কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারে উৎসবের নগরী রাজশাহী

সৌরভ হাবিব, রাজশাহী
প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৩ | ১৮:০০
ভোটাররা বলছেন, মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এ কারণে মেয়র পদ নিয়ে তাঁদের আগ্রহ কম। বিএনপি এই নির্বাচনে নেই। ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মুরশিদ আলমও ভোট বয়কট করেছেন। জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন ও জাকের পার্টির লতিফ আনোয়ারের অবস্থান তেমন শক্তিশালী নয়। তাই মেয়র পদে অসম লড়াই হবে।
তবে কাউন্সিলর পদে প্রতিটি ওয়ার্ডেই শক্ত লড়াই হবে। অনেক ওয়ার্ডেই আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী আছেন। দলটি কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে বিশেষ সুবিধা দেবে না। শুধু মেয়র পদে নির্বাচন নিয়েই দলটি কাজ করছে। এদিকে কাউন্সিলর পদে ভোটে অংশ নেওয়ায় বিএনপি ১৬ নেতাকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করেছে। তবে তাঁরা নির্বাচন থেকে সরে যাননি। দিনরাত পরিশ্রম করে ভালো ফল আনার চেষ্টা করছেন।
ভোটাররা জানান, শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলামের সঙ্গে লড়াই হতে পারে জামায়াত নেতা মোখলেছুর রহমানের। এখানে সাবেক কাউন্সিলর ও বিএনপি থেকে আসা নব্য আওয়ামী লীগ নেতা নোমানুল ইসলামও লড়াইয়ে থাকছেন। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা কামাল হোসেন এবার লড়ছেন সাবেক কাউন্সিলর ও বিএনপি থেকে আসা নব্য আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিবের সঙ্গে। এখানেও দু’জনের লড়াই বেশ জমে উঠেছে। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর রুহুল আমিন টুনুর সঙ্গে লড়াই হবে ফজলে কবির টুটুলের। তাঁরা দু’জনই আওয়ামী লীগ নেতা। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামান কামরুর সঙ্গে লড়ছেন দলের আরও দু’জন বাবু ও হামিদুল ইসলাম সুজন। এ ছাড়া রাজপাড়া থানা জামায়াতের সভাপতি কামরুজ্জামান সোহেলও লড়ছেন এই তিনজন আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা মো. নুরুজ্জামানের সঙ্গে লড়ছেন বিএনপির বদিউজ্জামান ও আওয়ামী লীগের মনিরুল ইসলাম। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা বর্তমান কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি লড়ছেন আওয়ামী লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম রুবেলের সঙ্গে।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডেই অসংখ্য প্রার্থী। কাউকে দলীয় সমর্থন দিলেও অন্যদের নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ নাই। তাই কাউকেই সমর্থন দেওয়া হয়নি। আমরা উন্মুক্ত করে রেখেছি। যে জিতবে সেই আমাদের প্রার্থী। একাধিক প্রার্থী থাকায় ভোটের উৎসব হবে। ভোটাররা ভোট উৎসবে আসবে।’
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা বলেন, ‘আমাদের ১৬ জন নেতা দলের নির্দেশনা অমান্য করে ভোটে অংশ নিচ্ছেন। তাই
তাঁদের আজীবন বহিষ্কার করেছি। তাঁদের কোনো দায়-দায়িত্ব বিএনপি নেবে না। বিএনপির কেউ ভোট দিতে যাবে না।’
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি বা ইসলামী আন্দোলন নির্বাচনে না থাকলেও ভোট উৎসব হবে। আমাদের দলীয় ভোটার ছাড়াও কাউন্সিলর প্রার্থীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে আনবেন। ভোটার উপস্থিতি অন্য সিটিতে কম হলেও রাজশাহীতে ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ হবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন সভাপতি আহমেদ সফি উদ্দীন বলেন, মেয়র পদে বিকল্প গ্রহণযোগ্য প্রার্থী না থাকায় মানুষের আগ্রহ কমেছে। তবে কাউন্সিলর পদে ভোটের উৎসব হচ্ছে। প্রভাবশালী প্রার্থীরা যেন কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারেন, সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সজাগ থাকতে হবে।