‘মাদক ব্যবসার জেরে’ দিনাজপুরে যু্বলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২২ | ০৪:৩০ | আপডেট: ১৪ জুন ২০২২ | ০৪:৩০
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মাজেদুর রহমান (২৪) নামে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ বলছে- মাদক ব্যবসায়ী দুটি গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে মাজেদুরকে হত্যা করা হয়েছে।
এই ঘটনায় নিহতসহ হত্যাকারীদের ফেলে যাওয়া ৫টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে চিরিরবন্দর উপজেলার আমতলী বাজারে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত মাজেদুর রহমান দিনাজপুর সদর উপজেলার ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের ৮নং রেলঘুন্টি এলাকার আজিমুল রহমানের ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি ওই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
চিরিরবন্দর থানার ওসি বজলুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সোমবার রাতে আমতলী বাজারে মাজেদুর রহমানকে ৭-৮জন দুর্বৃত্ত কুপিয়ে জখম করে। কুপানোর সময় স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয় এবং নিজেরাই জোটবদ্ধ হয়ে হামলাকারীদেরকে ধাওয়া দেয়। এ সময় হামলাকারীরা তাদের ব্যবহৃত ৪টি মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা মাজেদুরকে উদ্ধার করে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে ফেলে যাওয়া ৪টি মোটরসাইকেল এবং হামলার শিকার মাজেদুরের একটি মোটরসাইকেলসহ ৫টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে।
ওসি বজলুর রশিদ সমকালকে বলেন, স্থানীয় মাজেদুর রহমান ও হাফিজুর রহমানের দুটি মাদক ব্যবসায়ী গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। নিহত মাজেদুর রহমান হাফিজুর গ্রুপের সহযোগী ছিলেন। মাজেদুর নামে আরও একটি গ্রুপ আছে। তারাই মাজেদুরকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।
তিনি জানান, দুই গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে মাদক চোরাচালানসহ একাধিক মামলা রয়েছে। কদিন আগে হাফিজুর গ্রুপের একজনকে মাদকসহ হাতেনাতে আটক করে বিজিবি।
দিনাজপুর কোতয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান বলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় মাজেদুরের সঙ্গে আরও দুই যুবক ছিল। তাদের পাশাপাশি আরও দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। তাদের দেওয়া থ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে তদন্তের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। মূলত ঘটনাটি তদন্ত করছে চিরিরবন্দর থানা পুলিশ, তবে সহযোগিতা করছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
আসাদুজ্জামান জানান, মাজেদুরের ময়নাতদন্তের পর হত্যা মামলা দায়ের করবে পরিবার।
নিহতের পিতা আজিমুল রহমান বলেন, শান্ত নামে একজন ছেলে আমার বাড়ি থেকে আমার ছেলেকে নিয়ে যায়। সেই তো মেইন। বিভিন্ন জায়গায় ধরে নিয়ে বেড়াইছে। কেন ধরে বেড়াইলো। অবশ্যই সে জানে। বিস্তারিত ঘটনা তো সে বলতে পারবে। কেন নিয়ে গেছে, কোথায় কোথায় ঘুরিয়েছে সেই বলতে পারবে। কোথায় কি হয়েছে, না হয়েছে ওই শান্তই বলতে পারবে।
দিনাজপুর সদর উপজেলার ৪নং শেখপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, রাত দেড়টার দিকে শান্ত নামে যুবলীগের একজন আমাকে ফোন দিয়ে কোপানোর ঘটনা জানায়। কিছুক্ষণ পরে আমাকে ফোন করে জানানো হয় মাজেদুর মারা গেছে। কি কারণে এই ঘটনা ঘটেছে তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। ওই ঘটনার সময় শান্ত সেখানে ছিল।