নয় ম্যাচে ছয় জোড়া ওপেনার খুলনার

ছবি: ফাইল
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২০ | ০৬:১৫
মুশফিকের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের শুরুতে দারুণ ছন্দে ছিল খুলনা টাইগার্স। শুরুর তিন ম্যাচেই জয় পাওয়া একমাত্র দল ছিল তারা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পথ হারিয়েছে খুলনা। পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকা দলটি নেমে গেছে পাঁচে। কুমিল্লা-রংপুরের যেমন শেষ চারে ওঠার সম্ভাবনা আছে। তেমনি বিদায়ের শঙ্কা আছে খুলনার। আর তাদের হারের অন্যতম কারণ হতে পারে টপ অর্ডারের ব্যাটিং অর্ডারে অস্থিতিশীলতা।
খুলনা এখন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু বিপিএলে নয় ম্যাচ খেলেছে। এই নয় ম্যাচে ছয় জোড়া ওপেনার ব্যবহার করেছে তারা। ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন এসেছে মুশফিকের। জায়গা পরিবর্তন করে খেলানো হচ্ছে শামসুর রহমানদের। শুধু নিয়ম করে তিনে ব্যাটিং করে যাচ্ছেন রাইলি রুশো। কিন্তু ওপেনিং কিংবা মুশফিকের পাঁচে নেমে যাওয়ার প্রভার তার ওপর পড়ছে। স্বাভাবিক খেলাটা তাই তিনি খেলতে পারছেন কি-না প্রশ্ন আছে। ফলত ব্যাটিং অস্থিতিশীলতার সঙ্গে জয়েও স্থিতিশীলতা হারিয়েছে খুলনা।
টাইগার্সরা শুরুর যে তিন ম্যাচে জয় পেয়েছিল ওই তিন ম্যাচে ওপেন করেছিলেন আফগান তরুণ ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং বাংলাদেশের তরুণ বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসাইন শান্ত। গুরবাজ তিন ম্যাচের দুটিতে ভালো খেলেন। কিন্তু নাজমুল ব্যর্থ হন তিনটিতেই। তবে তিনে নেমে রুশো এবং চারে নেমে মুশফিক ওই তিন ম্যাচে ভালো ব্যাটিং করেন।
১ম ম্যাচ নাজমুল শান্ত-রাহমানুল্লাহ গুরবাজ ৪ রানের জুটি
২য় ম্যাচ নাজমুল শান্ত-রাহমানুল্লাহ গুরবাজ ১ রানের জুটি
৩য় ম্যাচ নাজমুল শান্ত-রহমানুল্লাহ গুরবাজ ২৪ রানের জুটি
৪র্থ ম্যাচ রহমানুল্লাহ গুরবাজ-সাইফ হাসান ১ রানের জুটি
৫ম ম্যাচ রহমানুল্লাহ গুরবাজ-মেহেদি মিরাজ ৫ রানের জুটি
৬ষ্ঠ ম্যাচ মেহেদি মিরাজ-নাজমুল শান্ত ২৩ রানের জুটি
৭ম ম্যাচ মেহেদি মিরাজ-নাজমুল শান্ত ১১৫ রানের জুটি
৮ম ম্যাচ মেহেদি মিরাজ-আমিনুল ইসলাম ১১ রানের জুটি
৯ম ম্যাচ মেহেদি মিরাজ-হাশিম আমলা ৮ রানের জুটি
চতুর্থ ম্যাচে নাজমুল শান্তকে বসিয়ে রাখা হয়। তার জায়গায় ওপেন করেন আরেক তরুণ বাংলাদেশ ওপেনার সাইফ হাসান। দুইশ' ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওপেনিংয়ে তিনি ওয়ানড মেজাজে ২০ বলে ২০ রান করে বাদ পড়ে যান। পঞ্চম ম্যাচে আবার ওপেনিংয়ে বদল আসে। রহমানুল্লাহ গুরবাজের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন মেহেদি মিরাজ। ব্যর্থ হন দু'জনই।
ষষ্ঠ ম্যাচে আবার ওপেনিংয়ে বদল। গুরবাজকে না পাওয়ায় খুলনা ওপেন করতে নামান শান্ত এবং মিরাজকে। ওই ম্যাচে শান্ত ৩০ রান করেন। তবে ব্যর্থ হন মিরাজ। মুশফিক পাঁচে ব্যাট করে ৫৯ রান করেন। রংপুরের সামনে ভালো লক্ষ্য দিয়ে জয় পায় তার দল। পরের ম্যাচে টিকে যায় নাজমুল শান্ত এবং মেহেদি মিরাজের ওপেনিং জুটি। 'ঝড়ে বক পড়ার' মতো মিরাজ ওপেনিংয়ে খেলেন ৮৭ রানের ইনিংস। আর নাজমুল করেন ৪১ রান। দু'জনে গড়েন ১১৫ রানের জুটি।
কিন্তু অষ্টম ম্যাচে আবার ওপেনিংয়ে বদল আনতে হয় খুলনার। এ ম্যাচে শান্ত ছিলেন না একাদশে। দলে শামসুর রহমান থাকতেও ওপেন করানো হয় লেগ স্পিন করে আলোচনায় আসা আমিনুল ইসলামকে দিয়ে। ব্যর্থ হন দু'জনই। ঢাকার বিপক্ষে ম্যাচ হারে খুলনা। ওই ম্যাচে মুশফিক পাঁচে নেমে ৩৩ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলেন। কিন্তু দল হারে মাত্র ১২ রানে। মুশি চারে নেমে রুশোর সঙ্গে জুটি গড়তে পারলে হয়তো ম্যাচটা ঘুরে যেতে খুলনার দিকে। কিন্তু মুশফিকরা সুযোগটা নিতে পারেননি।
নবম ম্যাচে আবার ওপেনিংয়ে বদল খুলনার। এবার মিরাজের সঙ্গী প্রোটিয়া ওপেনার হাশিম আমলা। এবারও তারা দু'জন ব্যর্থ। তিনে নেমে রুশো কিছু রান করেন। পাঁচে নেমে মুশফিক সেট হয়ে ফিরে যান। রুশো-মুশফিক চার নম্বরে জুটি গড়ার সুযোগ এ ম্যাচেও হাতছাড়া করেন। খুলনার দলে ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে যেন চলছে ছেলে খেলা। দুর্বল টিম ম্যানেজমেন্ট এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছে। না-কি রক্ষনাত্মক অধিনায়কের তকমা পাওয়া মুশফিক একক আধিপত্যে এই অদল-বদল করছেন বলা মুশকিল।