ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

গোপলগঞ্জের কাশিয়ানী

অনিয়ম-দুর্নীতি আর দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকরা

অনিয়ম-দুর্নীতি আর দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকরা

ফাইল ছবি

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৩ | ০৬:২৩

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় অনিয়ম-দুর্নীতি আর দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকরা। এ ঘটনায় পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও জেলা বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার বরাবর গত ১৮ জানুয়ারি অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।

অভিযোগে বলা হয়, উপজেলার ঘৃতকান্দি গ্রামের মিলন সরকার তাঁর তিন মাসের বিদ্যুৎ বিল গত ১৬ জানুয়ারি একটি ব্যাংকে পরিশোধ করেন। ওই দিন দুপুরে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে মিলনের বাড়িতে যায় রামদিয়া সাব-জোনাল অফিসের লোকজন। এ সময় বাড়ির লোকজন পরিশোধিত বিদ্যুৎ বিলের কপি দেখান। তবে বিলটি ছুড়ে ফেলে দেন দলটির নেতৃত্বে থাকা এজিএম ওমর আলী। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে চলে যান। পরের দিন অফিসে গিয়ে এজিএমের সঙ্গে দেখা করেন ওই গ্রাহক। এজিএম গ্রাহককে বলেন, 'এক মাস পরে বিদ্যুৎ পাবি।' কারণ জানতে চাইলে তিনি অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দিয়ে বের করে দেন। এরপর অফিসের লাইনম্যান রুহুল আমিন পুনঃসংযোগের কথা বলে তাঁর কাছে এক হাজার টাকা দাবি করেন। রুহুলকে উৎকোচ দিয়েও বিদ্যুৎ পাননি মিলন।

জানা গেছে, উপজেলার উত্তর ফুকরা গ্রামের পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক সাহিদুল মুন্সী ও মো. মন্টু মুন্সী। তাঁদের দুটি মিটারে তিন মাসের বিদ্যুৎ বিল ১ হাজার ৫০০ টাকা বকেয়া থাকায় ডিসেম্বর মাসে অফিসের লোকজন গিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এক ঘণ্টা পর ফের বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন তাঁদের বাড়িতে আসে। বকেয়া ১ হাজার ৫০০ ও দুই মিটারের পুনঃসংযোগ ফি বাবদ ৩ হাজার টাকা নিয়ে তাৎক্ষণিক সংযোগ দিয়ে দেয়। নিয়ম অনুযায়ী অফিসে ডিসি/আরসি ফি ৬৯০ টাকা অফিসে জমা দিয়ে রশিদ নিতে হয়। এরপর জমা রশিদ দেখানোর পর বিদ্যুৎ অফিসের কর্মীরা গিয়ে পুনঃসংযোগ দেন। এ ব্যাপারে রামদিয়া সাব-জোনাল অফিসে ওই দুই গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং টাকা জমার তথ্য পাওয়া যায়নি।

তারাইল ফুকরা আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দা ভ্যানচালক আখি মোল্যার বকেয়া ছিল ৪০৭ টাকা। এক সপ্তাহ আগে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন। তিন দিন পর অফিসের লোকজন গিয়ে তাঁর কাছ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা আদায় করে পুনঃসংযোগ দেয়। তবে অফিসে টাকা জমার তথ্য নেই।

ফুকরা গ্রামের বাসিন্দা মনোয়ারা বেগমের ভাষ্য, তাঁর ছোট ভাইয়ের দুই মাসের বিল বকেয়া ছিল। তাই বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে আসে। তিনি এক দিনের সময় চান। অনুরোধ রক্ষা না করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে নিষেধ করেন তিনি। এ সময় এজিএম ওমর আলীর নির্দেশে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় এবং সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

এসব অভিযোগের বিষয়ে সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) মো. ওমর আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি এ ব্যাপারে বক্তব্য দিতে বাধ্য নই।'

গোপালগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, জেনারেল ম্যানেজার স্যার দেশের বাইরে রয়েছেন। দেশে ফিরে তিনি বিষয়টি দেখবেন।

আরও পড়ুন

×