খালে ব্যক্তিগত জলকপাট
অবৈধ বাঁধ কাটতে গিয়ে ডুবে চাষির মৃত্যু
-samakal-62ef5a66108f9.jpg)
গোমস্তাপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিষুক্ষেত্র এলাকায় নির্মানাধীন জলকপাট - সমকাল
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২২ | ০০:২৪
খালে বাঁধ দিয়ে ব্যক্তিগত জলকপাট নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণে ডুবে গেছে জমির রোপা আমন। সেই বাঁধ কাটতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছেন নজরুল ইসলাম নামের এক চাষি। গত শুক্রবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিষুক্ষেত্র এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নজরুলের বাড়ি রাজারামপুর গ্রামে।
জলকপাটটি নির্মাণ করেছেন বেগমনগর গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী নাসিম মাহমুদ। দীর্ঘদিন বিল ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করছেন তিনি। তাঁর ছয়টি বিল ও জলাধার ইজারা নেওয়া আছে।
প্রত্যক্ষদর্শী কৃষক মঞ্জুর আলীর ভাষ্য, বাঁধের কারণে স্থানীয় একটি মসজিদের জমির ধান তলিয়ে গেছে। শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে বাঁধ কেটে জমি থেকে পানি নামাতে যান বাকপ্রতিবন্ধী নজরুল ইসলাম। এ সময় পানিতে পড়ে গেলে স্রোতে জলকপাটের ভেতর দিয়ে অনেক দূরে ছিটকে পড়েন তিনি। পরে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাসিম নাচোল উপজেলার কসবা ইউনিয়নের কালইর মৌজার হাজারদিঘী বিল মাছ চাষের জন্য ইজারা নিয়েছেন। এর কাছে ভিটাবাড়ী খাল দিয়ে এলাকার বৃষ্টির পানি দামুস বিলে পড়ে। খালটির রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পাউবো। প্রায় দুই মাস আগে বিষুক্ষেত্র এলাকায় জলকপাট নির্মাণ শুরু করেন নাসিম। এতে বৃষ্টির পানি নিস্কাশন বন্ধ হয়ে শত শত বিঘা জমির ধান ডুবে যায়। কাজের মাঝপথে স্থানীয়রা বাধা দিলে পুলিশের ভয় দেখিয়ে নির্মাণকাজ প্রায় শেষ করেন। এখন জলকপাট লাগানো বাকি। বিষয়টি জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় তোলেন জনপ্রতিনিধিরা। পরে নাচোল ও গোমস্তাপুরের ইউএনও এবং পাউবোকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অবৈধ বাঁধটি সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেয় প্রশাসন। কিন্তু পুরো বাঁধ অপসারণ করা হয়নি।
গোমস্তাপুরের ইউএনও আসমা খাতুন জানান, ২ আগস্ট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তাঁরা। তখন নির্মাণাধীন জলকপাটের সামনের বাঁধ অপসারণ করে পানিপ্রবাহ অব্যাহত রাখা হয়। ইজারাদারকে অবৈধ জলকপাট ভেঙে ফেলতে বলা হয়েছে। কৃষকের মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জলকপাট নির্মাণের জন্য পাউবোকে দায়ী করে নাসিমের দাবি, বিলের পানি খালের মাধ্যমে বের হয়ে যাওয়ায় তাঁর লাখ লাখ টাকা গচ্চার শঙ্কায় জলকপাট নির্মাণে মৌখিক পরামর্শ দেন সংশ্নিষ্ট কর্তারা।