খোকসা
সুপেয় পানির হাহাকার

প্রতীকী ছবি।
খোকসা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৩ | ০৫:১৪
খোকসায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নলকূপ দিয়ে উঠছে না পানি। ফলে কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম বসোয়া। সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় বিলতলার এ গ্রাম। পাঁচ শতাধিক পরিবারের বাস গ্রামটিতে। সব বাড়িতেই নিজস্ব নলকূপ রয়েছে। শুষ্ক মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বসোয়া পশ্চিম ও উত্তরপাড়ার অধিকাংশ নলকূপ থেকে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলছে হাহাকার। এই এলাকার মানুষ খাবার ও নিত্যকাজের পানির জন্য মাঠের শ্যালো পাম্পের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। এ গ্রামের বিলের জমিতে সেচকাজের প্রায় ৩০টি শ্যালো পাম্প বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। শুধু বসোয়া গ্রামে নয়, শিমুলিয়া ইউনিয়নের কালীশংকরপুর, মানিকাট, জানিপুর ইউনিয়নের ইচলাট, ঈশ্বরদীসহ আটটি গ্রামে খাবার পানির সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে।
বসোয়া গ্রামের বাসিন্দা ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিনও দু’সপ্তাহ ধরে প্রতিবেশীর বাড়ির সাবমার্সিবল নলকূপের পানি ব্যবহার করছেন। তিনি বলেন, মাটির নিচের পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাওয়ায় গ্রামজুড়ে পানির জন্য হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামবাসীর পানি সংকটের কথা তিনি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কিন্তু সেখান থেকে ইতিবাচক খবর মেলেনি। এই গ্রামে কয়েকটি আর্সেনিকমুক্ত নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে গ্রামবাসীর পানি সংকট নিরসনের দাবি জানান তিনি।
গ্রামটির অর্ধেক লোকের খাবার পানির সরবরাহ করা হয় ব্যবসায়ী শুকুর সরদারের বাড়ি থেকে। তাঁর বৈঠকখানার বাইরে ট্যাপে নিয়মিত পানি সরবরাহ করে থাকেন। গ্রামের নারী-পুরুষ এখান থেকে প্রয়োজনীয় পানি নিচ্ছেন।
রোববার বিকেলে সেখানে দেখা হয় মধ্যবয়সী নারী আসমানী, বিলকিস, নাজমা ও মালেকার সঙ্গে। ইফতারের আগমুহূর্তে খাবার পানি নিতে এসেছেন তাঁরা। তাঁদের কেউ নিয়ে এসেছেন কলস আবার কেউ নিয়ে এসেছেন বালতি। এই ট্যাপই তাঁদের একমাত্র ভরসা হয়েছে উঠেছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
গ্রামবাসীর তীব্র খাবার পানির সংকটে এগিয়ে আসা ব্যবসায়ী শুকুর সরদারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর কলেজপড়ুয়া ছেলে সায়েদ বলেন, সংকটের সময় গ্রামবাসীর পাশে থাকতে পারাটা সৌভ্যাগ্যের বিষয়।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের স্থানীয় উপসহকারী প্রকৌশলী সুমন আলী বলেন, জনস্বাস্থ্যের নলকূপ বন্ধ হওয়ার কথা নয়। তবে জনস্বাস্থ্যের কয়টি নলকূপ এই গ্রামে আছে, সে বিষয়ে তাঁর কাছে কোনো তথ্য নেই। গ্রামবাসীর খাবার পানির সংকটের কথাও তিনি জানেন না।
- বিষয় :
- পানি
- খাবার পানি
- সুপেয় পানি