১৯ বছর অকার্যকর বাস টার্মিনাল

নড়াইল বাস টার্মিনালে এক্সক্যাভেটর ও ট্রাক রাখা হয় -সমকাল
নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২২ | ১২:০০
নড়াইল শহরে ১৯ বছর আগে নির্মিত বাস টার্মিনালটি অকার্যকর। বাস ঢুকছে শহরে। যত্রতত্র পার্কিং, সরু সড়ক, নিয়ন্ত্রণহীন ইজিবাইক। এতে শহরে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসীসহ যাত্রীরা। বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। অভিযোগ রয়েছে, বাস মালিক সমিতির উদাসীনতায় বাস টার্মিনালে না গিয়ে শহরের ভেতর দিয়ে চলাচল করছে।
এদিকে এ মাসেই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসীর বহুল প্রতীক্ষিত কালনা (মধুমতী) সেতু চালু হওয়ার কথা। সেতুটি ব্যবহার করতে শহরের ভেতরের এ সড়ক দিয়েও চলবে অনেক যানবাহন। সেতুটি চালু হলে গাড়ির চাপও বেড়ে যাবে।
নড়াইল-যশোর সড়কে মৎস্য অফিসের পাশে ২০০৩ সালে ১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস টার্মিনাল নির্মিত হয়। শুরুতে এখান থেকে বিভিন্ন রুটে গাড়ি চলাচল করলেও বছর খানেক পর তা বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে নড়াইল-যশোর, খুলনা, মাগুরা ও মাইজপাড়া সড়কের গাড়িগুলো জেলা আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে থেকে, নড়াইল-কালিয়া সড়কের গাড়ি নড়াইল-পৌরসভা ও মালিবাগ এবং নড়াইল-শংকরপাশা ও নড়াইল-লোহাগড়া রুটের বাস রূপগঞ্জের তেঁতুলতলা মোড় থেকে যাত্রী ওঠানামা করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টার্মিনালের মূল ভবনের বিভিন্ন দেয়ালে ফাটল ধরেছে। অনেক জানালার কাঁচ ভেঙে গেছে। দীর্ঘদিন রং না করায় ভবনটি এখন বিবর্ণ। গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানে ছোট-বড় গর্ত হয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে ভবনের জানালা-দরজা, টয়লেট, নিরাপত্তা বাতিসহ বিভিন্ন লাইট পোস্ট। টার্মিনালে সার্বক্ষণিক থাকে ২০-২৫টি এক্সক্যাভেটর, বাস ও ট্রাক। এখানে অন্তত ১৬টি গাড়ি মেরামতের গ্যারেজ গড়ে উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, এখানে অনেক শ্রমিক জুয়া খেলে এবং মাদক সেবন করে থাকে।
বাসচালক আকমল হোসেন বলেন, বাস মালিক সমিতি অনুমতি দিলে বাস টার্মিনালে যেতে কোনো আপত্তি নেই।
নড়াইল সিটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মাহবুবুর রহমান লিটু বলেন, অসহনীয় যানজটের কারণে শহরে ১০ মিনিটের পথ যেতে সময় লাগে কমপক্ষে ২০ মিনিট। বাস টার্মিনালটি চালু হলে এ সমস্যা কমত। তবে শহরের মধ্যে একটি বাইপাস সড়কও প্রয়োজন।
অতিরিক্ত পিপি আলমগীর সিদ্দিকী বলেন, বাস মালিক সমিতি অতিরিক্ত লাভের জন্য শহরে গাড়ি ঢোকাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলছে ইজিবাইক। এ সড়কের পার্শ্বে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ থাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থা আরও জোরদার জরুরি। বাস টার্মিনাল চালু ও সড়কটি চার লেন হলে সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করেন তিনি।
জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী জহিরুল হক দাবি করেন, বাইপাস সড়ক না থাকায় নড়াইল-মাইজপাড়া, মাগুরা ও কালিয়া সড়কে বাস নিয়ে যেতে গেলে শহরের মধ্য দিয়েই প্রবেশ করতে হবে। ফলে যানজটও বাড়বে। প্রতিটি সড়কের সঙ্গে টার্মিনালের সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকুক।
পৌর মেয়র আনজুমান আরা বলেন, পৌরসভার প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এটি সংস্কার করা হবে। দুই সপ্তাহের মধ্যে কাজের টেন্ডার দেওয়া হবে। সংস্কারের পর এখান থেকে সব এক্সক্যাভেটর, ট্রাক, গাড়ির গ্যারেজ অপসারণ করে নতুনভাবে টার্মিনাল চালু করা হবে।
পুলিশ সুপার সাদিরা ইসলাম বলেন, 'বাস টার্মিনাল ব্যবহার ও যানজট নিরসনে মেয়রের সঙ্গে কথা হয়েছে।'
- বিষয় :
- নড়াইল
- বাস টার্মিনাল