সিলেটে বিএনপির কাউন্সিল ঘিরে নাটকীয়তা চলছে

সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২২ | ১০:২৫ | আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২২ | ১০:২৫
সিলেট জেলা বিএনপির কাউন্সিলে প্রথম দফায় টিকে গেলেও দ্বিতীয় দফা যাচাই-বাছাইয়ে আরও দু'জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। দলীয় কাউন্সিলের চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় নির্বাচন কমিশন তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করে। কাউন্সিলের তপশিল ঘোষণার আগে ভোটার (কাউন্সিলর) তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
ওই দুই নেতা হলেন- সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী কামরুল হাসান শাহীন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী শাকিল মোর্শেদ। জেলা ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহীন এবং শাকিল বর্তমানে জেলা বিএনপির আওতাধীন কোনো উপজেলা বা পৌরসভার কমিটিতে নেই। এর আগে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কের দায়িত্বে থাকায় সাধারণ সম্পাদক পদে আব্দুল আহাদ খান জামালের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল।
শেষ মুহূর্তে সম্মেলন ও কাউন্সিল স্থগিত, অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিধিনিষেধ, দলীয় সিদ্ধান্তে সভাপতি পদে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর সবশেষ আরেক দফা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই মিলে জেলা বিএনপির কাউন্সিল ঘিরে চরম নাটকীয়তা চলছে। শীর্ষ পদে পছন্দের প্রার্থীদের সুবিধা করে দিতেই নতুন নতুন আইনের ফাঁকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সরিয়ে দেওয়ার কৌশল নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই প্রক্রিয়াকে 'সীমিত গণতন্ত্র' হিসেবে আখ্যায়িত করে জেলা বিএনপির এক নেতা সমকালকে বলেন, অবাধ গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলনরত দলের অভ্যন্তরে ব্যক্তি স্বার্থের চর্চা শুভ ফল বয়ে আনবে না। এসব করে শীর্ষ এক নেতার আশীর্বাদপুষ্টদের আবারও গুরুত্বপূর্ণ পদে ফিরিয়ে আনার পথ করা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার রাতে জেলা কাউন্সিলের প্রধান নির্বাচন কমিশনার আব্দুল গাফফারের নেতৃত্বে দ্বিতীয় দফায় মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এতে বাদ পড়ায় হতাশ কামরুল হাসান শাহীন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বিএনপিও চায় রাজপথে সক্রিয় নেতৃত্ব তৈরি করতে। যারা মামলা-হুলিয়ার মধ্যেও আদর্শচ্যুত হননি, এমন নেতৃত্ব আসলে আগামীর আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথ দখলে রাখা সম্ভব। তিনি ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটিতে আছেন জানিয়ে বলেন, তবু মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এর পেছনে ষড়যন্ত্র আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্য চিঠি দিয়েছি। অন্যদিকে শাকিল মোর্শেদ বলেন, দীর্ঘদিন ছাত্রদলের নেতৃত্ব দেওয়ায় মামলা ও কারাবন্দি থাকলেও নির্বাচন পরিচালনা কমিটি আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে। বিএনপির সব পর্যায়ের সঙ্গে জড়িত থাকার পরও এই অবমূল্যায়ন হতাশাজনক।
গত সোমবার সিলেট জেলা বিএনপির বহুল প্রত্যাশিত সম্মেলন ও কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল। তবে রোববার হঠাৎ করে 'অনিবার্য কারণবশত' তা স্থগিত করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের ইন্ধনে কাউন্সিল স্থগিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যুক্তরাজ্যে বসে তিনি কলকাঠি নাড়ছেন বলে সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর অনুসারীরা দাবি করেন। দলের আধিপত্য নিয়ে আরিফের সঙ্গে মুক্তাদিরের বিরোধ রয়েছে। এসব মিলিয়ে 'হাইকমান্ডের নির্দেশে' সভাপতি পদে মেয়র আরিফ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন।
- বিষয় :
- সিলেট জেলা বিএনপি
- বিএনপি
- বিএনপির কাউন্সিল