হঠাৎ কেন সরব সাকা পরিবার

ফাইল ছবি
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২২ | ০৩:৫৪
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, যিনি সবার কাছে সাকা চৌধুরী নামে বেশি পরিচিত। ২০১৫ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড হওয়ার সময়ও তিনি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চট্টগ্রামের রাজনীতিতে দোর্দণ্ড প্রতাপও ছিল তাঁর। কারণ, যতবার সংসদ নির্বাচন করেছেন ততবার কোনো না কোনো আসনে বিজয়ী হয়েছেন সাকা চৌধুরী। রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও ফটিকছড়ির তিনটি আসন থেকে ঘুরেফিরে ছয়বার জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার অনন্য এক রেকর্ডও ছিল তাঁর। কিন্তু সাকার মৃত্যুদণ্ডের পর রাজনীতি থেকে বিদায়ঘণ্টা বাজতে থাকে তাঁদের পরিবারের।
দেশ ছেড়ে পরিবারের সব সদস্য পাড়িও জমান বিদেশে। সেখানে থেকেই ২০১৮ সালের সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ার দুটি আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন চান সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর স্ত্রী ফরহাত কাদের ও তাঁর সন্তান হুম্মাম কাদের চৌধুরী। কিন্তু দু'জনের কাউকেই মনোনয়ন দেয়নি বিএনপি। এবার তাই নতুন বার্তা নিয়ে আগেভাগেই ভোটের মাঠে নেমেছে সাকার পরিবার। নিজেকে আলোচনায় রাখতে সাকার ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী নিয়েছেন ভিন্নরকম এক কৌশলও। সম্প্রতি সপরিবারে তাঁরা গেছেন রাঙ্গুনিয়ার নির্বাচন কমিশন অফিসে। সেখানে গিয়ে নিজেদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে যাবতীয় প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করে ফের উড়াল দিয়েছেন তাঁরা লন্ডনে।
দলে নিচের অবস্থানটা পোক্ত করতে বাবা সাকা চৌধুরীর বিষয়টি সামনে আনছেন হুম্মাম কাদের চৌধুরী। বক্তব্য শুরু এবং শেষ করছেন বাবার স্মৃতিচারণ করে। চট্টগ্রামের সমাবেশে নতুন একটি বার্তাও দিয়েছেন তিনি। যুদ্ধাপরাধীদের 'শহীদ' বলে আখ্যায়িত করেছেন। সরকারকে উদ্দেশ করে হুম্মাম কাদের বলেন, 'এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বলে দিতে চাই, ক্ষমতা ছাড়ার পর একা বাড়িতে যেতে পারবেন না। প্রত্যেকটা শহীদের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করব।' এরপর বাবার প্রসঙ্গ টেনে 'নারায়ে তাকবির :আল্লাহু আকবর' বলে স্লোগানও ধরেন তিনি।
তাঁর এমন বক্তব্যের পর উঠেছে সমালোচনার ঝড়। বিএনপিরই একটি অংশ তার এমন বক্তব্যে বিব্রতবোধ করে। আবার মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তানরা এতে দেখছেন রাষ্ট্রদ্রোহের মতো অপরাধ। সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীর সন্তানকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। আজ শনিবার সাকা চৌধুরীর বাসভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তানরা। সাকা পরিবার প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে পাল্টা বক্তব্য দিয়েছেন তাঁরা।
বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করলেও সাকা পরিবারের কেউ এসব ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি। সাকা পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শওকত আলী নূর বলেন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও ফটিকছড়িতে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও তাঁর পরিবারের স্বতন্ত্র একটি ইমেজ রয়েছে। তবে দ্বিমত পোষণ করে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন বাহার বলেন, '১২ বছর ধরে হামলা-মামলা মোকাবিলা করে বিএনপির হাল ধরে রেখেছি আমরা। রাঙ্গুনিয়াতে সাকা পরিবারের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই এখন।