আ.লীগ নেতার সেই বক্তব্যের জেরে নির্বাচন স্থগিত, মামলার নির্দেশ

সাদিকুল ইসলাম সাদিক
মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ জুন ২০২২ | ১০:৪৬ | আপডেট: ১২ জুন ২০২২ | ১০:৪৬
নির্বাচনে নৌকায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে আসার নিষেধ করার বক্তব্যের জেরে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে অপর আদেশে নির্বাচন কমিশন বিতর্কিত বক্তব্য প্রদানকারী নেতা সাদিকুল ইসলাম সাদিকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার নির্দেশ দিয়েছেন। স্থগিত করা ইউনিয়ন হলো টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়ন।
রোববার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা-২ এর উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত স্থগিতাদেশ মধুপুর নির্বাচন অফিসে পৌছানোর কথা নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ আলী ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন রিটার্নিং অফিসার করুনা সিন্ধু চাকলাদার।
এর আগে সন্ধ্যায় নৌকার প্রার্থী মো. আব্দুর রহিম তাকে দেয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে। নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে কেন মনোনয়নপত্র বাতিল সংক্রান্ত বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করা হবে না ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব চেয়ে এ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে শনিবার।
জবাব দেওয়ার পরই সচিবালয় থেকে স্থগিত আদেশের কপি ইমেইলে মধুপুর এসে পৌছায়। টাঙ্গাইলের মধুপুরের ৮ ইউনিয়নের অন্যতম অরণখোলা ইউনিয়নে ১৫ জুন নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নত হওয়ায় আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিতব্য অরণখোলা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী তফসিল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।
অপর একটি নির্দেশনায় নির্বাচন কমিশন বিতর্কিত বক্তব্য প্রদানকারী নেতার বিরুদ্ধে নিয়মিত (জিআর) মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন রিটার্নিং অফিসার করুনা সিন্ধু চাকলাদার।
উল্লেখ্য, গত বুধবার বিকালে অরণখোলা ইউনিয়নের আমলীতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মির্জাবাড়ী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাদিক আওয়ামী লীগের নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রহিমের পক্ষে নির্বাচনী সভায় বক্তৃতাকালে ভোট কেন্দ্রে না আসার এ হুমকি দেন। তার এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভাইরাল হয়।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সাদিকুল ইসলাম বক্তৃতায় বলছেন- ‘১৫ তারিখ ভোট হবে সারা দিন এবং নৌকা মার্কায় ভোট হবে। আপনারা ভোট দিবেন। যারা নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন তারাই কেন্দ্রে আসবেন। আর যারা নৌকায় ভোট দিতে নারাজ, দয়া করে কেন্দ্রে আসবেন না। আমরা কিন্তু আশপাশেই অবস্থান করব। এখানে ২৪শ ভোট রয়েছে, যদি দুই হাজার ভোট কাস্ট হয়, আমরা দুই হাজার ভোটই পেতে চাই।’
সাদিকুল ইসলাম বলছেন- ‘যেকোনো মূল্যে নৌকাকে আমাদের বিজয়ী করতে হবে। এজন্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগের সর্বস্তরের নেতারা আমরা প্রত্যেক কেন্দ্রে দুর্গ গড়ে তুলব। যেখানে যা প্রয়োজন আমরা সেটাই ব্যবহার করব।’
উল্লেখ্য, এ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও সাবেক বিএনপি নেতা মো. লস্কর আলী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে অরণখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম মিন্টু আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। দলের নির্দেশে তিনি নির্বাচন থেকে সরে গিয়েছেন। তিনি এখন প্রচার-প্রচারণায় নেই।