তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটিতে কেটে গেছে চার বছর

সৌরভ হাবিব, রাজশাহী
প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০
মহানগর বিএনপিতেও বিরোধের কারণে ৩৭টি ওয়ার্ড ইউনিট এবং ছয়টি থানা ইউনিটের কোনোটিতেই কমিটি হয়নি। তিনটি ওয়ার্ড ইউনিটের সম্মেলন হলেও কমিটি করা যায়নি।
জেলার ৪১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয় ২০১৯ সালের ৪ জুলাই। এতে চারঘাট উপজেলার আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদকে আহ্বায়ক, রাজশাহী নগরের সাইফুল ইসলাম মার্শালকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং তানোর উপজেলার বিশ্বনাথ সরকারকে সদস্য সচিব করা হয়। এই কমিটি জেলার ২৩ ইউনিটের মধ্যে কাউন্সিল করে কমিটি করেছে মাত্র সাতটি ইউনিটের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির একাধিক নেতা জানান, আবু সাঈদ চাঁদ, বিশ্বনাথ সরকার ও সাইফুল ইসলাম মার্শালের মধ্যে বিরোধ নেই। তবে তাদের সঙ্গে তিব্র বিরোধ রয়েছে আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের। বিশেষ করে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফার সঙ্গে পুঠিয়া-দুর্গাপুরের কমিটি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধের কারণে পুঠিয়া পৌর বিএনপির কমিটি হয়েছে ভোটের মাধ্যমে। গোদাগাড়ী পৌর বিএনপির কমিটি বিনা কাউন্সিলে ঘোষণা দেওয়ায় দলের কেন্দ্রীয় সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরীফ উদ্দীনের সঙ্গে জেলা কমিটির শীর্ষ নেতাদের বিরোধ দেখা দেয়। শরীফ উদ্দীন পাল্টা কমিটি করে পাস করার জন্য জমা দেন। দুটি কমিটির কোনোটিই অনুমোদন পায়নি। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তোফাজ্জল হোসেন তপুর সঙ্গেও বিরোধ রয়েছে তিন শীর্ষ নেতার। যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল কমিটিতে না থাকলেও তাঁর সঙ্গে বিরোধ রয়েছে চাঁদের। আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মামুন উর রশীদ বলেন, ‘আমরা কাউন্সিল করার চেষ্টা করেছি। তবে করোনা মহামারি, আবু সাঈদ চাঁদ গ্রেপ্তার হওয়াসহ বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থার কারণে সবগুলো ইউনিটের কাউন্সিল করা সম্ভব হয়নি। কমিটিগুলো করার প্রস্তুতি চলছে।’
মহানগর বিএনপিতে স্থবিরতা
রাজশাহী মহানগর বিএনপির ৯ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর। এতে অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশাকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব করা হয় মামুন অর রশীদকে। এর পরের বছর সদস্য বাড়িয়ে ৬১ করা হয়।
অনেকের অভিযোগ, মহানগর বিএনপির মিজানুর রহমান মিনু, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও শফিকুল হক মিলনের মতো সামনের সারির নেতাদের বাদ দিয়ে পেছনের সারির নেতাদের দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। তারা সংগঠনে গতি আনতে ব্যর্থ হয়েছে। কমিটি ঘোষণার পরই এরশাদ আলী ঈশার সঙ্গে মামুন অর রশীদের তিব্র বিরোধ দেখা দেয়। দুই নেতা দীর্ঘদিন একসঙ্গে কোন কর্মসূচি পালন করেননি। কথা বলাও বন্ধ ছিল। কমিটি ঘোষণার প্রথম দিকে মহানগর বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে যাননি মিনু, বুলবুল ও মিলন। তবে এখন তাদের আবারও বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে এরশাদ আলী বলেন, ‘প্রথম দিকে সদস্য সচিব মামুনের সঙ্গে একটু বিরোধ হয়েছিল। সেটা আমার সঙ্গে নয়, ভেতরে ভেতরে অন্য কারও সঙ্গে হয়েছিল। এখন ঠিক হয়ে গেছে।’
মামুন অর রশীদ বলেন, ‘আমার সঙ্গে কারও বিরোধ নেই। এক সঙ্গেই সব কর্মসূচি পালন করি।’
তবে কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়না কেন– এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, এক মাসের মধ্যে ৩৭টি ওয়ার্ডের কমিটি হবে। এর পর ছয়টি থানা কমিটি গঠন হবে।
- বিষয় :
- আহ্বায়ক কমিটি
- বিএনপি
- রাজশাহী জেলা বিএনপি