ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

ভাইকে ফাঁসাতে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রীকে হত্যা

ভাইকে ফাঁসাতে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রীকে হত্যা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০১৯ | ০৬:৫৭

ঋণ থেকে মুক্ত হওয়া ও বড় ভাইকে হত্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য মাদকাসক্ত ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ বিলের কচুরি পানার নিচে রাখা হয়। আদালতে এমন রোমহর্ষক তথ্য দিলেন মির্জাপুর উপজেলার আজগানা পূর্বপাড়া গ্রামের আলাল উদ্দিন। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি টাঙ্গাইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুল ইসলাম তার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। 

ওই হত্যার ঘটনায় আলাল উদ্দিনের বড় ছেলে মাদকাসক্ত শরিফুল ইসলাম ও নিহতের বড় ভাই  আব্দুল মোতালেবের ছেলে স্বপন মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে প্রেস ব্রিফিং এ হত্যার সঙ্গে নিহতের স্বামী, ছেলে ও তার ভাইয়ের ছেলে জড়িত থাকার কথা জানান পুলিশ সুপার রঞ্জিত কুমার রায়। 

গত ১৪ অক্টোবর সোমবার মির্জাপুর উপজেলার আজগানা এলাকার আউলিয়াবাদ এলাকায় বিল থেকে সুফিয়া বেগম নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন নিহতের ভাই মেছের আলী বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশের বিভিন্ন সোর্স এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে নিহতের স্বামী আলাল উদ্দিন, ছেলে শরিফুল ইসলাম এবং নিহত ওই নারীর ভাইয়ের ছেলে স্বপন মিয়াকে কালিয়াকৈর উপজেলার মাটি কাটা থেকে আটক করা হয়। 

তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, আলাল উদ্দিনের সঙ্গে বড় ভাই মিনহাজ উদ্দিনের দীর্ঘদিন ধরে জমিসংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধ চলে আসছে। এছাড়াও তার স্ত্রী বিভিন্ন এনজিও থেকে লাখ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। যা পরিশোধ করা তার পক্ষে সম্ভব ছিলো না। তখন তিনি ফন্দি আটতে থাকেন কিভাবে দুটো থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এরপর স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পপনা করেন, যাতে ঋণ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এবং বড় ভাইকেও হত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া যাবে। এতে এক ঢিলে দুই পাখি শিকার হবে। তাই তিনি পরিকল্পনামত মাদকাসক্ত বড় ছেলে শরিফুল ও  স্ত্রীর ভাইয়ের ছেলে স্বপনকে সঙ্গে নিয়ে গত ১৪ অক্টোরব ভোরে সুফিয়া আক্তারকে বাড়ির পাশে আউলিয়া বিলে নিয়ে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে লাশ কচুরি পানার নিচে রেখে দেন।   

টঙ্গাইলের পুলিশ সুপার রঞ্জিত কুমার রায় বলেন, হত্যার দুইদিনের মধ্যে আমরা রহস্য উদঘাটন করে মূল হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। হত্যার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে অতি দ্রুত এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করা হবে। 

আরও পড়ুন

×