ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

কৃষকের গলার কাঁটা ২১৭ স্লুইসগেট

কৃষকের গলার কাঁটা ২১৭ স্লুইসগেট

ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের খালে অকেজো স্লুইসগেট সমকাল

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ১১ মার্চ ২০২২ | ২২:১৯

শুস্ক মৌসুমে নদী ও খালের পানি কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য চালু হয় 'বাংলাদেশ ইরিগেশন প্রজেক্ট' (বিআইপি) প্রকল্প। কিন্তু এটি কাজে না আসায় ঝালকাঠিতে ব্যাপক সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার দুটি উপজেলায় এ প্রকল্পের মোট ২১৭টি স্লুইসগেট অকেজো। আশির দশকে প্রকল্পটি নেওয়া হলেও এখন তা দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। স্লুইসগেটগুলো এখন কৃষকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসবে বাধা পেয়ে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ কমে যাচ্ছে। ফলে পলি জমে খালগুলো সরু হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় কৃষকদের।

কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেক টাকা খরচ করে বিকল্প উপায়ে জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে তাদের। স্লুইসগেটগুলো অকেজো থাকায় জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। ঝালকাঠি সদরে সুগন্ধা ও বাসন্ডা নদীর মাধ্যমে ছোট ছোট খালে পানি প্রবাহিত হয়। স্লুইসগেটগুলো অকেজো থাকায় পানি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। খালে পলি জমায় নাব্য হারিয়ে যাচ্ছে। দেখা গেছে, এসব গেটের অধিকাংশের দরজা ভাঙা ও রেগুলেটর নেই। প্রয়োজনের সময় গেট খোলা বা বন্ধ করা যায় না। পানি সরানোর দরকার হলেও তা সরে না।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, পানি উন্নয়ন বোর্ড ঝালকাঠি বিআইপি পোল্ডারের অধীনে সদর উপজেলায় ১১২টি ও নলছিটি উপজেলায় ১০৫টি স্লুইসগেট বসানো হয়। এর মাধ্যমে পানি সংরক্ষণ করে সেচকাজে ব্যবহার করে আবার গেট খুলে পানি ছেড়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এগুলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে।

সম্প্রতি সরেজমিন সদরের মানপাশা, বিনয়কাঠি, কীত্তিপাশা ও পৌর এলাকার বিভিন্ন খালে গিয়ে এই চিত্র দেখা যায়।

মানপাশা এলকার কৃষক লাবু মিয়া বলেন, অকেজো স্লুইসগেটের কারণে খালের পানি প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। অধিকাংশ খালে পলি পড়ে সরু হয়ে যাচ্ছে। পৌরসভার কিফাইতনগর এলাকার জয়নাল খান বলেন, দ্রুত এসব গেট সরিয়ে খাল খনন করে পানি প্রবাহ বাড়াতে হবে। নয়তো এমন এক সময় আসবে, এর কারণে ভরাট হয়ে খাল শুকিয়ে যাবে।

নলছিটি নাচনমহল এলাকার কৃষক জয়নাল হাওলাদার বলেন, এগুলো নব্বই দশক থেকেই অকেজো অবস্থায় আছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম জানান, স্লুইসগেটগুলো অকেজো হওয়ায় অতি জোয়ার ও ভারি বর্ষণে ফসল প্রতি বছরই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার মৌসুমে সেচ কাজেও এগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) মেরামত করার উদ্যোগ নিতে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, অকেজো স্লুইসগেটগুলো অপসারণ বা সংস্কার করা উচিত। বিষয়টি একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অপসারণ বা সংস্কার করতে বড় বাজেট প্রয়োজন। বরাদ্দ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

×