মেম্বারপুত্রের টর্চার সেলে ২ ভাইকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের অভিযোগ

প্রতীকী ছবি
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২২ | ১০:২৪ | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২২ | ১১:১২
বাগেরহাটের মোংলায় এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের (মেম্বার) ছেলের বিরুদ্ধে টর্চার সেলে আটকে রেখে দুই ভাইকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে হামলায় আহত হয়েছেন নারীসহ তিনজন, যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী। স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের কানাইনগর এলাকার এই ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম।
স্থানীয়রা জানান, এলাকায় চিংড়ি ঘের নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে শনিবার সকাল ১০টার দিকে শহরের বাংলাদেশ হোটেলের সামনে থেকে বিনদ সরকার নামে এক ব্যক্তিকে তুলে নেয় পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ডের মেম্বার সুলতান হাওলাদারের ছেলে জাকির ও তার লোকজন। শহরের সিঙ্গাপুর মার্কেট সংলগ্ন একটি কক্ষে আটকে রেখে তার ওপর চালানো হয় নির্যাতন। এক পর্যায়ে হাত-পা বেঁধে টেনে নেওয়া হয় নিজ এলাকা কানাইনগরে পশুর নদীতীরবর্তী গুচ্ছগ্রামে। সেখানেও একটি ঘরে বন্দি রেখে চালানো হয় দফায় দফায় নির্যাতন। চেষ্টা করা হয় মাদক বেচাকেনায় জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি আদায়ের। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বিনদের ছোট ভাই বিপ্লব সরকার। এ সময় তাকেও বন্দি করা হয় মেম্বারপুত্রের টর্চার সেলে। সেখানে তাদের বিবস্ত্র করে কয়েক দফায় বেধড়ক পেটানো হয়।
নির্যাতনে দুই ভাই লুটিয়ে পড়লে তাদের নিজ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামরুলকে ফোন করেন জাকিরের বাবা। সুলতান মেম্বারের ফোন পেয়ে দুপুর ১টার দিকে ভুক্তভোগী বিনদের স্ত্রী বিপাশা ও তার বৃদ্ধ মা গিতা সরকারসহ স্থানীয়দের নিয়ে আটকদের উদ্ধারে যান কামরুল। ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাদের উপস্থিতিতে বিনদ ও বিপ্লবকে আরেক দফা পেটানো হয়। এ সময় বিনোদের স্ত্রী এগিয়ে গেলে তাকেও যৌন হেনস্তাসহ নির্যাতন করা হয়। হৃদয়বিদারক এই ঘটনার সাক্ষী হওয়ায় মারধর করা হয় পথচারী যুবক মানিক ও শুভ নামে দুই বন্ধুকে। আহতদের মধ্যে বিনদ ও বিপ্লবের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘটনার পরই গা-ঢাকা দেয় প্রধান অভিযুক্ত জাকির। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য সুলতান বলেন, এসব তার প্রতিপক্ষের অপপ্রচার। এর সঙ্গে তাদের কেউ জড়িত নয়।
মোংলা থানার ওসি মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম বলেন, দুই ব্যক্তিকে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত করে ইউপি সদস্য সুলতান ও তার ছেলে জাকিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।