স্বর্ণ না পেয়ে শিশুর বিরুদ্ধে মামলায় পদে পদে জালিয়াতি

প্রতীকী ছবি
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ২৩:৩১
স্বর্ণবার হাতিয়ে নিতে না পেরে শিশুর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া পুলিশের দুই এসআই পদে পদে জালিয়াতি করেছেন। বাহরাইন থেকে আনা বৈধ স্বর্ণবারকে অবৈধ দেখিয়ে চোরাচালান মামলা করেন এসআই আনোয়ার হোসেন। মামলা রেকর্ড করার আগে শাহ আমানত বিমানবন্দরে দুটি স্বর্ণবারের শুল্ক্ক পরিশোধের রসিদ দেখালেও তা আমলে নেননি তিনি। স্বর্ণ পরীক্ষার ল্যাবরেটরি রিপোর্ট ঘষামাজা করে তিনি মিথ্যা তথ্য আদালতে দাখিল করেছেন।
কারাগারে যাওয়ার পর শুল্ক্ক পরিশোধের কাগজপত্র আদালতে জমা দিলে শিশুটি এক মাস ছয় দিন পর জামিন পায়। জামিন আদেশে মহানগর দায়রা জজ শুল্ক্ক পরিশোধ করে আইন মেনে দুই স্বর্ণবার আনা হয়েছে উল্লেখ করেন। কিন্তু তিন মাস ৯ দিন পর নিরপরাধ শিশুকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন এসআই সুবীর পাল। সর্বশেষ দুই এসআই আদালতে দেন মিথ্যা সাক্ষ্য। এভাবেই কারসাজি করে শিশুকে চোরাচালান মামলায় ফাঁসিয়ে দেন দুই এসআই। তবে ফেঁসে যাচ্ছেন তাঁরা নিজেরাই।
শিশুর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, চার্জশিট ও সাক্ষ্য দেওয়ার অপরাধে গত মঙ্গলবার দুই এসআইর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালত। শিশু আদালত এবং চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফেরদৌস আরা বাদী হয়ে দুই এসআইর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। অভিযুক্ত এসআই সুবীর পাল পতেঙ্গা থানায়, এসআই আনোয়ার হোসেন শিল্প পুলিশে কর্মরত। ২০১৯ সালে শিশুর বিরুদ্ধে মামলা সাজানোর সময় আনোয়ার হোসেন পতেঙ্গা থানায় কর্মরত ছিলেন।
দুই এসআইর বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে বিচারক ফেরদৌস আরা জানান, ৪ সেপ্টেম্বর শিশুর বিরুদ্ধে মামলার রায় প্রকাশিত হয়েছে। পতেঙ্গা থানা এলাকায় বিমানবন্দর সংলগ্ন রাস্তার ওপর দুটি স্বর্ণের বার আনার অভিযোগে ওই শিশুর বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালান মামলা করেন এসআই আনোয়ার হোসেন। এই মামলার রায়ে আদালত উল্লেখ করেছেন, অভিযুক্ত শিশুর নিকটাত্মীয় এএইচএম সুমন শুল্ক্কবিহীন দুটি স্বর্ণের বার বাহরাইন থেকে আনেন।
বিমানবন্দরে ব্যাগেজ পরিদর্শক তা আটক করেন। পরে সুমন বিধি অনুযায়ী শুল্ক্ক পরিশোধ করে বার দুটি নিজ হেফাজতে নিয়ে ওই শিশুর কাছে হস্তান্তর করেন। শিশুর স্বর্ণের বার বহনের বিষয়ে সোর্সের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ শিশুকে আটক করে পতেঙ্গা থানায় নেয়। স্বর্ণের বার দুটির একটি দাবি করে শিশুকে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয় পুলিশ। শিশুর মা জব্দ করা স্বর্ণের বারের বৈধ কাগজপত্র দেখালেও পুলিশের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মামলাটি দাখিল করা হয়।
- বিষয় :
- পুলিশ
- স্বর্ণবার
- মিথ্যা মামলা
- এসআই
- এসআই সুবীর পাল