সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ
শিবগঞ্জে উল্টো হয়রানির শিকার ভুক্তভোগী

ছবি: সংগৃহীত
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৩ | ২২:৫৭
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার ইউসূফ আলী ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে চরিত্র হননসহ বিভিন্ন হয়রানির অভিযোগ করেছেন সলেনুর বেগম নামে এক ভুক্তভোগী। সদর উপজেলার নামোসংকরবাটি গ্রামের এই নারী বলেন, হামলার শিকার হওয়ার পর থেকে ইউসূফ আলী ও তাঁর লোকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে তাঁকে জড়িয়ে নানা ধরনের আপত্তিকর পোস্ট দিচ্ছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি নিজ কার্যালয়ে হামলার শিকার হন সাব-রেজিস্ট্রার ইউসূফ আলী। এর পর থেকে এ ঘটনার সঙ্গে সলেনুর বেগম ও ইউএনও আবুল হায়াতকে জড়িয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ইউসূফের স্ত্রী ওয়ারিনা বরকত খোদা, তাঁর অনুগত দৌলত ই খোদা 'অনন্দি ইউসূফ', 'দৌলত ই খোদা'সহ একাধিক ফেসবুক আইডি থেকে নানা আপত্তিকর পোস্ট দিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে শিবগঞ্জের সাধারণ মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে ইউএনও আবুল হায়াত জানান, তিনি সলেনুর বেগমের সমস্যা সমাধানে সুপারিশ করেছিলেন। এজন্য সাব-রেজিস্ট্রারকে মারধরের সময় ঘটনাস্থলে না থাকলেও তাঁকে জড়ানো হচ্ছে। চরিত্র হননের চেষ্টা করছে, যা সাইবার অপরাধের মধ্যে পড়ে। হামলার ফুটেজ পাওয়া গেছে। এটির পাশাপাশি সাব-রেজিস্ট্রার ইউসূফের অনিয়ম-দুর্নীতির সঠিক তদন্তের দাবি জানান তিনি।
সলেনুর বেগমের ভগ্নিপতি তালেব আলী ছিলেন শিবগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মোহরার। অবসর ও মৃত্যুর পর তাঁর পেনশনের অর্থ তুলতেন স্ত্রী। কিন্তু ১৫ বছর বয়সী মেয়ে ফারায়া ইয়াসমিন তমাকে রেখে দেড় বছর আগে তাঁর মৃত্যু হয়। এর পর থেকে ভাগনি তমার দেখাশোনা করে আসছেন সদর উপজেলার সলেনুর। কিন্তু তমাকে নিয়ে পেনশনের টাকা তুলতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন তিনি। এক পর্যায়ে বিষয়টি শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াতকে জানান। কিন্তু নিজ কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় এ দু'জনকে দায়ী করে সাব-রেজিস্ট্রার ইউসূফ ও তাঁর লোকজন নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ইউসূফ বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন।
এদিকে ইউসূফ আলী উৎকোচ ছাড়া দলিলে স্বাক্ষর করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি গোরস্থান, মসজিদের জমি পর্যন্ত রেজিস্ট্রি করতে টাকা নেন তিনি। দাদনচক গোরস্তান কমিটির সভাপতি আবু আহম্মেদ মুক্তা জানান, গোরস্তানের জমি নিবন্ধন করতে গেলে ৮০ হাজার টাকা দাবি করেন ইউসূফ। পরে এক বিচারপতির কলে সেটি ৭ হাজার টাকায় নিবন্ধন করা হয়।
উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলি বেগম জানান, শ্বশুরের জমির দলিল করাতে গিয়ে তাঁকেও সাব-রেজিস্ট্রারকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। জমির দলিল করাতে গিয়ে সাব-রেজিস্ট্রারকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন নবজাতক ও শিশু বিশেষজ্ঞ মাহফুজ রায়হান।
অভিযোগের বিষয়ে একাধিকবার কল দিলেও ইউসূফ আলীর মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তাঁর স্ত্রী ওয়ারিনা বরকত খোদা সমকালকে বলেন, 'আমার স্বামী সৎ কর্মকর্তা। হামলার ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে একটি মহল মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, 'ইউএনও আমার স্বামীর মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছেন। এর পর থেকে সেটি বন্ধ রয়েছে।'