বঞ্চিত মানুষের কণ্ঠস্বর হওয়ার লড়াইয়ে তৃতীয় লিঙ্গের রুপা

রুপা আক্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ ও ফুলবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে লড়তে চান তৃতীয় লিঙ্গের রুপা আক্তার। তাঁর ইচ্ছা নারী ভাইস চেয়ারম্যান হয়ে এলাকাবাসীর সেবা করা। এজন্য ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টার সাঁটিয়েছেন। তাতে লেখা– ‘আপনাদের সবাইকে সাথে নিয়ে ফুলবাড়িয়া উপজেলার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাই।’ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের এখনও ৯-১০ মাস বাকি। তবে আগে থেকে মাঠ গোছাতে নেমে পড়েছে রুপা। নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের কণ্ঠস্বর হওয়ার প্রত্যয়ে গণসংযোগ করছেন তিনি।
ফুলবাড়িয়া উপজেলায় বসবাসরত তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে নেতৃত্ব দেন রুপা আক্তার। তাঁর জন্ম ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ মোড় এলাকার বস্তিতে। তাঁর বাবা ছিলেন দিনমজুর। দীর্ঘদিন পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় বসবাস ছিলেন। ২০০২ সালে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন রুপা। এরপর বন্ধ হয়ে যায় পড়ালেখা। বাবা মারা যাওয়ার পর ছোট বোনকে পড়ালেখা করিয়ে চিকিৎসকের কাছে বিয়ে দিয়েছেন তিনি। জীবনের সঙ্গে লড়াই করে বেড়ে ওঠা রুপা ফুলবাড়িয়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। পৌরসভার ভালুকজান এলাকায় ১৫ বছর ধরে বসবাস করছেন রুপা। তাঁর মাও সঙ্গে থাকেন। রুপার দলে তৃতীয় লিঙ্গের আরও ১৫ সদস্য রয়েছেন। প্রথম দিকে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল তাদের প্রতি। ২০২০ সালে ফুলবাড়িয়া পৌর এলাকার যানজট নিরসনে কাজ করে এলাকাবাসীর মন জয় করেন তারা। এরপর রুপা আক্তারের মাথায় ঘুরতে থাকে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হলে জনপ্রতিনিধি হওয়া দরকার। সিদ্ধান্ত নেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে লড়বেন তিনি।
পোস্টার সাঁটিয়েই থেমে নেই রুপা আক্তার। পাড়ামহল্লায় ঘুরে ঘুরে অসহায় ও দরিদ্র মানুষের খোঁজখবর নিচ্ছেন তিনি। আগামী নির্বাচনের জন্য সমর্থন ও দোয়া চাইছেন।
রুপা আক্তার বলেন, ‘গরিব মানুষ কোনো সহযোগিতা পায় না, সব জায়গায় বঞ্চনার শিকার হয়। মানুষের কষ্ট দেখে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতেই জনপ্রতিনিধি হতে চাই। আমার মতো কষ্টের জীবন যেন আর কারও না হয়।’ তাদের চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। জনপ্রতিনিধি হলে মানুষের জন্য কাজ করার অফুরন্ত সুযোগ হবে বলে দাবি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এম আর মতিন শেখের।
- বিষয় :
- ময়মনসিংহ
- ফুলবাড়িয়া
- তৃতীয় লিঙ্গের রুপা