যন্ত্রেই মানসিক উদ্বেগ!
চাপা অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে মনের অজান্তেই

চাপা মানসিক উদ্বেগের পেছনে কাজ করছে যন্ত্র
মুস্তাফা তৌহিদ
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২২:২৭ | আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৬:৪২
দিন-রাত স্মার্টফোনের পর্দায় ডুবে থাকা। জেগে থাকার প্রায় পুরোটা সময়েই যেন চোখ দখলে নিয়েছে স্মার্ট পর্দা। ভাবনায় সেকেন্ডের ব্যবধানে দৃশ্য বদলের হেরফের। চাপা অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে মনের অজান্তেই। বলতে গেলে, সব সময়ের সঙ্গী হাতের স্মার্টফোনই যেন ভাবনায় ছড়াচ্ছে অন্তহীন উদ্বেগ!
স্মার্টফোন যেন জীবনেরই অংশ এখন। তথ্য সংগ্রহ, যোগাযোগ, বিনোদন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব কাজেই স্মার্টফোনের ওপর নির্ভরশীলতা কাটানোর যেন সুযোগ নেই। কিন্তু সুবিধার বিপরীতে স্মার্টফোন নির্ভরতা মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর কী নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, তা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা চলছে। বিশেষ করে কতটা উদ্বেগ সৃষ্টির কারণ স্মার্টফোন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উদ্বেগের কারণ স্মার্টফোন!
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যখন-তখন চেনা-অচেনা মানুষের জীবনচিত্র দেখে যে কেউ নিজের অজান্তেই অন্যের সঙ্গে নিজের সামাজিক, পারিবারিক ও অন্য সব অবস্থার তুলনায় বুঁদ হয়ে পড়েন। সামাজিক মাধ্যমে নানামুখী নেতিবাচক মন্তব্য বা সমালোচনার মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা উদ্বেগের মাত্রা বাড়িয়ে তোলার পেছনের অন্যতম কারণ হিসেবে সামনে আসছে।
তথ্যপ্রবাহ
সামাজিক মাধ্যমে ক্রমাগত দৃশ্যমান ছবি, ভিডিও বা ব্যক্তিগত বার্তালাপের ধারাবাহিক প্রবাহ মস্তিষ্কে বিরূপ চাপ সৃষ্টি করতে পারে। অনেক সময় মনোযোগ ধরে রাখা দুরূহ করে তোলে। ফলে উদ্বেগের মাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে বলে গবেষণা সূত্রে জানা গেছে।
অনিদ্রা
ঠিক ঘুমের আগে স্মার্টফোন ব্যবহার করলে ফোনের নীল আলো মস্তিষ্কে ‘মেলাটোনিন’ নামক হরমোনের নিঃসরণে বাধা সৃষ্টি করে, যা ঘুম নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। ফলে ঘুমের ব্যাঘাত হয়; বাড়ে উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তা।
সংযোগ বিচ্ছিন্নতা
ডিজিটাল ডিভাইস ও ইন্টারনেটের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ বাস্তব জগৎ থেকে সবাইকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তা ধীরে ধীরে সামাজিক বিচ্ছিন্নতার দিকে ঠেলে দেয়। ফলে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বাড়তে পারে।
উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণ
স্মার্টফোন ব্যবহারের সময়সীমা থাকা শ্রেয়। প্রতিদিন কতক্ষণ স্মার্টফোন ব্যবহার করা হবে, তা আগে থেকে নির্ধারণ করে নেওয়া জরুরি। ঠিক ওই সময়সীমা মেনেই প্রতিদিনের স্মার্টফোন ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা জরুরি। সুনির্দিষ্ট কিছু কাজের সময়ে স্মার্টফোন ব্যবহার না করা, যেমন– ঘুমানোর ঘণ্টাখানেক আগে, খাওয়ার সময়ে, গাড়ি চালানোর সময়ে ফোন ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বিকল্পের খোঁজ
নিয়মিত ব্যায়াম করা, বই পড়া, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর মতো বিকল্প সব মাধ্যমে সময় ব্যয় করা উচিত। ওই সব সময়ে ফোন থেকে দূরে থাকলে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব।
- বিষয় :
- অস্থিরতা