সরকারি জলাশয়ের মাটি বিক্রির অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় অবৈধভাবে সরকারি জলাশয়ের মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার তোলা ছবি - সমকাল
পাবনা অফিস ও চাটমোহর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২২ | ১২:০০
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় নিয়মবহির্ভূতভাবে সরকারি জলাশয়ের মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে পার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আতিক হাসানের বিরুদ্ধে। প্রায় ২০ লাখ টাকায় সংস্কার করা জলাশয়টি তিন বছরের মাথায় আবারও খনন করায় হতবাক এলাকাবাসী। যদিও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশে এ কাজ করছেন বলে দাবি ওই ইউপি সদস্যের।
জানা যায়, দুই বছর আগে হাটগ্রাম পশ্চিমপাড়া মৎস্য সমবায় সমিতি ছয় বছরের জন্য পার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের হাটগ্রামের তিন একর আয়তনের চন্ডীদুয়ার জলাশয়টি সংশ্নিষ্ট দপ্তর থেকে ইজারা নেয়। মৎস্য চাষ প্রকল্পের আওতায় জলাশয়টি প্রায় ২০ লাখ টাকায় সংস্কার করেন জেলা পরিষদ সদস্য গুলশান আরা পারভীন। তবে সংস্কারের তিন বছরের মাথায় জলাশয় শুকিয়ে মাটি কেটে তা ৫০০ টাকা ট্রলি হিসেবে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য আতিকের বিরুদ্ধে। ওই মাটি ফেলা হচ্ছে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আকবর আলীর বাড়ির সামনের খাল ভরাটে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সংস্কারের অজুহাতে জলাশয়ের মাটি বিক্রি করতে মৎস্য সমিতির সভাপতি আতিক হাসান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। কিন্তু পূর্বের সংস্কারের নির্দিষ্ট মেয়াদ পার না হওয়ায় অনুমতি পাননি তিনি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মৌখিক অনুমতি নিয়ে জলাশয় খনন শুরু করেন।
বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, ওই জলাশয়ে পর্যাপ্ত গভীরতা থাকা সত্ত্বেও ফের চলছে খনন। ১০-১২টি ট্রলিতে পরিবহন করা হচ্ছে মাটি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতে ইউপি সদস্য খননকাজ শুরু করেছেন। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আতিক হাসান বলেন, পুনরায় সংস্কার প্রয়োজন হওয়ায় ইউএনওর অনুমতিসাপেক্ষে মাটি আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ির সামনের খাল ভরাটে দেওয়া হচ্ছে। আর গ্রামের অন্যদের মাটি মানবিক বিবেচনায় বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আকবর আলী বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলে ইউপি সদস্যের কাছ থেকে আমি মাটি নিয়েছি। তবে তাঁকে কোনো টাকা দিইনি।
জেলা পরিষদ সদস্য গুলশান আরা পারভীন বলেন, জলাশয়টি মৎস্য চাষের উপযোগী করতে নির্ধারিত পরিমাণ খনন করা হয়েছিল। তিন বছরের মাথায় আবারও খননে তিনি হতবাক।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, মৎস্য সমিতির সভাপতি খননের অনুমতি চেয়েছিলেন। তবে বিধি মোতাবেক না হওয়ায় অনুমতি দেওয়া হয়নি।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, সংস্কারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তবে মাটি বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাই মাটি বিক্রির অভিযোগ পাওয়ার পরই সংস্কার কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- বিষয় :
- সরকারি জলাশয়
- জলাশয়ের মাটি
- মাটি বিক্রি