খুলনায় সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির অভিযোগ
ডিসেম্বরে ৮৩৫ নেতাকর্মীর নামে ১৪ গায়েবি মামলা

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা - সমকাল
খুলনা ব্যুরো
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৭:৪১ | আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৭:৪৩
খুলনায় চলতি ডিসেম্বরের প্রথম তিন সপ্তাহে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৮৩৫ নেতাকর্মীর নামে ১৪টি গায়েবি মামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের নেতারা। তাঁরা বলেন, এসব মামলায় কারাগারে আছেন ৮৯ জন। আসামিদের মধ্যে ১১০ জন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন। এ ছাড়া খুলনার আদালত থেকে ৩১ জন জামিন পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার নগরীর কে ডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা।
তিনি বলেন, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের নির্দেশে পুলিশ বাহিনী ডিসেম্বর মাসের প্রথম থেকে আকস্মিকভাবে বিশেষ অভিযান শুরু করে। বিজয় দিবসকে সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলার নামে অভিযান চালানো হলেও প্রকৃতপক্ষে ধরপাকড় করা হয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীকে। করা হয়েছে গায়েবি, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, অবাস্তব ও কল্পনাপ্রসূত অভিযোগে মামলা। শুধু মহানগর পুলিশই দিয়েছে আটটি মামলা। এর মধ্যে সদর থানার মামলায় ৮০, সোনাডাঙ্গায় ৬০, খালিশপুরে ৫৫, দৌলতপুরে ৪৫, খানজাহান আলীতে ৩০, আড়ংঘাটায় ৫০, হরিণটানায় ৪৫ এবং লবণচরা থানার মামলায় ৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
জেলার পাইকগাছা থানার মামলায় ৭০, বটিয়াঘাটায় ৮০, ডুমুরিয়ার দুটিতে ১৩৫ এবং রূপসা থানার দুটি মামলায় ১০৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকায় বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়ে খুলনার ১০ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পাইকগাছার চার, ডুমুরিয়ার দুই, দাকোপের দুই এবং মহানগর যুবদলের দু'জন রয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের করা মামলার এজাহার পড়লে বোঝা যায়, সব মামলাই হয়েছে অভিন্ন অভিযোগে। এজাহারে নাশকতা ও সহিংসতা সৃষ্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ককটেল, রড, লাঠি ও ইট দিয়ে হামলার পরিকল্পনা করার কথা বলা হয়েছে। কোনোটিতে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় গিয়ে নাশকতা সৃষ্টি করে সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে গোপন বৈঠক করছিল- এমন অভিযোগ করা হয়েছে। অত্যন্ত দুর্বল, হাস্যকর ও বাস্তবতাবিবর্জিত এসব এজাহার নামের স্ট্ক্রিপ্টকে আমরা চ্যালেঞ্জ করছি। এসব অভিযোগের প্রমাণ পুলিশ দিতে পারবে না। কারণ সব অভিযোগই মিথ্যা ও সাজানো। ককটেল ফাটিয়ে স্থাপনা ধ্বংসের চেষ্টার কথা বলা হলেও কেউ কোনো শব্দই শুনল না।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিয়ে রাজনীতি চর্চা করছি এবং এ তৎপরতা অব্যাহত রাখতে চাই। আর সেজন্য প্রজাতন্ত্রের সেবক পুলিশ প্রশাসন, যাদের বেতন ও ভরণপোষণ হয় জনগণের অর্থে, তাদের যথাযথ দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করি। একই সঙ্গে গত তিন সপ্তাহে যেসব ভিত্তিহীন গায়েবি মামলা করা হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহার এবং কারাবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম তুহিন, বিএনপি নেতা আবু হোসেন বাবু, স ম আবদুর রহমান, সৈয়দা রেহানা ঈসা, কাজী মাহমুদ আলী, শেখ সাদী, শফিকুল ইসলাম হোসেন প্রমুখ।