হবিগঞ্জে নলকূপ স্থাপনে অনিয়মের অভিযোগ

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এভাবেই হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে গভীর নলকূপের মোটর সমকাল
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৩ | ১৮:০০
হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় সরকারি নলকূপ স্থাপনে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সুবিধাভোগীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিকার চেয়ে জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে অভিযোগও দিয়েছেন বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী।
প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। কম ক্ষমতাসম্পন্ন মোটর বসানো, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ঠিকমতো না দেওয়া ও বেশ কিছু টিউবওয়েলের নিচে পাকাকরণের কাজ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া এতে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করারও অভিযোগ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী প্রতিটি নলকূপ স্থাপনের পর শুষ্ক মৌসুমেও যেন পানির অভাব না হয়, সে জন্য এক ঘোড়া সাবমার্সিবল মোটর স্থাপনের কথা ছিল। পাকা উঁচু ভিটি (চেম্বার) তৈরি করে তার ওপর পানির ট্যাঙ্ক বসানো এবং নিচে পাকা প্ল্যাটফর্ম (কাপড় কাচার স্থান) নির্মাণের কথা ছিল। কয়েকজন সুবিধাভোগী জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক ঘোড়া মোটরের পরিবর্তে দিয়েছে পৌনে এক ঘোড়া মোটর। বৈদ্যুতিক সার্কিট ব্রেকার দেওয়া হয়নি। কোথাও আবার সুইচসহ অত্যন্ত নিম্নমানের সরঞ্জামাদিও দেওয়া হয়েছে। নলকূপের পানির প্ল্যাটফর্ম, ট্যাঙ্ক বসানোর জন্য উঁচু চেম্বার নির্মাণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইট। ফলে অনেক স্থানেই চেম্বার ও প্ল্যাটফর্ম ভেঙে পড়ছে। কারও কারও আবার প্ল্যাটফর্ম নির্মাণই হয়নি।
সদর উপজেলার পইল মারকাযুত তাকওয়া আল ইসলামিয়া মডেল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আব্দুল বাছির জানান, তাদের মাদ্রাসায় একটি নিম্নমানের নলকূপ বসিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিছু দিন পরই সেটি দিয়ে আর পানি ওঠে না। ফলে কিছুদিন আগে আবারও নলকূপের মোটরটি পাল্টে দিয়ে যায় ঠিকাদারের লোকজন।
এনামুল হক নামের এক সুবিধাভোগী বলেন, সব ক্ষেত্রেই তারা অনিয়ম করেছে। এমনকি মাদ্রাসা ও মসজিদের টিউবওয়েলগুলোতেও। এখন অভিযোগ দেওয়ার পর তারা আবার সেগুলো নিজেদের সুবিধা মতো পাল্টে দিচ্ছে।
রহমান আলী নামের অপর এক সুবিধাভোগী জানান, সরকার ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে তাদের সুপেয় পানির জন্য এসব গভীর নলকূপ স্থাপনের অনুমোদন দিচ্ছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নয়ছয় আর অনিয়মে ভরা কর্মকাণ্ডে বিতর্কিত হচ্ছে প্রকল্পটি। যার ফলে তাঁরা এখন প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন না বরং উল্টো নানা জটিলতা সৃষ্টি করছে ।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শামীম ট্রেডার্সের কর্ণধার শামীম আহমেদের ব্যক্তিগত নম্বরে কয়েকবার কল করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
হবিগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী তাহমিনা তানভীন এ বিষয়ে বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।