বগুড়ায় ক্রিকেট ভেন্যু ফেরানোর জন্য অনশনে বসা রুমেল আর নেই

ফাইল ছবি
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৩ | ১৬:৫৮ | আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৩ | ১৬:৫৮
বগুড়ায় শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে জাতীয় ক্রিকেট ভেন্যু ফেরানোর দাবিতে আন্দোলন করে আলোচনায় আসা যুবক হুমায়ুন আহম্মেদ রুমেল মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)। বৃহস্পতিবার সকালে জেলা শহরের নাটাইপাড়ায় নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। ৩৮ বছর বয়সের এই প্রতিবাদী যুবকের মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতা জানাচ্ছেন বহু ক্রিকেটপ্রেমী।
রুমেল বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি ‘চ্যানেল বগুড়া’ নামে একটি ফেসবুক পেজে বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করতেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত ছিলেন। তাঁর মা আয়শা খাতুন বলেন, রাতে রুমেলের সঙ্গে কথা হয়েছিল। অতিরিক্ত গরমের কারণে সে অসুস্থবোধ করছিল। বুঝতে পারিনি তার অবস্থা কতটা সংকটাপন্ন ছিল। ভোরেই সে চিরদিনের জন্য আমাকে ছেড়ে চলে গেল। আমার পাশে থাকার মতো আর কেউ রইল না।
সম্প্রতি বগুড়ায় শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম থেকে বিসিবির ভেন্যু প্রত্যাহার করলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রুমেল। সেই ভেন্যু ফিরিয়ে আনতে দুই দফায় আমরণ অনশন করেন তিনি। এতে বেশ আলোচনায় আসেন তিনি। এক পর্যায়ে ফিরে এসেছে সেই ভেন্যু। তিনি ঈদের পরে বগুড়ায় বিমানবন্দর চালুর দাবিতে আমরণ অনশনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
রুমেলের বন্ধু রাসেল বলেন, রুমেল তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। তাঁর অন্য তিন ভাই চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকেন। রুমেলের সঙ্গে বুধবার দুপুরে কথা হয়েছিল। শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে ক্রিকেট ভেন্যু ফিরে আসার ক্ষেত্রে তাঁর আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু আমরা তাঁকে সেভাবে মূল্যায়ন করতে পারিনি। এর পরও সে বিমানবন্দরের জন্য আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এই দাবিতেও সে অনশনে বসতে চেয়েছিল।
এদিকে রুমেল তাঁর ফেসবুক পেজে কয়েকদিন ধরে নানা হতাশার কথা লিখছিলেন। এর একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘৯০ এর দশকে আমার ছেলেবেলার সময় বগুড়ার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র বলতে ছিল পৌর পার্ক বা উডবার্ন পার্ক। ঈদের দিনগুলোতে একা একা সেখানে যেতাম। কারণ, ভাল পোশাক ও পকেটে টাকা না থাকায় আমাকে কেউ সাথে নিতে চাইতো না। আজ ৯০ সাল পেরিয়ে ২০২৩ সাল, আজও ভাল পোশাক ও পকেটে টাকা না থাকায় রুমেলকে কেউ সাথে নিতে চায় না। আমার এ জীবন অর্থহীন।’