চট্টগ্রাম চেম্বারের উদ্যোগে মতবিনিময় সভা
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে মিলার, পাইকারী ও খুচরা পর্যায়ে সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখা জরুরি

ছবি: সমকাল
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২২ | ০৫:৩৩ | আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২২ | ০৫:৪৮
চট্টগ্রাম চেম্বারের উদ্যোগে পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ বিষয়ক মতবিনিময় সভা শনিবার দুপুরে নগরের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে মিলার, পাইকারী ও খুচরা পর্যায়ে সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখা জরুরি বলে মন্তব্য করেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম।
চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতির সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফাইন্যান্স) মো. ইকবাল হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আবু রায়হান দোলন, সিএমপি'র উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আবদুল ওয়ারিশ, চেম্বারের সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, চেম্বার পরিচালকবৃন্দ একেএম আক্তার হোসেন, অঞ্জন শেখর দাশ ও মো. রকিবুর রহমান (টুটুল), খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ ছগীর আহমদ, সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, বিএসএম গ্রম্নপ চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী, মীর গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, রিয়াজউদ্দিন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি সালামত আলী, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি সালেহ আহমেদ সুলেমান, আখতারুজ্জামান সেন্টার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, আন্তঃজিলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী জাফর আহমেদ, ক্যাব'র সাধারণ সম্পাদক ইকবাল বাহার সাবেরী, পুলিশ পতাজা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. সায়েম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণে উপস্থিত হতে পারেননি। তবে মন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে সভায় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ মাসুকুর রহমান সিকদার। সভাপতির বক্তব্যে মাহবুবুল আলম বলেন, ‘করোনার অতিমারীর দুই বছর ও সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দ্রব্যমূল্য পৃথিবীব্যাপী বৃদ্ধি পেয়েছে। চীন নতুন করে লকডাউন দেওয়ার কারণে তৈরি পোশাক খাতের অনেক কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এক কোটি মানুষকে টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকিমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য প্রদানে পাঁচ কোটি মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। চট্টগ্রাম চেম্বারও প্রতি বছরের মতো এবারও ভর্তুকিমূল্যে চাল, চিনি ইত্যাদি বিক্রয় করছে। তবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে মিলার, পাইকারী ও খুচরা পর্যায়ে সাপতাই চেইন ঠিক রাখা জরুরি। বাংলাদেশে হাতেগোনা কয়েকটি মাত্র মিল রয়েছে। কাজেই আমদানি উৎসাহিত করতে হবে। টিসিবির মাধ্যমে ফিনিশড প্রোডাক্ট আমদানি করা যায়। এছাড়া ডিউটি স্তর সামঞ্জস্য করা হলে আমদানি বৃদ্ধি পাবে এবং বর্তমান সংকট কেটে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাইকারী ও খুচরা সবক্ষেত্রে ক্রয় ও বিক্রয় মূল্যের তালিকা প্রকাশ এবং উভয়ের মধ্যে দামের পার্থক্য যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা উচিত। এক্ষেত্রে পণ্য পরিবহন নির্বিঘ্ন রাখার লক্ষ্যে ব্যবসায়ী ও প্রশাসনসহ সবাই সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত। ১৩ টন ওজন বাধ্যবাধকতার কারণে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে।'
মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, 'রমজান উপলক্ষ্যে ভোগ্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পূর্ব প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উৎপাদন ও সাপতাই চেইনে ঘাটতিজনিত অস্বস্তিকর বাজার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ভোক্তাসাধারণ যাতে সহনীয় এবং ন্যায্যমূল্যে দ্রব্যমূল্য ক্রয় করতে পারে এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। মুক্তবাজার অর্থনীতির কারণে যে কেউ কোনো পণ্য আমদানি করতে পারে। তবে দেশি পণ্যের সুরক্ষা এবং কর কাঠামোর মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করে দেশের উন্নয়নের জন্যও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে কাজ করতে হয়।'
মো. ইকবাল হোসেন বলেন, 'পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে মহাসড়কে কোনো ধরনের হয়রানি যাতে না হয় সেই লক্ষ্যে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।'