ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

শৈলকূপায় বাজার বন্ধ করোনায়, কৃষিপণ্য নিয়ে বিপাকে কৃষক

শৈলকূপায় বাজার বন্ধ করোনায়, কৃষিপণ্য নিয়ে বিপাকে কৃষক

পণ্য বিক্রি করতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন কৃষক

তাজনুর রহমান, শৈলকূপা (ঝিনাইদহ)

প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২০ | ১১:১৯ | আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০ | ১১:৩৬

কৃষিপণ্য বিক্রি করেই কামলার (শ্রমিক) টাকা পরিশোধ করেন চাষি। কিন্তু ঝিনাইদহের শৈলকূপায় এ হাট ও হাট ঘুরেও পণ্য বিক্রি করতে না পেরে হতাশ চাষি। রবি ফসলের ভরা মৌসুমে করোনার প্রভাবে হাটবাজার বন্ধ। তাই কৃষিপণ্য বিক্রি করতে না পেরে উভয় সংকটে তারা। দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে চাষির। কাজ করে দিনরাত টাকার জন্য কৃষকের বাড়িতে ধরনা দিতে দেখা যাচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের। 

পাইকপাড়া গ্রামের চাষি নওশের হোসেন জানান, এখন রবি ফসল পেঁয়াজ, গম, মশুর, ছোলা, মটর, খেসারিসহ অন্যান্য ফসল ঘরে তোলার সময়। কামলা দিয়ে তারা ঠিকই ফসল ঘরে তুলেছেন। কিন্তু হঠাৎ করোনার প্রভাবে হাটবাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন হাট ঘুরেও তা বিক্রি করতে না পারায় কামলার টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না তারা। কোথাও কাজ নেই যে সেখানে তারা কাজ করে সংসার চালাবেন। এখন দিনরাত তারা টাকার জন্য চাপাচাপি করছেন। তাই চাষিরা এখন উভয় সংকটে।

আউশিয়া গ্রামের চাষি আবদুর রাজ্জাক জানান, তিনি পাঁচ-সাত দিন উপজেলার বিভিন্ন হাটে পণ্য নিয়ে ঘোরাঘুরি করেছেন। কিন্তু কোনো হাটেই পণ্য বিক্রি করতে পারেননি। বরং এ মূহূর্তে পরিবহনের টাকা গুনতে হয়েছে বেশ কিছু। চাষিরা পণ্য বিক্রি করে কামলা, জমি চাষ, সার, ওষুধের টাকা পরিশোধ করে থাকেন। কিন্তু পণ্য বিক্রি করতে না পেরে তারা কামলা, সার, জমি চাষের টাকা দিতে না পারায় পরবর্তী ফসল রোপণের প্রস্তুতি নিতে পারছেন না। তাছাড়া চাষির ঘরে অতিরিক্ত পেঁয়াজ রাখার গরমে তা পচন ধরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

উপজেলার নাদপাড়া, চরআউশিয়া, ভাটবাড়িয়া, কাতলাগাড়িসহ বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে। আউশিয়া গ্রামের দিনমজুর আনিচুর রহমান জানান, সারাদিন কাজ করে মাঠ থেকে বিভিন্ন ফসল কৃষকের ঘরে তুলে দিয়ে এখন তারা মজুরির টাকা পাচ্ছেন না। তারপর কোথাও কাজ নেই। চাষিরা দোহাই দিচ্ছে, তারা কিছুই বিক্রি করতে পারছে না। এখন তারা কী করবেন!

শৈলকূপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার কুণ্ডু জানান, তিনিও গ্রামে গ্রামে কৃষকদের এমন চিত্র দেখতে পেয়েছেন। চাষিরা পণ্য বিক্রি করে কামলাসহ বিভিন্ন দেনা পরিশোধ করে থাকেন। কিন্তু প্রশাসন করোনার কারণে বাজার বন্ধ করে রেখেছে। তিনি চাষিদের কথা বিবেচনা করে প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করে বিকল্প উপায়ে কৃষিপণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করা যায় কিনা, তা আলোচনা করবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, বাজার বন্ধ রাখা জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত। কৃষিপণ্য বিক্রির সুযোগ দিলে সেখানে ব্যাপক লোকসমাগম ঘটবে। তাই হাটবাজার বন্ধ রাখা হয়েছে।




  

আরও পড়ুন

×