রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জাল এনআইডি ও জন্মসনদ তৈরি চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২২ | ০২:১৩ | আপডেট: ২১ জুলাই ২০২২ | ০২:১৩
কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল জাতীয় পরিচয় পত্র ও জন্ম নিবন্ধন তৈরির সরঞ্জামসহ জালিয়াতি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন।
বুধবার বিকেলে উখিয়া লাম্বাশিয়া ক্যাম্পের মো. আবদুল্লাহর বসতঘরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- উখিয়া ক্যাম্প-১ এর মো. ইসলামের ছেলে মো.আবদুল্লাহ (৩৭), মুসা খলিলের ছেলে আবুল খায়ের (১৮), সৈয়দ হোসেনের ছেলে মো. ইসমাইল (৪৫), হাবিবের ছেলে মো. ত্বালহা (৬০) ও তার সহোদর মো. হারুন (৩৬) এবং টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ উত্তর পাড়া এলাকার সৈয়দ হোসেনের ছেলে মো. ইসমাইল (৪৫)।
বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে ৮ এপিবিএন এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কামরান হোসেন । তিনি বলেন গ্রেপ্তাররা প্রত্যেকে জালিয়াতি চক্রের সদস্য।
তিনি জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে একটি জালিয়াতি চক্র দীর্ঘ দিন ধরে নকল জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন সনদ, ও ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোহিঙ্গা আব্দুল্লাহর বসত ঘরে অভিযান চালায় এপিবিএন। এসময় তল্লাশি চালিয়ে জালিয়াতি কাজে ব্যবহৃত চারটি ল্যাপটপ, আটটি স্মার্টফোন, চারটি পেনড্রাইভ, একটি স্ক্যানার, একটি প্রিন্টার,আটাশটি নকল জন্ম নিবন্ধন, এগারোটি জন্ম নিবন্ধন তথ্য যাচাই, ত্রিশটি নকল জন্মসনদ, বিশটি নকল এনআইডি, দুই শ'টি বিভিন্ন ব্যক্তির এনআইডির ফটোকপি, সোনালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকের চেক বই ও জমা দান বই, পাঁচটি সিল, একটি সমবায় সমিতির নিবন্ধন সনদ পত্র, বিশটি শাহপুরী বাস্তহারা আদর্শ গ্রাম সমবায় সমিতি লি. এর সদস্য ফরম ও ৩৫ টি টাকা জমা দেওয়ার পাশ বই উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও মো. আব্দুল্লাহর নামে আটটি ৪নং রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স, জাতীয়তা সনদসহ আরো বিভিন্ন নামের চারটি জাতীয়তা সনদ, রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিহীন সনদ পাঁচটি, ইলেক্ট্রিক বিলের কাগজ, বিভিন্ন ধরণের জায়গা জমির দলিল ও খতিয়ানসহ মো. ইসমাইলের জন্ম সনদ ও আইডি কার্ড, মো. ত্বালহার সিটি কর্পোরেশনের জাতীয় সনদ, জন্ম সনদ এনআইডি (নকল) ও মো. হারুনের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি উদ্ধার করা হয়।
৮ এপিবিএন এর কমান্ডিং অফিসার সিহাব কায়সার খান জানান, সাধারণ রোহিঙ্গারা মূলত বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ব্যবহার করে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ এবং বিদেশে গমনের জন্য পাসপোর্ট তৈরির লক্ষ্যে ওই দালাল চক্রের দ্বারস্থ হয়। এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে নকল বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম নিবন্ধন ও পাসপোর্ট তৈরি করে দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
এপিবিএনের এই কর্মকর্তা আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে এবং চক্রের বাকী সদস্যদের নাম স্বীকার করেছে। তাদেরকে আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে জব্দ করা মালামালসহ গ্রেপ্তারদের উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।