে ১০৫তম ওভারে বোলার ছিলেন এনতুলি। তাঁর করা প্রথম বলটিই লং অন দিয়ে মাঠের বাইরে আছড়ে ফেলেন রিপন। বাজে বল করায় বোলার হতাশা প্রকাশ করেন নিজের মতো করে। রিপন তখন নন স্ট্রাইক ব্যাটার মেহেদীর কাছাকাছি ছিলেন। তিনি মনে করেছিলেন, বোলার তাঁকে গালি দিয়েছেন। এনতুলি এগিয়ে আসার পরও রিপন নিজের ভুল বুঝতে না পারায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে বলে ম্যাচ অফিসিয়ালদের একজন জানান।
এনতুলি আক্রমণাত্মক হওয়ায় রিপন দুই হাতে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন। এ সময় প্রোটিয়া বোলার দু’বার রিপনের হেলমেট ধরে টেনে নিচে নামান। আম্পায়ার মুহাম্মদ কামরুজ্জামান এনতুলিকে জাপটে ধরে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে, পাশ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার অন্য দুই ক্রিকেটার রিপনের দিকে তেড়ে যান। ক্রিকেটার মিকা এল প্রিন্স আঙুল উঁচিয়ে শাসাতে থাকেন রিপনকে। তখন লেগ আম্পায়ার আরমো জ্যাকবস ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
ঘটনা সেখানেই শেষ হয়নি। তিন বল পরে ক্রিজ না ছাড়লেও রিপনের দিকে আচমকা বল ছুড়ে মারেন এনতুলি। ব্যাট দিয়ে বল থামাতে না পারলে বড় ধরনের আঘাত পেতেন স্বাগতিক ব্যাটার। ওই ঘটনার পর প্রোটিয়াদের হতাশা বাড়িয়ে দুটি চারের সঙ্গে একটি ছয় মারেন রিপন। এনতুলির বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলার চেষ্টা করলে স্টাম্পিং হন তিনি। ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৮১ বলে করেন ৪৩ রান। দলীয় স্কোর ৩৭১ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ ইমার্জিং।
এনতুলি কেন চটেছিলেন– জানতে চাওয়া হলে রিপন বলেন, ‘ওর বলে কেউ ছয় মারলেই খারাপ ব্যবহার করে। আগেও করেছে।’ এ ব্যাপারে ম্যাচ রেফারি সেলিম শাহেদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আম্পায়ারদের রিপোর্ট হাতে পেলে বিষয়টি ভালোভাবে জানা যাবে।’
তবে মাঠে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় দুই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হবে বলে জানান ম্যাচ রেফারি। তিনি বলেন, ‘এটি সিরিজের শেষ ম্যাচ হওয়ায় আমরা শাস্তি কার্যকর করতে পারছি না। তাই দুই দলের ক্রিকেট বোর্ডের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হবে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।’ দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং দলের সঙ্গে বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের খেলোয়াড়দের লড়াই ওয়ানডে সিরিজ থেকেই লেগে আছে। রাজশাহীতে দ্বিতীয় ৫০ ওভারের ম্যাচে আনদিলে সিমেলানে ও জিসান আলম বিবাদে জড়িয়ে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন।
- বিষয় :
- বাংলাদেশ ক্রিকেট
- বিসিবি