ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

যশোর শিক্ষা বোর্ড

সহকারী লাইব্রেরিয়ান হলেন প্রধান পরীক্ষক

সহকারী লাইব্রেরিয়ান হলেন প্রধান পরীক্ষক

কে এম আনিছুর রহমান, কলারোয়া (সাতক্ষীরা)

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৩ | ১৮:০০

হিজলদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী লাইব্রেরিয়ান কামরুজ্জামান। অথচ অনিয়ম করে অর্থনীতি বিষয়ের প্রধান পরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, গত ১০ বছর ধরে খাতা দেখে আসছেন। এতে যশোর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতার অভিযোগ উঠেছে।

এবারের এসএসসি পরীক্ষার খাতা বণ্টন ও পরীক্ষক নির্বাচনে গুরুত্ব দেয়নি যশোর শিক্ষা বোর্ড। প্রতিষ্ঠান যেসব শিক্ষকের নাম ও বিষয় প্রস্তাব করেছে; বোর্ড কোনো যাচাই ছাড়াই পরীক্ষক এবং প্রধান পরীক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। ফলে সদ্য শিক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া লাইব্রেরিয়ানও দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থনীতি বিষয়ের প্রধান পরীক্ষকের।

২০২৩ সালের ২৮ মার্চ শিক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন সহকারী লাইব্রেরিয়ানরা। খাতা বণ্টনের নিয়ম, যিনি যে বিষয়ে পড়ান ওই বিষয়ের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সেই বিষয়ের প্রধান পরীক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হবেন। এ ছাড়া কয়েকবার পরীক্ষক হিসেবে অভিজ্ঞতা অর্জনের পর দক্ষতার ভিত্তিতে তাঁকে প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রধান পরীক্ষক খাতা সার্বিক মূল্যায়নের পর তা আবার স্কুটিনাইজারের (নিরীক্ষক) মাধ্যমে নিরীক্ষা করা হয়। তারপর সেই নম্বর বোর্ডে জমা পড়ে এবং বোর্ড সেটি পদ্ধতি অনুসারে শিক্ষার্থীর নাম, রোল অনুসারে সংযুক্ত করে। সব বিষয়ের নম্বর ওঠানো হলে ফল প্রস্তুত হয়। সে হিসেবে পরীক্ষক, প্রধান পরীক্ষক, নিরীক্ষক কোনো একটি স্তরে সামান্য ভুল করলে পুরো ফল পাল্টে যেতে পারে। এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় সহকারী লাইব্রেরিয়ান কামরুজ্জামানের সঙ্গে। জানতে চাওয়া হয়, অর্থনীতির প্রধান পরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন কীভাবে? রাগান্বিত হয়ে তিনি বলেন, ‘আমি গত ১০ বছর যাবৎ খাতা দেখে আসছি। বোর্ডের সকলেই আমার কাছের মানুষ। এটা কোনো ব্যাপার না।’

বোর্ডে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কর্মকর্তাদের উদাসীনতার সুযোগে কয়েকজন কর্মচারীর যোগসাজশে এমন ঘটনা ঘটছে। এসব কারণে মেধাবী অনেক শিক্ষক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের অনেক অভিজ্ঞ শিক্ষক খাতা মূল্যায়নে অনাগ্রহী। অনেক সরকারি বিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ শিক্ষককে অনভিজ্ঞ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের কাছে খাতা জমা দিতে হয়। এটাকে সম্মানজনক মনে করেন না তাঁরা। বোর্ড এই সমস্যা সমাধানে কার্যকরী কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারছে না।

হিজলদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘কামরুজ্জামান একজন লাইব্রেরিয়ান হয়েও কীভাবে প্রধান পরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন, সেটা আমার জানা নেই। তবে কম্পিউটার সম্পর্কে আমার ধারণা কম থাকায় ওটিপি যিনি যাঁর মতো করে বোর্ডে পাঠিয়েছেন।’

অভিযোগ বিষয়ে জানতে কথা হয় যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সহকারী লাইব্রেরিয়ান প্রধান পরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে থাকলে আমার কাছে তথ্য পাঠান; বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন

×