কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়
নিরাপত্তাহীনতায় মেসের ছাত্রীরা, ঘটছে যৌন হয়রানি

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১০:১১ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১০:৩৯
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ পেয়েছেন আবাসন সুবিধা। বাকিরা ময়মনসিংহ শহর, ত্রিশাল বাজার এলাকাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের মেসে বসবাস করেন। তবে মেসে বসবাসকারী নারী শিক্ষার্থীরা যৌন হয়রানিসহ নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাঁদের মেসে চুরির ঘটনাও ঘটে অহরহ। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তাঁরা।
দিনে পনেরো আগে গভীর রাতে মেসের এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে এক বখাটে। মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের ছাত্রীরা জড়ো হলে বখাটে পালিয়ে যায়। শনিবার রাতে ত্রিশাল থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। রোববার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন একটি ছাত্রী নিবাসে বসবাস করেন চারুকলা বিভাগের ওই শিক্ষার্থী। বখাটের লাঠির আঘাতে আহত হন ওই শিক্ষার্থী। চিকিৎসা নিতে হয় তাঁকে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে অবগত করলে পরদিন শিক্ষার্থীকে নিয়ে ত্রিশাল থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
ওই ঘটনার কোনো ক্লু না থাকলেও উত্ত্যক্তকারীকে ধরতে তৎপর হয়ে ওঠে ত্রিশাল থানা পুলিশ। টানা ১৫ দিন নানাভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে চিহ্নিত করা হয় আসামিকে। শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে ত্রিশাল বাজার থেকে আটক করা হয় বখাটে বাছির মিয়াকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সবকিছু স্বীকার করে সে। বিভিন্ন মেসের নারী শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করার কথাও জানায় সে।
জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা জানান, এ ধরনের ক্লুলেস ঘটনা শনাক্ত অনেক কঠিন হলেও আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এখন থেকে নিয়মিত অভিযান চালাবে পুলিশ।
পুলিশ রোববার বাছিরকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় আদালতে পাঠিয়েছে। সে ত্রিশাল সদর ইউনিয়নের পাঁচপাড়া গ্রামের রমজান আলীর ছেলে।
বিভিন্ন মেসে থাকা শিক্ষার্থীরা জানান, এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। জানালার পাশে বসে মেয়েরা পড়াশোনা করলে বাইরে থেকে তাঁদের অনেক সময় উত্ত্যক্ত ও বাজে মন্তব্য করে বখাটেরা। এ ছাড়া মেস থেকে অহরহই জানালা ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটে। আশপাশের মাদকসেবীরা এ ধরনের ঘটনা ঘটায় বলে জানান তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর উজ্জল কুমার জানান, এ ধরনের ঘটনা মেসগুলোতে ঘটে বলে অভিযোগ আসে। অভিযোগ পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি বলেন, 'ক্যাম্পাসের বাইরে থাকা শিক্ষার্থীদের আমরা পুরোপুরি নিরাপত্তা না দিতে পারলেও সার্বক্ষণিক তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করি।'