ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

এমপি লাঞ্ছিত

আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা দুষছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রীকে

আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা দুষছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রীকে

প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল

জামালপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০২৩ | ২৩:১৪

সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হোসনে আরাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ। আগামী
সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। দলটির কয়েকজন স্থানীয় নেতা জানিয়েছেন, কোন্দল-উপকোন্দলের কারণে নিজ দলের এক নেতার হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন হোসনে আরা। এ জন্য বেশির ভাগ নেতাকর্মী ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানকে দুষছেন।

লাঞ্ছিতের ঘটনায় জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের কাছে বিচার চান হোসনে আরা এমপি। এরপরই গত শুক্রবার ঘটনা তদন্তে ইসলামপুর আওয়ামী লীগ তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন দলের স্থানীয় নেতা জামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, মজিবর রহমান শাজাহান, অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ, জিয়াউল হক সরকার ও খলিলুর রহমান।

এদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেছেন, ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ফরিদুল হক খানের সঙ্গে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীর দূরত্ব বাড়তে থাকে। ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌর নির্বাচন ঘিরে মনোমালিন্য আরও বাড়ে। স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সম্মেলন ঘিরে এই পরিস্থিতি আরও প্রকট হয়।

হোসনে আরা এমপি জানান, তিনি দলের নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে এলাকার উন্নয়নসহ সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়ন চান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গণসংযোগও করছেন। যারা এসব সহ্য করতে পারছেন না, তারাই পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হচ্ছেন।

পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুর ইসলাম বলেন, ফরিদুল হক খান ইসলামপুর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি হওয়ার পর তাঁর পছন্দের নেতা আব্দুস সালামকে সাধারণ সম্পাদক করেন। এ নিয়ে নেতাকর্মীর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। পরে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন। মূলত এ কারণেই ফরিদুল হক খানের অনুসারীরা প্রকাশ্যে হোসনে আরাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার দুঃসাহস দেখিয়েছে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এস এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফরিদুল হক খান দলের সম্ভাব্য কোনো নেতাকেই সহ্য করতে পারেন না। তিনি ত্যাগী নেতাকর্মীকে বাদ দিয়ে হাইব্রিডদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুন নাসের বাবুল বলেন, হাইব্রিডদের ভিড়ে দলে এখন ত্যাগী নেতাকর্মীর জায়গা নেই। পরিস্থিতির উত্তরণ না হলে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে এর খেসারত দিতে হবে।
উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম বাবু বলেন, ফরিদুল হক খানের হাইব্রিড-প্রীতির কারণে আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিতি ইসলামপুরে গৃহদাহ সৃষ্টি হয়েছে।

হোসনে আরা এমপিকে লাঞ্ছিত করার ঘটনার বিষয়ে জানতে বেশ কয়েকবার টেলিফোন করা হলেও সাড়া দেননি ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল ও ইসলামপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম।

বৃহস্পতিবার রাতে ইসলামপুর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ধর্মপ্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে দলের আলোচনা সভায় হোসনে আরাকে লাঞ্ছিত করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম। ওই সময় আনোয়ারুলকে নিবৃত না করে হোসনে আরাকে উল্টো ধমক দেন প্রতিমন্ত্রী। এ পরিস্থিতে দ্রুত সভাস্থল ছাড়েন হোসনে আরা।

আরও পড়ুন

×