ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

মদ বেচে কেরুর লাভ শত কোটি টাকা

মদ বেচে কেরুর লাভ শত কোটি টাকা

প্রতীকী ছবি

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২২ | ০৯:২৮ | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২২ | ০৯:৫৩

দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় মদ উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বিদায়ী অর্থবছরে শুধু মদ বিক্রি করেছে ৩৬৭ কোটি টাকার। এতে লাভ হয়েছে ১০০ কোটি টাকার বেশি। বিক্রি এবং লাভ দুটোতেই রেকর্ড গড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কড়াকড়িতে বিদেশ থেকে মদ আমদানি অনেকটাই কমে যাওয়ায় বেড়েছে স্থানীয় মদের চাহিদা।

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড ৮৩ বছরেরও বেশি পুরোনো প্রতিষ্ঠান। আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় ১০ লাখ প্রুফ লিটার বেশি মদ বিক্রি করেছে কেরু। কোম্পানির দেওয়া তথ্য মতে, মদ বিক্রি থেকে গত বছর এই ইউনিট থেকে লাভ ছিল প্রায় ৯০ কোটি টাকা।

এদিকে প্রতিবছরের মতো এবারও চিনি ইউনিটে বড় ধরনের লোকসান হয়েছে কেরুতে। প্রায় ৫০ কোটি টাকা লোকসান দিলেও মদ বিক্রি থেকে মুনাফা বাড়ার কারণে গত অর্থবছরে কোম্পানির নিট মুনাফা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকায়।

কোম্পানির দেওয়া তথ্যে আরও জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে কেরুর মদ বিক্রি অন্য বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদিত মদের চাহিদা বেড়েছে ৩০ শতাংশ। প্রতি মাসে গড়ে ১২ থেকে ১৩ হাজার কেস মদ বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি ১৭৫ মিলিলিটার, ৩৭৫ মিলিলিটার ও ৭৫০ মিলিলিটারের বোতলে মদ বাজারজাত করে থাকে।

কেরুতে রয়েছে ৯ ধরনের মদ। এগুলো হচ্ছে- ইয়েলো লেবেল মল্টেড হুইস্কি, গোল্ড রিবন জিন, ফাইন ব্র্যান্ডি, চেরি ব্র্যান্ডি, ইম্পেরিয়াল হুইস্কি, অরেঞ্জ কুরাকাও, জারিনা ভদকা, রোসা রাম ও ওল্ড রাম।

কেরুতে বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য ১০ লাখ ৮০ হাজার প্রুফ লিটার মদ, ২৬ লাখ লিটার দেশি স্পিরিট ও ৮ লাখ লিটার ডিনেচার্ড স্পিরিট উৎপাদন করা হয়। মদের পাশাপাশি ভিনেগার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সার, চিনি এবং গুড় উৎপাদন করে থাকে রাষ্ট্রায়ত্ত এ কোম্পানি।

কেরুর ডিস্টিলারি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক ফিদাহ হাসান বাদশা বলেন, বর্তমানে এখানে চিনি, ডিস্টিলারি, ফার্মাসিউটিক্যালস, বাণিজ্যিক খামার, আকন্দবাড়িয়া খামার (পরীক্ষামূলক) ও জৈব সার- এই ছয়টি ইউনিট রয়েছে। এর মধ্যে শুধু ডিস্টিলারি ও জৈব সার ইউনিট লাভজনক।

দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন জানান, ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নের জন্য ১০২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে সরকার। প্রকল্পটি শেষ হলে উৎপাদন প্রক্রিয়া পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় করা হবে। উৎপাদন সক্ষমতাও বেড়ে দ্বিগুণ হবে। বর্তমানে সারাদেশে কেরুর ১৩টি ওয়্যারহাউস ও ৩টি বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ইতোমধ্যে দুটি নতুন বিক্রয় কেন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে। বিক্রয় কেন্দ্রগুলো পরিচালনার জন্য পর্যটন করপোরেশনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন

×