সীতাকুণ্ড
স্বপ্ন দেখাচ্ছে পাহাড়ি কাঁচা আম

পাহাড়ের বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে বাছাই শেষে প্যাকেজিং করছেন চাষিরা - সমকাল
এম সেকান্দর হোসাইন, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)
প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৩ | ১৮:০০
ইউরোপের দেশ ইতালি ও সুইডেনে পরীক্ষামূলকভাবে পাঠানো হয়েছিল ২০০ কেজি কাঁচা আম। দুই ধাপে পাঠানো আমগুলো পছন্দের তালিকায় থাকায় তৃতীয়বারের মতো পাঠানো হচ্ছে। এ যাত্রায় সবকিছু ঠিক থাকলে বিপুল পরিমাণ আম রপ্তানি হবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। এ জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড কৃষি বিভাগ।
তৃতীয়বারে শুধু ইতালিতে যাচ্ছে কাঁচা আম। সোমবার চাষিরা পাহাড়ের নিজস্ব বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে বাছাই শেষে প্যাকেজিং করে ঢাকায় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বা আজ বুধবার কার্গো বিমানে তা চলে যাবে ইতালিতে। এবার সীতাকুণ্ডে ৩০৫ হেক্টর জমিতে প্রায় পাঁচ হাজার টন আম উৎপাদন হতে পারে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবীবুল্লাহ জানান, এ মৌসুমে প্রথম আম রপ্তানি হয়েছে সীতাকুণ্ড থেকে। তৃতীয়বারের মতো ১৫০ কেজি রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতালি ও সুইডেনে পাঠানো আমের বিষয়ে আপত্তি না পাওয়ায় তৃতীয়বারের মতো ইতালিতে পাঠানোর সুযোগ পচ্ছে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। আম রপ্তানির সূচনা হয়েছে পৌর সদরের চাষি মাহমুদ হাসানের বাগান থেকে।
মাহমুদ হাসান বাগানের কাঁচা আম বিক্রির জন্য ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ ‘সীতাকুণ্ড ফ্রুট শপে’ প্রচার চালান। বিষয়টি জানতে পারেন বিএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম কল্লোল। তিনি যোগাযোগ করে আম কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত করেন। কৃষি বিভাগ থেকে মানের বিষয়ে নিশ্চিত হন। প্রথম দফায় ৭৫ কেজি ইতালি ও সুইডেনে পাঠানো হয়। দ্বিতীয় দফায় ১৩০ কেজি যায় ইতালিতে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উত্তরাঞ্চলের আম ছোট আকৃতির হলেও চট্টগ্রাম অঞ্চলের গুলো আকারে বড়। প্রতি কেজিতে ছয়টি আম মিলছে। মানও ভালো। ঢাকার বিএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল মাহমুদ হাসানের কাছ থেকে গত ২১ মার্চ ৮৪ কেজি আম কেনেন। সেখান থেকে বাছাই করে ২৫ কেজি ইতালি ও ৫০ কেজি সুইডেনে পাঠান। ২৭ মার্চ কেনে ২০০ কেজি। এর মধ্যে ১৩০ কেজি ইতালিতে যায়। সর্বশেষ সোমবার ১৫০ কেজি প্যাকেট করা হয়েছে।
মাহমুদ হাসান বলেন, ফেসবুকের পোস্টটি কয়েকশ শেয়ার হয়। এসব দেখে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানটি যোগাযোগ করে। পরে কৃষি অফিস প্রত্যয়নপত্র দিলে প্রতি কেজি আম ১৫০ টাকা দাম ঠিক হয়। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠালে কৃষি কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে আমগুলো পাঠানো হয়েছে। আরও ১২ একর পাহাড়ি জমিতে বাগান রয়েছে। এ বছর ১০ হাজার কেজি উৎপাদন হতে পারে। ইতালি ও সুইডেনের ক্রেতারা পছন্দ করলে প্রচুর আম রপ্তানি করা যাবে।
রপ্তানিকারক বিএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সিইও রেজাউল ইসলাম কল্লোল বলেন, ইউরোপে কাঁচা আমের চাহিদা রয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গের আম পাওয়া যাবে আরও অন্তত এক মাস পর। মাহমুদ হাসানের আম তৃতীয়বারের মতো ইতালিতে পাঠানো হচ্ছে। সেখান থেকে পছন্দ করলে আরও অনেক পাঠানো যাবে। এতে কৃষক লাভবান হবেন।
- বিষয় :
- আম রপ্তানি
- ইউরোপ
- ‘সীতাকুণ্ড ফ্রুট শপে’