ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

নিজ গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত শান্তিরক্ষী জাহাঙ্গীর

নিজ গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত শান্তিরক্ষী জাহাঙ্গীর

ছবি: সমকাল

ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২২ | ০৬:৫৪ | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ | ০৬:৫৪

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে বোমা বিস্ফোরণে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত নিহত শান্তিরক্ষী জাহাঙ্গীর আলমের মরদেহ নিজ গ্রাম নীলফামারীর ডিমলার দক্ষিণ তিতপাড়ায় পৌঁছেছে। 

শনিবার সকাল ১১টা ১০ মিনিটে ডিমলা রাণী বৃন্দারাণী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাহাঙ্গীরের মরদেহ নিয়ে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার অবতরণ করে।

পরে এম্বুলেন্স যোগে তার মরদেহ গ্রামে পৌঁছামাত্র এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

এ সময় লাশের কফিন জড়িয়ে জাহাঙ্গীরের বাবা লতিফর রহমান, মা গোলেনুর বেগম, স্ত্রী শিমু আক্তার, বড় ভাই সেনাসদস্য আবুজার রহমান, পরিবারের সদস্য, স্বজন ও আশপাশ থেকে আসা পাড়া প্রতিবেশিরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন। ভারি হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ। জাহাঙ্গীরকে একনজর দেখার জন্য ডিমলা রাণী বৃন্দারাণী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ ও তার বাড়িতে আগে থেকেই জড়ো হন কয়েক হাজার মানুষ।

এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার বাবা ও মাকে শান্তনা দেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

দক্ষিণ তিতপাড়া জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার ও নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বিউগলে বেজে উঠে করুণ সুর। দুপুর ১টায় পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় তাকে।

এর আগে শুক্রবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিকেল পৌঁনে ৬টায় তিন শান্তিরক্ষীর মরদেহ এসে পৌঁছায়।

জাহাঙ্গীর আলম ডিমলা উপজেলার দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামের লতিফর রহমানের ছেলে। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন চতুর্থ। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন জাহাঙ্গীর। ২০২১ সালে ১২ ডিসেম্বর সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের ব্যানব্যাট-৮ এলাকার উইক্যাম্পে শান্তিরক্ষা মিশনে যান তিনি।

স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার বলেন, শহীদ জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুতে আমরা যেমন শোকাহত তেমনি তার মৃত্যু আমাদের জন্য গর্বের। দেশে জন্য সে জীবন দিয়েছে সে আমাদের দেশের গর্বিত সন্তান। জাহাঙ্গীরের বাড়ির সামনের সড়কটি 'শহীদ জাহাঙ্গীর সড়ক' ঘোষণা করা হলো। কাঁচা সড়কটি দ্রুত পাকা করা হবে।

গত ৩ অক্টোবর স্থানীয় সময় রাত সাড়ে আটটায় সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের কার্যক্রম পরিচালনার সময় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের একটি বহর টহল থেকে ফেরার সময় পথে ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসের (আইইডি) বিস্ফোরণ ঘটে। এতে বহরের প্রথম গাড়িটি আক্রান্ত হয়। সেটি ছিটকে ১৫ ফুট দূরে গিয়ে পড়ে। এতে তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত ও একজন আহত হন।

আরও পড়ুন

×