ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

বাড়ি ফিরল বৃক্ষশিশু রিপন

বাড়ি ফিরল বৃক্ষশিশু রিপন

ছবি: ফাইল

পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৯:৫১ | আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ | ১০:৩০

দেশে দ্বিতীয় বৃক্ষমানব হিসেবে পরিচিত ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের রিপন ১ মাস ৮ দিন ঢাকায় চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরেছে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে মঙ্গলবার তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বুধবার সে বাড়িতে ফিরেছে। তাকে দেখতে প্রতিবেশী ও স্বজনরা বাড়িতে ভিড় জমায়।

বাবা মহেন্দ্র দাস জানান, তার চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল। জুতা সেলাই করে এ ব্যয়ভার বহন করা তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। প্রশাসন, জয়বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী সামাজিক সংগঠন আইপজেটিভের সদস্য ও স্থানীয় বিত্তবানদের সহায়তার কারণে রিপনের চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়েছে। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। রিপনের আরও একটি অস্ত্রোপচার করতে হবে বলে জানান তিনি।

আইপজেটিভের প্রতিষ্ঠাতা শফিক পারভেজ পরাগ বলেন, অপারেশনের সময় রক্তসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দিয়ে অনেকেই সহযোগিতা করেছেন। আমরাও তার পাশে থাকতে পেরে খুশি। তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্ব্বয়ক ডা. সামন্ত লাল জানান, রিপন এপিডার্মোডিসপ্লাসিয়া ভেরাসিফরমিস নামের বিরল রোগে আক্রান্ত। এখন তার অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। এক মাস পর আরও একটি সার্জারি করাতে হবে। তার চিকিৎসাও দীর্ঘমেয়াদি এবং ব্যয়বহুল। বিত্তবানরা এগিয়ে না এলে তার বাবা-মায়ের পক্ষে এ ব্যয় বহন করা কষ্টকর হবে।

রিপনের বাড়ি জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার কেউটগাঁও গ্রামে। বাবা মহেন্দ্র দাস জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন। মা গোলাপী রানী দাস গৃহিণী। পরিবারের তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট রিপন। ২০১৬ সালে কেউটগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় এ রোগে আক্রান্ত হয় সে। ওই সময় সমকালসহ বিভিন্ন পত্রিকায় তাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। সহায়তায় এগিয়ে আসেন অনেকে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে ২০১৭ সালে তিন দফা অপারেশন হয়। এর পর কিছুটা সুস্থ হলেও করোনার কারণে চিকিৎসা বন্ধ ছিল তার। এরই মধ্যে ফের হাতে-পায়ে শিকড় গজাতে শুরু করে। অক্টোবরে হঠাৎ রিপনের শরীরের চামড়া কালো হয়ে হাতে-পায়ে বড় বড় শিকড় গজাতে শুরু করে। গত ৩ নভেম্বর পীরগঞ্জের সামাজিক সংগঠন আইপজেটিভ, প্রশাসন ও স্থানীয় বিত্তবানদের সহযোগিতায় ঢাকায় নিয়ে তার চিকিৎসা করানো হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে গত ২০ ডিসেম্বর তার শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়। এখন তার চামড়া, হাত ও পায়ের আকৃতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে রিপন।

আরও পড়ুন

×