তামার বারকে সোনার বার ভেবে লোভে পড়ে গহনা খোয়ালেন গৃহবধূ

প্রতীকী ছবি
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ | ১৩:৫৮ | আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ | ১৩:৫৮
লক্ষ্মীপুরে নকল স্বর্ণের (তামার) বার দেখিয়ে এক গৃহবধূর আসল স্বর্ণের গহনা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। সদর উপজেলায় পশ্চিম মান্দারী গ্রামে বাবাবাড়ি সড়কে এ ঘটনা ঘটে। পরে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের দুই সদস্য আবদুস শহিদ ও মো. মাকসুদকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক মাকসুদ উপজেলার পশ্চিম মান্দারী গ্রামের নুর আলমের ছেলে ও আবদুস শহিদ লাহারকান্দি ইউনিয়নের চাঁদখালী গ্রামের গোফরান মিয়ার ছেলে। শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ খাদিজা বেগম জানান, সকালে পশ্চিম মান্দারী গ্রামে বাবাবাড়ি সড়ক থেকে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে বের হন তিনি। এ সময় মাকসুদের সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন তাঁরা। অটোরিকশায় মাকসুদ ছাড়া আরও দু'জন ছিল। লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের ভবানীগঞ্জ চৌরাস্তা এলাকায় গেলে হঠাৎ অটোরিকশা বন্ধ হয়ে যায়। ভেতরে থাকা ১৫ বছরের এক কিশোর রাস্তায় নামতেই একটি স্বর্ণের বার পায়। সেখানে একটি মেমোসহ চিরকুট ছিল। চিরকুটটি পড়ার জন্য তাঁকে দেওয়া হয়। পড়ে তাঁর ধারণা হয়, গহনা বানানোর উদ্দেশ্যে কেউ একজন স্বর্ণবারটি একটি স্বর্ণকারের দোকানে নেওয়ার সময় পড়ে যায়।
খাদিজা আরও জানান, এর পর স্বর্ণের বারটি কেনার জন্য বিভিন্নভাবে তাঁকে বোঝানো হয়। তাঁর কাছে কেনার মতো নগদ টাকা নেই বললেও তাদের পীড়াপীড়িতে এক পর্যায়ে তিনি ফাঁদে পড়েন। স্বর্ণবারটি হাতে দিয়ে তাঁর কানের দুল ও গলার চেইন নিয়ে প্রতারক চক্র অটোরিকশা নিয়ে সটকে পড়ে। পরদিন স্থানীয় একটি স্বর্ণকারের দোকানে গেলে জানা যায়, বারটি তামার। এর পরই খাদিজা তার ভাইসহ পুলিশকে বিষয়টি জানান।
ভুক্তভোগীর ভাই আবদুর রহমান বলেন, 'আমাদের বাড়ির পাশেই প্রতারক চক্রের লোকজনের অবস্থান। খাদিজার থেকে ঘটনাটি শোনার পর বিষয়টি আমি আঁচ করতে পারি। পরে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মাকসুদ ও শহিদ বিষয়টি স্বীকার করে।'
মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য মনির পাটোয়ারী, স্থানীয় বাসিন্দা মফিজ উল্যা পাটোয়ারী ও প্রকৌশলী ইমরান হোসেন রাশেদ জানান, মাকসুদ ও শহিদ মলম পার্টির মতো একটি প্রতারক চক্রের মূল হোতা। তাদের কাজই প্রতারণা করে মানুষের স্বর্ণ ও টাকা লুটে নেওয়া। বিশেষ করে প্রবাসীদের স্ত্রীদের বেশি টার্গেট করে তারা।
অভিযুক্ত মাকসুদ ও শহিদ জানায়, ওই গৃহবধূকে স্বর্ণের গহনার পরিবর্তে টাকা ফেরত দেবে বলে জানিয়েছে। এরই মধ্যে ৪০ হাজার টাকা তারা ফেরত দিয়েছে। বাকি টাকা শিগগির দিয়ে দেবে।
মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটোয়ারী বলেন, ঘটনাটি তাঁকে জানানো হয়। তিনি ভুক্তভোগীদের আইনগত সহায়তা নেওয়ার জন্য বলেছিলেন। পরে ভুক্তভোগীরা পুলিশের সহযোগিতা নিয়েছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহেল রানা বলেন, ভুক্তভোগীকে এ ব্যাপারে সহায়তা করা হচ্ছে।