গ্যাস লিকেজ থেকে দুর্ঘটনা
ফতুল্লায় বিস্ফোরণে উড়ে গেল দেয়াল, আশুলিয়ায় আগুন

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার হোসাইনী নগরের আবাসিক ভবনে শনিবার রাতে গ্যাস বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ফ্ল্যাট - সমকাল
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি ও নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ও সাভারের আশুলিয়ায় দুটি বাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার রাতে পৃথক এ দুর্ঘটনায় নারী, শিশুসহ অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। লিকেজের কারণে ঘরে গ্যাস জমে এ বিস্ফোরণ হতে পারে বলে ধারণা ফায়ার সার্ভিসের।
ফতুল্লার কাশীপুর ইউনিয়নের হোসাইনী নগর এলাকার লক্ষ্মী নিবাস নামের আবাসিক ভবনের পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে বিস্ফোরণ হয়। এতে নারী, শিশুসহ অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে ফ্ল্যাটের দু’পাশের দেয়াল ভেঙে পড়ে। পশ্চিম পাশের দেয়ালটি উড়ে পাশের একটি টিনশেড ঘরের ওপর গিয়ে পড়ে। তবে ওই ঘরে কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশপাশের ফ্ল্যাটের দরজা, জানালা ও আসবাব ভেঙে গেছে। গত শনিবার মধ্যরাতে কাশীপুর ইউনিয়নের হোসাইনী নগর এলাকার লক্ষ্মী নিবাস নামের আবাসিক ভবনের পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক ফখরউদ্দিন আহম্মাদ বলেন, ফ্ল্যাটের ভেতরে জমা গ্যাস থেকে এ বিস্ফোরণ হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। সেই বাসায় গ্যাস সিলিন্ডার ও তিতাস গ্যাসের লাইন রয়েছে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন– হোসাইনী নগর এলাকার লোকমানের ছেলে সবুজ খন্দকার (২৫), মো. রানা (৩০), তাঁর স্ত্রী বীথি (১৮), তাদের শিশুসন্তান, আবুল কালাম (৬০) ও রুবেল (২৮)। আহতদের মধ্যে দগ্ধ চারজনকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হলে তিনজনকে ভর্তি করে অন্যজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর আগে গত ২৯ জুলাই ভতুল্লার একই ইউনিয়নের ভোলাইল এলাকার একটি ব্যাটারিচালিত রিকশার শোরুমে ভয়াবহ বিস্ফোরণে তিনজনের মৃত্যু হয়। এর আগে ১২ জুন ওই এলাকায় চার্জার ফ্যান বিস্ফোরণে একই পরিবারের চারজনের মৃত্যু হয়।
এদিকে আশুলিয়ার শ্রীপুর নয়ানগর এলাকার আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে নারীসহ অন্তত ১০ জন দগ্ধ হয়েছেন। আহতরা হলেন– ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া নজরুল ইসলাম, রাজিয়া বেগম, কমলা বেগম, হাশেম মিয়া, মহসিন, সাদেকুল, পল্লব রায়, সাবিনা, হাসি বেগম ও মুসলিমা বেগম। তারা সবাই স্থানীয় তৈরি পোশাক কারখানার
শ্রমিক বলে জানা গেছে। এর মধ্যে পল্লব রায়, হাসি বেগম, রাজিয়া ও মুসলিমা বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অন্য ছয়জন বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন।
ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার প্রণব চৌধুরী বলেন, পোশাক শ্রমিক হাসি বেগম রান্নার জন্য চুলা জ্বালাতে গেলে হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে। পরে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় একাধিক পরিবারের অনেকেই দগ্ধ হন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাস সিলিন্ডারের ক্যাপের লিকেজ থেকে গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছিল। চুলা জ্বালানোর সময় আগুনের স্পর্শ পেতেই তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম জানান, আশুলিয়ার দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে কমলা বেগমের শরীরের ২০ শতাংশ, সাবিনা বেগমের ৫০ শতাংশ, সাদিকুল ইসলামের ৫০ শতাংশ, হাসেম আলীর ৪৫ শতাংশ, নজরুল ইসলামের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।